
এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) ব্যবস্থার সংস্কারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সম্মতির পর টানা অবরোধ সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। চলমান কর্মসূচি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারীর আশ্বাসের ভিত্তিতে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি) এই সিদ্ধান্ত জানায়।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, এনইআইআর-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে একটি যৌথ বৈঠক আয়োজন করা হবে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা, এনবিআর চেয়ারম্যান, বাণিজ্য সচিব, মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং এমবিসিবি প্রতিনিধিরা।
ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আলোচনার মধ্য দিয়ে এনইআইআর সংকটের কার্যকর সমাধান বেরিয়ে আসবে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে।
এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এক মাস ৭ দিন ধরে আন্দোলন করছি। আজ বিটিআরসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠকের পর তার আশ্বাসেই অবরোধ স্থগিত করেছি। অর্থ উপদেষ্টা দেশে না থাকায় আপাতত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে অবরোধ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এনইআইআরের বিরুদ্ধে নই। তবে বাজার উন্মুক্তকরণ ও এলসি সহজীকরণ করতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। প্রয়োজনে অনলাইন-অফলাইন—সব ক্ষেত্রেই মোবাইল ফোন বিক্রি বন্ধ করা হবে।’
সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সায়ীদ পিয়াস জানান, ‘বিটিআরসি জানিয়েছে—দেশের যেকোনো স্থান থেকে আমদানিকৃত সব মোবাইলই নির্দ্বিধায় লিস্টেড করা হবে। আমদানি প্রক্রিয়া সহজীকরণেও তারা সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী শুল্ক কমাতে আজই এনবিআর চেয়ারম্যান ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অর্থ সচিবের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্যাক্স নিয়ে সমঝোতা না হলে এনইআইআর বাস্তবায়ন পেছাতে হবে—এ দাবি আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি। ৯ ডিসেম্বর বিটিআরসি ও এমবিসিবির মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত বৈঠক হবে।’
এর আগে এনইআইআর সংস্কারসহ কয়েকটি দাবিতে বিটিআরসি ভবনের সামনে কঠোর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মোবাইল ব্যবসায়ীরা। রোববার সকাল ১০টা থেকে শত শত ব্যবসায়ী আগারগাঁওয়ে জড়ো হয়ে একপাশের সড়ক বন্ধ করে দেন, যা তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা বিটিআরসি ভবন ঘেরাও করে চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু হওয়ার কথা। এতে নিবন্ধনহীন, চুরি হওয়া বা অনুমোদনবিহীনভাবে আনা ফোন দেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাবে না। বাস্তবায়নের ঠিক আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা এ ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।