‘ছাত্রশক্তি’ নামে ফিরছে এনসিপির ছাত্র সংগঠন
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৫৬ এম, ২২ অক্টোবর ২০২৫
ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে আবারও আলোচনায় এসেছে একটি পুরনো সংগঠন, তবে এবার নতুন নামে ও কাঠামোতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সক্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) বিলুপ্ত হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ‘ছাত্রশক্তি’ নামে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র মতাদর্শিক অনুসারী হিসেবে ‘ছাত্রশক্তি’ কাজ করবে তাদের ছাত্র সংগঠন হিসেবে।
আগামী বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে বাগছাসের জাতীয় সমন্বয় সভা। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ছাত্রশক্তি’ নামটি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি জানানো হবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কমিটি, রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং পরবর্তী কর্মপন্থা।
সংগঠনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, নতুন নাম নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু বিকল্প বিবেচনায় থাকলেও ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ শীর্ষ পছন্দ হিসেবে এগিয়ে রয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন কমিটিতে সদস্য সংখ্যা ১০১ জন পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। বিশেষ শাখা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে গঠন করা হবে এবং সংগঠন পরিচালিত হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধীনে সমন্বিত ‘সুপার ফোর’ কাঠামোয়।
নেতৃত্বের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সেক্রেটারির পদে আলোচনায় রয়েছেন বাগছাসের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্য সচিব জাহিদ আহসান। তাদের সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বে আরও রয়েছেন ঢাবি শাখার সদস্য সচিব মহির আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব সিয়াম, কেন্দ্রীয় সহ-মুখপাত্র ফারদিন হাসান এবং ঢাবির যুগ্ম আহ্বায়ক লিমন আহসান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভবিষ্যৎ নেতৃত্বেও আসতে পারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। আলোচনায় রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ, কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদ্দাসসির, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব আল আমিন সরকার, সদস্য সচিব মোহাম্মদ সাকিব ও সাবেক মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম।
সংগঠনের কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, আগের কাঠামোয় শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে অনুপ্রবেশকারীদের কারণে। তাদের দাবি, বিশেষ করে ছাত্রশিবির সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির কারণে সংগঠনটি নানা অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। এ কারণে নতুন কমিটি গঠনে চলছে কঠোর যাচাই-বাছাই।
এক নেতা বলেন, 'আমরা আদর্শিক ও বাংলাদেশ পন্থার রাজনীতি করতে চাই। ওয়েলফেয়ার পলিটিকস নয়, বরং ছাত্রসমাজকেন্দ্রিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আগামীতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভালো ফল করতে চাই।'
‘ছাত্রশক্তি’র এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে একটি বড় রাজনৈতিক পটভূমি। ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছিল শিক্ষা ও রাজনীতির সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সংগঠনটির নেতারা। তবে অভ্যুত্থানের পর ১৩ সেপ্টেম্বর ওই সংগঠনের সব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরে কিছু নেতা মিলে গঠন করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), যা এবার আবার রূপ নিচ্ছে নতুন পরিচয়ে।
সম্প্রতি এনসিপির যুব ও শ্রমিক শাখাও নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় যুব শক্তি’ ও ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। সেই ধারাবাহিকতায় ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ নামেই ছাত্রসংগঠনটির যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে।