জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরলেন ড. ইউনূস, জানানো হলো ছয় বড় সাফল্য
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৩২ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশন শেষে নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরেছেন। এ সফরে তিনি বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, যেখানে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ ছয় নেতা অংশ নেন।
সফরকালে তিনি জাতিসংঘে ভাষণ দেন, একাধিক বৈশ্বিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতার রূপরেখা তুলে ধরেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সফরের ছয়টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য তুলে ধরেন।
ছয় সাফল্যের মূল দিকগুলো হলো—
১. গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বাংলাদেশের গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। একইসঙ্গে ছয়টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি একসঙ্গে বিদেশ সফরে অংশ নেওয়ায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের বার্তা পৌঁছেছে।
২. বৈশ্বিক নেতাদের সঙ্গে কৌশলগত আলোচনায় অংশগ্রহণ
সফরে তিনি ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফের এমডি ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, ইউনিসেফ প্রধান ক্যাথরিন রাসেলসহ শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত এক নৈশভোজেও তিনি অংশ নেন।
৩. রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়
ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটকে সফরের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে উপস্থাপন করেন। তিনি এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের দাবি জানান। আলোচনার ফলস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মিলে শরণার্থীদের জন্য ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করে।
৪. এলডিসি উত্তরণে স্বাধীন মূল্যায়ন আহ্বান
বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা ও প্রস্তুতির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তিনি জাতিসংঘকে স্বাধীন মূল্যায়নের আমন্ত্রণ জানান। এটি দেশের আত্মবিশ্বাসী অর্থনৈতিক রূপান্তরের বার্তা বহন করে।
৫. নতুন শ্রমবাজারে সম্ভাবনা
কসোভো, আলবেনিয়া এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনায় শ্রমশক্তি রপ্তানির নতুন সুযোগ তৈরি হয়। এর ফলে ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৬. সহযোগিতার নতুন ভিশন
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আবারও তুলে ধরেছে—দেশটি একটি দায়িত্বশীল বৈশ্বিক অংশীদার, যা গণতান্ত্রিক শাসন, মানবিক সংহতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।