
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে তীব্র ভাষায় সতর্কবার্তা দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে পাল্টা প্রতিরোধে নামতে তারা পিছপা হবেন না।
সোমবার ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চে আয়োজিত ওই সমাবেশে মাহফুজ আলম বলেন, “খুবই সংকটময় পরিস্থিতি সামনে। একটি লাশ পরলে আমরাও লাশ নেব। অনেক ধৈর্য ধরা হয়েছে, আর না। আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে ভাইদের ওপর হামলা করবেন, এটা আমরা বরদাশত করব না।”
অভ্যুত্থানের পর চলমান লড়াই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই লড়াই দীর্ঘ, এর জন্য আমার প্রথমে বলেছি মুজিববাদের মূল উৎখাত করতে হবে। কিন্তু সেই চেষ্টা কমই দেখেছি। এখনও মুজিববাদবিরোধী লড়াইয়ে আমরা পিছিয়ে আছি।” একই সঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, লড়াইয়ে পরাস্ত হওয়ার কারণেই হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বাংলাদেশে বসেই একটি মহল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, “৫ আগস্টের পর আমরা চাইলে এদের সব ধ্বংস করে দিতে পারতাম, করিনি। আমরা ক্ষমা করে ভুল করে থাকলে প্রতিজ্ঞা করি, আর ক্ষমা করব না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নিরাপদ না থাকলে, দেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না। জুলাই শক্তি গঠনমূলকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠলে সব লড়াই রুখে দেয়া যাবে।”
প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তব্য দেওয়া অন্যান্য বক্তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জিজ্ঞেস করতে চাই বারবার হাদির জীবন শঙ্কা দেখা দেয়ার পরও আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন। এই উপদেষ্টাকে নিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত যাওয়া যাবে না। আমরা সবাই তার পদত্যাগ করতে করতে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।” একই সঙ্গে তারা বলেন, “হাদি আমাদের সবার মধ্যে রয়েছে। হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এ দেশে থেকে আওয়ামী লীগের দালালদের বিতারিত করতে হবে।”
এর আগে সোমবার বিকাল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এই সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশস্থলে উপস্থিতরা ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদী স্লোগান দেন। স্লোগানে তারা উচ্চারণ করেন, “আমরা সবাই হাদি হবো, ভুলের মুখে কথা বলব”, “নারায়ে তাকবির; আল্লাহু আকবর” এবং “এক হাদি রক্ত দেবে, লক্ষ হাদি জন্ম নেবে।” পাশাপাশি শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আহ্বান জানান তারা।