সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই: জিএম কাদের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:০৯ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৫

বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। তার মতে, সরকার ঘনিষ্ঠ অনেকেই এখন এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দেওয়া এক লিখিত বিবৃতিতে জি এম কাদের বলেন, এখন সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছেন, এই সরকারের মধ্যেই আরেকটা সরকার আছে। সরকার ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তারাই বলছে বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ নিবন্ধিত দল হয়েও জাতীয় পার্টিকে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি তা–ই হয়, তাহলে এই সরকার কীভাবে দলনিরপেক্ষ হয়? তাই অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা, এবং পোশাকশিল্পে চলমান সংকট প্রমাণ করে—সমাধানের জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি। এর জন্য সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, নির্বাচনে কোনো দলকে সরকারি সুবিধাভোগী অবস্থানে রাখা যাবে না।
জি এম কাদের অভিযোগ করেন, সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণেই তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে এবং তাকে পাসপোর্টও দেওয়া হচ্ছে না। তিনি দাবি করেন, জুলাই আন্দোলনের পর জাতীয় পার্টির বহু নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হলেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
সরকারবিরোধী বক্তব্য দিলেই অনেককে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। মাইলস্টোন স্কুল পরিদর্শনের সময় কয়েকজন উপদেষ্টা জনরোষের মুখে পড়ার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়, “দেশের অধিকাংশ মানুষকে ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে সরকার বিপদে পড়ছে মনে হচ্ছে।
জি এম কাদের আরও দাবি করেন, সরকার জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে বিভাজন তৈরি করতে সচেষ্ট। তার ভাষায়, আমাদের রাজনীতি করতে দিবে কি না বা নির্বাচন করতে দিবে কি না, তা নিয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা যেহেতু এ প্রেক্ষাপটে দেশে–বিদেশে গ্রহণযোগ্য করা যাচ্ছে না, সে কারণে জি এম কাদেরবিহীন জাতীয় পার্টি তৈরির অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বিবৃতিতে সরকারের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, একটি প্রকৃত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।