কে এই আশিক চৌধুরী


MARCH NAEEM 2ND/ashik-2504100934.jpg

সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আশিক চৌধুরী। তার গতিশীল নেতৃত্ব,কর্মদক্ষতা, উপস্থাপনা শৈলী  ও প্রযুক্তিনির্ভর বিনিয়োগ পরিকল্পনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে তাকে। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবেও তার অতীত রেকর্ড ছিল ব্যতিক্রমী। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবার একটাই প্রশ্ন, কে এই আশিক চৌধুরী?

আশিক চৌধুরীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে। পরবর্তী সময়ে তিনি পলিসি স্টাডিজে উচ্চতর ডিগ্রি নেন যুক্তরাজ্য থেকে। কর্মজীবনের শুরুতে জনপ্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে পরিকল্পনা কমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার ঝুলিতে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা।

বিডা চেয়ারম্যান হিসেবে তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল একটি ‘ডিজিটাল ইনভেস্টমেন্ট পোর্টাল’ চালু করা, যেখানে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই লাইসেন্স, অনুমোদন ও পরামর্শ নিতে পারছেন। এর ফলে বিনিয়োগে জটিলতা কমে গেছে। একইসঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে।

বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ গড়ার পাশাপাশি তিনি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণকেও প্রাধান্য দিচ্ছেন। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশ-সহনশীল শিল্পের উন্নয়নে তার উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে।

এদিকে নিয়োগের বিষয়ে গত বছরের ৬ নভেম্বর আশিক চৌধুরী নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “সরকারি চাকরির আজকে এক মাস হলো। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এক দুপুরে প্রফেসর ইউনূস হঠাৎ ফোন করে বললেন, ‘আশিক, দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পাওয়া গেছে। আসবা নাকি?’ আমি নন্দিনীকে জিজ্ঞেস না করেই রাজি হয়ে গেলাম। জানতাম ও কোনো দিন মানা করবে না। সো ৫৯ সেকেন্ডের এক হোয়াটসঅ্যাপ কলে আমরা সিঙ্গাপুরের বিলাসী জীবন ছেড়েছুড়ে দেশের পথে রওনা দিলাম বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে, বন্ধুদের ভাষায় বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার হিসেবে।

চাঁদপুরে বাড়ি হলেও বাবার চাকরির সুবাদে আশিকের বেড়ে ওঠা যশোরে। স্কুল-কলেজের পাট চুকিয়েছেন সিলেট ক্যাডেট কলেজে। এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ)। ২০০৭ সালে স্নাতক শেষেই যোগ দেন দেশের বেসরকারি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। ছুটিছাটায় ছুটে যেতেন রোমাঞ্চের টানে। ২০১১ সাল পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানেই চাকরি করেছেন। তারপর পড়তে যান যুক্তরাজ্যে। তখন থেকে সেখানেই তিনি নিজেকে নতুনভাবে গড়েছেন। 

এই আশিক চৌধুরী একজন স্কাইডাইভার। যিনি ৪১ হাজার ফুট উঁচু থেকে দেশের লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে লাফ দেন। যার কারণে তিনি ইতোমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুকে নাম লিখিয়েছেন।
আশিক চৌধুরী এখন শুধু একজন আমলা নন, বরং এক নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন—যিনি দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও ভবিষ্যতমুখী চিন্তার মাধ্যমে বদলে দিতে চান দেশের বিনিয়োগ খাতকে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×