
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক ও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় অর্থ ফেরত প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান গভর্নর। এর আগে একই দিন সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হয় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বৈঠক।
পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে পর্ষদের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়ার নেতৃত্বে নতুন ব্যাংকটির পরিচালকেরা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসেন, যেখানে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে গভর্নর জানান, আমানতকারীদের অর্থ সরাসরি তাঁদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ৭, ১০ কিংবা ১৫ দিন সময় লাগতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে কারিগরি কাজ চলমান রয়েছে।
এ সময় গভর্নর বলেন, ‘এ ব্যাংকের হিসাব খোলা হয়েছে। ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পড়ে আছে। কেউ পাবেন, কেউ পাবেন না—আমরা এমন ঝামেলা চাই না। আমরা চাই, ঝামেলা ছাড়াই যার যার হিসাবে টাকা চলে যাক।’ তাঁর বক্তব্যের সময় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাংবাদিকরা নতুন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করলে মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘কিছু আবেদন জমা পড়েছে। আবেদন জমা দেওয়ার জন্য আরও সময় বাকি আছে। এটি একটি কঠিন কাজ।’
একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ব্যাংকের সামগ্রিক কার্যক্রম, অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকের বর্তমান আর্থিক অবস্থা, পরিচালন কাঠামো, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং গ্রাহকসেবা উন্নয়নের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পর্ষদ সদস্যরা সুশাসন জোরদার, স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং ইসলামি ব্যাংকিং নীতিমালার আলোকে কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থে ব্যাংকটির কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
সূত্র জানায়, পর্ষদ সভার নোটিশে মোট ১৭টি আলোচ্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ব্যাংক পরিচালকদের সম্মানীর হার নির্ধারণ, ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা, সিলমোহর, লোগো, স্লোগান, প্যাড এবং ব্যানার বা সাইনবোর্ডসংক্রান্ত বিষয়গুলো আলোচনায় আসে।
জানা গেছে, অন্যান্য ব্যাংকের মতোই সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত হবে। তবে ব্যাংকের উদ্বোধনের তারিখ, সিলমোহর ও লোগো চূড়ান্ত করতে পর্ষদের আরও দু-একটি বৈঠক প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি পরিচালকদের সম্মানী আপাতত বকেয়া রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।