৫০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা করেছে তেহরানে: আইডিএফ

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে আজ তারা ইরানের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক আপডেটে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তেহরানে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ৫০ টিরও বেশি যুদ্ধ বিমান তেহরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। আইডিএফ জানিয়েছে, ‘সাম্প্রতিক ধারাবাহিক হামলা’র সময় সামরিক কমান্ড সেন্টারগুলোতে আঘাত করেছে যুদ্ধবিমানগুলো। “যে স্থানগুলোতে আঘাত করা হয়েছে তার মধ্যে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার উৎপাদন কেন্দ্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণের অবকাঠামো রয়েছে” বলা হয়েছে আইডিএফের ওই বার্তায়। সূত্রঃ বিবসি

তেলের দাম বাড়াবেন না, আমি নজর রাখছি: হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

বিশ্বজুড়ে তেলের দাম কম রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২৩ জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পোস্টে তিনি সবাইকে তেলের দাম কম রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি না করা হলে তা শত্রুকে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার শামিল হবে। ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‌‌‘‘প্রত্যেকে তেলের দাম কম রাখুন। আমি নজর রাখছি! আপনারা শত্রুর হাতে খেলার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এটি করবেন না!’’ যুক্তরাষ্ট্র সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গত শনিবার ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিন পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আহ্বান জানিয়েছেন। ওই হামলার পর ইরান মধ্যপ্রাচ্যে জ্বালানি সরবরাহে হামলা চালাতে পারে বলে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তিনি এই পোস্টে নির্দিষ্টভাবে কাকে উদ্দেশ করেছেন, তা পরিষ্কার নয়। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তেল শিল্পের প্রতি ইঙ্গিত করে এই বার্তা দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে কিছু তেল কোম্পানি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও ওপেক প্লাস দেশগুলোর সরবরাহ বৃদ্ধি তেলের দাম কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর ফলে উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হতে পারে কোম্পানিগুলো।ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিশ্ববাজারে তেলের দামে পরিবর্তন দেখা গেছে। সোমবার সকালের বেশিরভাগ সময়জুড়ে তেলের ফিউচার ট্রেডিং প্রায় স্থির ছিল। তবে রোববার সন্ধ্যায় ব্রেন্ট তেলের দাম হঠাৎ ৫ শতাংশ বেড়ে ৮১ ডলারে পৌঁছায়। এরপর তা কিছুটা কমে যায়। বিশ্লেষকরা আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে তেল সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কায় বাজারে অস্থিরতা বাড়বে, আর সেই আশঙ্কাই এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে হরমুজ প্রণালীতে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এখান দিয়ে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তেল রপ্তানি হয়ে থাকে। রোববার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইরানের পার্লামেন্ট মজলিশে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া বিষয়ক একটি বিল পাস হয়েছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, এ ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি রোববার জানিয়েছেন, ইরানে মার্কিন বাহিনীর বোমাবর্ষণের জন্য ‘গুরুতর পরিণতি’ ঘটবে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, ইরানকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া থেকে বিরত রাখতে বেইজিংয়ের সহযোগিতা চেয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সোমবার তিনি বলেছেন, যদি তারা সত্যিই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়—তাহলে তা হবে একটি ভয়াবহ ভুল পদক্ষেপ এবং একই সঙ্গে তাদের নিজেদের জন্য অর্থনৈতিক আত্মহত্যা। কারণ এই প্রণালী দিয়ে তাদের তেলও পরিবহন করা হয়। সূত্র: এনবিসি নিউজ, বিবিসি।

ইসরায়েলের ১৩০টি ড্রোন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে চরম উত্তেজনা। ইরানি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ‘নির্মম ও অযৌক্তিক’ বিমান হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়েছে দুপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের পাঠানো অন্তত ১৩০টিরও বেশি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সোমবার (২৩ জুন) ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সীমান্ত লঙ্ঘন করে যেসব আক্রমণাত্মক ড্রোন পাঠিয়েছিল, তার বেশিরভাগই সফলভাবে শনাক্ত ও ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনগুলোর মধ্যে ছিল উন্নত প্রযুক্তির ‘হার্মেস ৯০০’, ‘হার্মেস ৪৫’, ‘হেরন’ ও আত্মঘাতী ‘হারপ’ মডেল। আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট গত কয়েকদিনে বহু শত্রু ড্রোন সফলভাবে ধ্বংস করেছে- বিবৃতিতে জানায় ইরান। তারা একে আকাশ প্রতিরক্ষায় নিজেদের সক্ষমতার একটি বড় উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছে। চলতি মাসের ১৩ জুন সকালে ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায়, যাতে দেশটির সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আন্বিয়া কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল গোলাম আলি রাশিদসহ ছয়জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। এই হামলা মুসলিম বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তেহরান এটিকে আন্তর্জাতিক আইন ও ইরানের সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দেয়। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’ নামের প্রতিরোধ অভিযান। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এই অভিযানে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, গোয়েন্দা স্থাপনা ও তেল-আবিবের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযান ছিল ‘সমন্বিত, সুপরিকল্পিত এবং কৌশলগতভাবে সফল’, যা ইরানের প্রতিরোধক্ষমতা ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতাকে নতুনভাবে তুলে ধরে। ইরান বলছে, এত বিপুলসংখ্যক ড্রোন ভূপাতিত করতে তাদের নিজেদের তৈরি রাডার সিস্টেম, জ্যামিং প্রযুক্তি ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট অস্ত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি বিশ্ব সামরিক ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করছেন ইরানি সামরিক বিশ্লেষকরা। তারা আরও বলেন, ড্রোনগুলোর প্রধান লক্ষ্য ছিল তথ্য সংগ্রহ ও ভবিষ্যৎ হামলার প্রস্তুতি, কিন্তু ইরানের আগাম প্রস্তুতি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতাই এই হুমকি প্রতিহত করেছে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় এক জ্যেষ্ঠ আইআরজিসি কমান্ডার বলেন, ইরান আর চুপ করে সহ্য করবে না। যে রক্ত অন্যায়ভাবে ঝরানো হয়েছে, তা ইমান ও প্রতিশোধ দিয়ে প্রতিফলিত হবে। ইরানের এই সাফল্য ও কঠোর অবস্থান ইসলামী বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু সামরিক জবাব নয়, বরং এক কৌশলগত বার্তা, যা ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের জন্য সুস্পষ্ট হুঁশিয়ারি। সূত্র : ট্রেন্ড নিউজ এজেন্সি

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না: ন্যাটো

ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে জোট একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট। সোমবার (২২ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বিবিসি বাংলা। হেগে সামিট চলার সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ন্যাটো মহাসচিব। তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে নেটোর অবস্থানের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, ইরান অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না, এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একমত হয়েছে জোটের সদস্যরা। ন্যাটো মহাসচিব বলেন, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য মিত্ররা বারবার ইরানকে আহ্বান করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইরান সেখানে গুরুতরভাবে জড়িত। ইরান এমন ড্রোন সরবরাহ করেছে যা রাশিয়া ইউক্রেনিয়ান বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করতে ব্যবহার করছে।

পেহেলগাম হামলায় জড়িতরা পাকিস্তানি নাগরিক: ভারত

ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি (এনআইএ) দাবি করেছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত তিনজন জঙ্গিই ছিল পাকিস্তানি নাগরিক। তারা নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়্যবার সদস্য বলেও জানিয়েছে এনআইএ। খবর বিবিসির। গত ২২ এপ্রিল বৈসরণ উপত্যকায় চালানো ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। ঘটনার পরপরই এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় এনআইএর হাতে। তদন্ত সংস্থাটি জানায়, সম্প্রতি কাশ্মীরের দুই বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হামলার আগে ওই তিন জঙ্গিকে স্থানীয় একটি কুঁড়েঘরে আশ্রয় দিয়েছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা এনআইএর হেফাজতে রয়েছেন। প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি ও একজন স্থানীয় নাগরিক। তবে এনআইএ শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তিনজনই বিদেশি। হামলার পর কাশ্মীরজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি ও আটক অভিযান চালানো হলেও এখন পর্যন্ত জঙ্গিরা ধরা পড়েনি। প্রথমে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে আবার অস্বীকার করে তারা। এনআইএর নতুন দাবির বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি পাকিস্তান। তবে আগেই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল দেশটি।

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার হুমকি ইরানের

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে নিশানা করে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। ইরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও এখন টার্গেট করা হবে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর নতুন প্রধান আবদোল রহিম মোসাভি এক বিবৃতিতে বলেছেন, অপরাধী যুক্তরাষ্ট্রের জানা উচিত যে, ইসরাইল নামের অবৈধ ও আগ্রাসী সন্তানের শাস্তির পাশাপাশি ইসলামের যোদ্ধাদের হাত এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেকোনও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মুক্ত। এ বিষয়ে আমরা কখনই পিছপা হব না। এদিকে ইরানের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদে জানিয়েছেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, সে সিদ্ধান্ত ইরান নিজের মতো করেই নেবে। তেহরান থেকে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাতিবজাদে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ইরানের হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, কখন, কীভাবে এবং কোন মাত্রায় আমেরিকানদের জবাব দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত ইরান নেবে। ফর্দোর মতো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে তিনি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন ও ‘ভয়াবহ ভুল’ বলে অভিহিত করেন।

ইরানের পরমাণু সক্ষমতা সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হবে: হোয়াইট হাউস

ইরানের পরমাণু বিষয়ক যাবতীয় সক্ষমতাতে সমূলে ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট। সোমবার মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ চ্যানেলের ‘গুডমর্নিং আমেরিকা’-তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যারোলিন। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ইরানের পরমাণু বিষয়ক সক্ষমতাকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। ইতোমধ্যে মার্কিন বাহিনী হামলা শুরু করেছে এবং আমাদের উচ্চমাত্রায় বিশ্বাস আছে যে ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যেখানে লুকিয়ে রেখেছে, সেখানেও হামলা করা হবে।” ক্যারোলিন আরও বলেন, “আমাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস যদি তার না থাকতো, তাহলে এই নির্দেশ দিতেন না তিনি।” প্রসঙ্গত, আলোচিত পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপ চলার মধ্যেই গত ১৩ জুন ইরানে বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। প্রথম দিকে এ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ না নিলেও শনিবার রাতে ইরানের ফার্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্ফাহানের সামরিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাতের মাধ্যমে এতে যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সামরিক বাহিনী এ অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন মিডনাইট হ্যামার। যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযানের কঠোর নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি বলেছেন, এই হামলা ‘ক্ষমার অযোগ্য’। সূত্র : সিএনএন

সিরিয়ার গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ২৫

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে একটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। রোববার (২২ জুন) প্রার্থনার সময় এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। খবর আল-জাজিরার। আত্মঘাতী এ বিস্ফোরণটি ঘটেছে দুইলা এলাকায় অবস্থিত মার এলিয়াস চার্চে। এ সময় চার্চটির ভেতরে লোকজন প্রার্থনা করছিল। সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক ব্যক্তি প্রথমে চার্চে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে এবং পরে নিজের শরীরে থাকা বিস্ফোরক ভেস্টের মাধ্যমে নিজেকে উড়িয়ে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার না করলেও, সিরিয়ার মন্ত্রণালয় বলছে, হামলাকারী আইএসআইএল (আইএসআইএস) গোষ্ঠীর একজন সদস্য। সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৬৩ জন। সিরিয়া সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এখনও ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার চলছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। সিরিয়ায় এটি বহু বছরের মধ্যে প্রথম বড়সড় গির্জা হামলা। প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ-এর অন্তর্বর্তী সরকার যখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে, তখন এ হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিগত ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের পর সিরিয়া ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। গত বছর ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ অপসারিত হওয়ার পর দেশটিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তবে এ হামলা আবারও স্মরণ করিয়ে দিল যে, আইএসের ঘুমিয়ে থাকা সেল এখনো সক্রিয় এবং তারা যেকোনো সময় হামলা চালাতে সক্ষম।

হরমুজ প্রণালী থেকে সরে গেছে তিনটি তেলবাহী ট্যাংকার

হরমুজ প্রণালী থেকে তিনটি তেলবাহী ট্যাংকার সরে গিয়ে গতিপথ পরিবর্তন করেছে। মেরিন ট্রাফিক ডাটা রিপোর্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। খালি তেল ও রাসায়নিক ট্যাংকারগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যারি সি এবং রেড রুবি। ট্যাংকারগুলো এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে নোঙর ফেলেছে। হরমুজ প্রণালী হল বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম তেল পরিবহন লেন। ধারণা করা হচ্ছে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান এই প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। জাহাজ চলাচলের তথ্যের ভিত্তিতে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ‘কোসউইজডম লেক’ ও ‘সাউথ লয়্যালটি’ নামের দুটি খালি সুপারট্যাংকার হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করলেও তারা আচমকা গন্তব্য বদলে ফেলে। দুটি জাহাজের প্রতিটিতে প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবহনে সক্ষম। ব্লুমবার্গ আরও জানায়, চলমান উত্তেজনার মধ্যে জাহাজগুলোর ফিরে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্যে বিকল্প রুটে চলাচল শুরুর প্রথম ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলমান সংকট সরবরাহ ও পরিবহনব্যবস্থায় কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে জাহাজের মালিক ও ব্যবসায়ীরা সতর্কভাবে নজর রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিবিষয়ক দপ্তরের তথ্যমতে, বৈশ্বিক তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালির মধ্য দিয়ে যায়। সংস্থাটি একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি পরিবহনের পথ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। সোমবার (২৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।এর আগে ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় রোববার ইসলামাবাদ নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে এটিকে “ইরানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আগ্রাসন” বলে অভিহিত করেছে দেশটি। এ হামলার ঘটনায় শাহবাজ শরীফ ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পাকিস্তানের সংহতি প্রকাশ করেন। এর আগে শনিবার পাকিস্তান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে “সত্যিকারের শান্তির দূত” বলে প্রশংসা করে এবং তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু মাত্র একদিন পরই ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে সক্রিয়ভাবে যোগ দেয়। একে পাকিস্তান “বর্বরতা” বলে আখ্যা দিয়েছে। ট্রাম্পের “অসাধারণ রাষ্ট্রনায়কত্বের” প্রশংসা করার পর এখন পাকিস্তান সেই হামলার কঠোর নিন্দা করছে এবং বলছে এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সূত্রঃ বিবিসি

ইরানের ‘কুখ্যাত’ এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলা

ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত ‘কুখ্যাত’ এভিন কারাগারে হামলা চালিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না বা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কতটা গুরুতর, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই হামলায় কারাগারের প্রবেশপথকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন। সিএনএন বলেছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়- এভিন কারাগারের একটি প্রবেশদ্বার ঘিরে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ছে। ভিডিওটি সিএনএন যাচাই করে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, আইআরআইবির প্রতিবেদনে দেখানো দৃশ্যটি সত্যিই কারাগারের প্রবেশপথে আঘাত হানার মুহূর্তের। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক বিবৃতিতে এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এভিন কারাগারের পাশাপাশি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) এর প্রধান ভবন এবং তাদের অঙ্গসংগঠন বাসিজ-এর সদর দপ্তরেও হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার একদিন পর ইরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল তেহরানের এই কারাগারসহ একাধিক স্থানে হামলা শুরু করে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার জন্য ইরানি স্বৈরশাসককে পূর্ণশক্তি দিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, তেহরানের এভিন কারাগারটি দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। এই কারাগারে রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক এবং সংগীতশিল্পীদের আটক রাখা হয় বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ।

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ‘ভিত্তিহীন আগ্রাসন’: পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার মস্কোয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ইরানের ওপর চালানো হামলা ছিল ‘একটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন আগ্রাসন’। খবর আনাদোলু এজেন্সির। ১৩ জুন থেকে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সরাসরি বিমান হামলার মাধ্যমে সংঘাত শুরু হয়। ইসরাইল প্রথমে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় একাধিক বিস্ময়কর হামলা চালালে, জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে। এরপর রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ হামলাকে ‘বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ও সফল অভিযান’ বলে উল্লেখ করেছেন। পুতিন বলেন, ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী, ভালো ও নির্ভরযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে। আমরা ইরানি জনগণের পাশে থাকার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠিয়েছেন। পুতিন আরাগচিকে আরও বলেন, আপনার আজ মস্কো সফর আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে আমরা এ সংকট নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করতে পারব এবং একসঙ্গে সমাধানের পথ খুঁজতে পারব। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রতিদিনই বাড়ছে এবং এর মূল কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালানো। তিনি রাশিয়ার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাশিয়া ইতিহাসের সঠিক পাশে রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করে চলছে।

এবার পুতিনকে চিঠি দিলেন খামেনি

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাহায্য চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ইরানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খামেনির দেওয়া চিঠি নিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ইতিমধ্যেই চিঠিটি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের। সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান চায় ইসরাইল ও মার্কিন হামলার বিরুদ্ধে আরও কিছু করুক পুতিন। যদিও খামেনি কেমন সহায়তার কথা জানিয়েছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সূত্রটি। এদিকে সোমবার বৈঠকে আব্বাস আরাগচিকে পুতিন বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ভিত্তিহীন। ক্রেমলিনে আরাগচির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে পুতিন এ মন্তব্য করেন এবং বলেন, ইরানি জনগণকে সাহায্য করতে রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে। ইরানের ওপর মার্কিন হামলার নিন্দা করায় পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরাগচি বলেন, রাশিয়া ‘সঠিক ইতিহাসের পক্ষে’ অবস্থান নিয়েছে। এ ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও পুতিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর আগে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর এ দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। যে যুক্তিই দেওয়া হোক না কেন আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এ হামলা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। চলমান পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পথে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রচেষ্টা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি।

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলার সর্বশেষ অবস্থা

সোমবার সকাল থেকেই ইরান ও ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। নিচে এই সংঘাতের সর্বশেষ পরিস্থিতি দেয়া হলো। ইসরায়েল ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইরান।এর ফলে ইসরায়েলে দক্ষিণে প্রায় আট হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইসরায়েলের একটি প্রধান জ্বালানি কোম্পানি তাদের একটি স্থাপনার কাছে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের কথা জানায়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইরান ইসরায়েল ইরানের ওপর তাদের হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সেখানে ‘নজিরবিহীন শক্তি’ দিয়ে হামলার কথা জানিয়েছেন। কাৎজ আরও বলেন, তেহরানে যেসব লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে সেগুলো ওই “শাসনামলের প্রতীক”। সপ্তাহ শেষে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা এবং ইরানিয়ান “শাসনামলের পরিবর্তন” এর বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পর ইরানিয়ান সামরিক নেতারা “ চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া” দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি রপ্তানির জন্য জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ পথ হরমুজ প্রণালী ইরান বন্ধ করে দিতে পারে বলেও উদ্বেগ রয়েছে। সূত্রঃ বিবিসি

ফোর্দোর প্রবেশ পথগুলো লক্ষ্যবস্তু: আইডিএফ

ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, “ওই স্থাপনায় প্রবেশের পথগুলো বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা এটি করেছে।” এর আগে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে ইরানের স্থানীয় কর্মকর্তারাও বলেছিলেন ইসরায়েল ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করেছে। সূত্রঃ বিবসি

এয়ার ইন্ডিয়ার লাইসেন্স বাতিলের হুমকি ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার

আহমেদাবাদে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর তোপের মুখে থাকা ভারতীয় বিমান পরিষেবা সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। গত ১২ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী একটি ফ্লাইট গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন ৩ শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে ২৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে ১ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার হংকঙগামী একটি যাত্রীবাহী বিমানের দরজা মাঝ আকাশে থাকতে খুলে গিয়েছিল। এতে বিরাট দুর্ঘটনা মুখে পড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বিমানটির। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সাম্প্রতিক এসব দুর্ঘটনাকে আমলে নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার অপারেশন্স বিভাগের তিন কর্মকর্তাকে ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিয়ে পরিষেবা সংস্থাটিকে নোটিশ দিয়েছে ডিজিসিএ। এই তিন কর্মকর্তা হলেন এয়ার ইন্ডিয়ার ইন্টিগ্রেটেড অপারেশন্স কন্ট্রোল সেন্টার (আইওসিসি) বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট চূড়াহ সিং, ডিওপিএস বিভাগের মুখ্য ব্যবস্থাপক পিঙ্কি মিত্তাল এবং ক্রু শিডিউলিং-প্যানেল বিভাগের প্রধান নির্বাহী পায়েল অরোরা। নোটিশে বলা হয়েছে, অবিলম্বে যদি এই তিন কর্মকর্তাকে ছাঁটাই না করা হয় সেক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো ও ফ্ল্যাগশিপ এই বিমান পরিষেবা সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করতে বাধ্য হবে ডিজিসিএ। গত ২০ জুন নয়াদিল্লিতে এয়ার ইন্ডিয়ার সদর দপ্তরের ঠিকানায় এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসকে নিশ্চিত করেছে ডিজিসিএ-এর একটি সূত্র। এদিকে সোমবার এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ডিজিসিএ-এর নির্দেশনা অনুযায়ী ওই তিন কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ফ্লাইট অপারেশন্স বিভাগের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আপাতত ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ দেখাশোনা করছেন। সূত্র: আলজাজিরা

খামেনির হুমকির পর ইসরাইলে নতুন হামলা ইরানের

ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এই খবর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে অ্যালার্ম বেজে ওঠে। কয়েক ঘণ্টা আগে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর মধ্য ইসরাইলে সাইরেন বেজে ওঠে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ ইসরাইলকে হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ইসরাইলে নতুন করে হামলা শুরু করে ইরান। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ‘জায়নিস্ট শত্রু (ইহুদি শত্রু) একটি বড় ভুল করেছে, একটি বড় অপরাধ করেছে। এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। শাস্তি পাচ্ছে, এখনই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।’ ইসরাইলের যেসব স্থানে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে, সেরকম বেশ কয়েকটি স্থানে অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। দেশটির বিভিন্ন স্থানে যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার খবর পাওয়া গেছে, সেসব স্থানে উদ্ধারকারী দলগুলো কাজ করছে। একটি পৃথক বিবৃতিতে ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ইসরাইলের খোলা জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র পড়ে যাওয়ার খবর রয়েছে তাদের কাছে। এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহত বা সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ করেছে ইসরাইলি পুলিশ। একইসঙ্গে ওই এলাকাগুলো সুরক্ষিত করার জন্য কর্মকর্তারা এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

মার্কিন হামলার ‘কঠিন জবাব’ দেবে ইরান: সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ‘কঠিন জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল আমির হাতামি। আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত এক ভিডিও ক্লিপে তাকে এই মন্তব্য করতে দেখা যায়। মেজর জেনারেল আমির হাতামি বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসে আমরা বহুবার আমেরিকার মুখোমুখি হয়েছি। যখনই তারা আমাদের দিকে আসার চেষ্টা করেছে, তখনই তারা কঠিন জবাব পেয়েছে।’ দৃঢ়তার সঙ্গে সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক যোগ করেন, ‘আমরা যুদ্ধ করব; আমরা শান্তির জন্য যুদ্ধ করব। আমাদের অনেক শহীদ হয়েছে, কিন্তু আমরা শক্তি ও সাহসের সঙ্গে লড়াই করব। আপনারা আমাদের শক্তির বিষয়ে নিশ্চিত থাকবেন।’ ইরানের অন্যতম জ্যেষ্ঠ জেনারেল হাতামি। এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে তিনি এই পদে নিযুক্ত হয়েছেন। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ইরানের সামরিক নেতৃত্বে রদবদল হয়। শূন্য পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতামি অন্যতম।

ইরানকে সাহায্য করতে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ভিত্তিহীন। ক্রেমলিনে আরাগচির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে পুতিন এ মন্তব্য করেন এবং বলেন, ইরানি জনগণকে সাহায্য করতে রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে। খবর আল-জাজিরার। এদিকে ইরানের ওপর মার্কিন হামলার নিন্দা করায় পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরাগচি বলেন, রাশিয়া ‘সঠিক ইতিহাসের পক্ষে’ অবস্থান নিয়েছে। এ ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও পুতিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর আগে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর এ দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। যে যুক্তিই দেওয়া হোক না কেন—আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এই হামলা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। চলমান পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পথে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রচেষ্টা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার রাশিয়া পৌঁছান। আজ সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এর আগে তুরস্কের ইস্তান্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাগচি বলেন, রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমরা একটা কৌশলগত অংশীদারত্ব উপভোগ করছি। সব সময় আমরা পরস্পরের সঙ্গে পরামর্শ করি এবং সমন্বয় করি। রাশিয়া ও ইরান গত জানুয়ারিতে একটি ‘বিস্তৃত অংশীদারত্ব চুক্তি’ স্বাক্ষর করে, যা তাদের ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মৈত্রীকে আরও মজবুত করে। তবে এ চুক্তিতে কেউ হামলার শিকার হলে পারস্পরিক সামরিক প্রতিরক্ষার কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।

‘জুয়াড়ি ট্রাম্প, আপনি যুদ্ধ শুরু করতে পারেন কিন্তু শেষ করব আমরা’

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বোমা হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ প্রবেশ করেছে ১১তম দিনে। একদিকে ইসরায়েল নতুন করে ইরানের রাজধানীসহ একাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, অন্যদিকে ইরানের সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ‘মারাত্মক ফলের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল আবদুর রহিম মুসাভি যুক্তরাষ্ট্রকে এক কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা কখনোই পিছিয়ে যাব না। সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মুসাভি বলেন, ‘অপরাধী আমেরিকা ইসলামের যোদ্ধাদের সামনে যুদ্ধের দরজা খুলে দিয়েছে। তারা ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে আমাদের পবিত্র ভূমিতে হস্তক্ষেপ করেছে। এর জবাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো সময় প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত এবং আমরা এক ইঞ্চিও পিছু হটব না।’ এই বার্তাটি সোমবার ইরানের সামরিক নেতৃত্বের একাধিক হুঁশিয়ারির সর্বশেষ সংযোজন। যদিও এখনো পর্যন্ত ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। ‘গ্যাম্বলার ট্রাম্প, আপনি যুদ্ধ শুরু করতে পারেন—শেষ করব আমরা’ সশস্ত্র বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডের মুখপাত্র ইব্রাহিম জোলফাকারি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে শক্তিশালী, নির্ভুল এবং ভয়ানক। এতে শত্রু কেবল অনুতপ্তই হবে না, বরং এমন ফল ভোগ করবে যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।’ এরপর ইংরেজিতে বলেন, ‘গ্যাম্বলার ট্রাম্প, তুমি এই যুদ্ধ শুরু করতে পারো, কিন্তু শেষ করব আমরা।’ এই বার্তা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফারস ও মেহর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এই হুঁশিয়ারিগুলো এমন এক সময় এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালিয়ে একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। তীব্র প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই বক্তব্য শুধু হুমকি নয়, বরং অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা। এখন সবার দৃষ্টি খামেনির দিকেই, যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন, ইরান এই উত্তেজনা মোকাবিলায় কোন পথে এগোবে—পূর্ণ প্রতিশোধ নাকি কৌশলগত সংযম। সর্বশেষ যা যা ঘটল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ২০টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গতকাল রবিবার রাতে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের কেরমানশাহ শহর ও রাজধানী তেহরানে একযোগে হামলা চালায়। লক্ষ্য ছিল ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ও উৎক্ষেপণ কেন্দ্র, স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক এবং সামরিক রাডার ঘাঁটি। আইডিএফ-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে প্রস্তুত করা বেশ কিছু ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এ ছাড়াও, ইরানের ছয়টি বিমানবন্দরেও হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে ১৫টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরায়েল। ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইরান থেকে নতুন করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে। ফলে তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়। রাতভর ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানায় আইডিএফ। তেলের বাজারে উত্তেজনা এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় কোনো বিঘ্ন না ঘটলেও, হামলার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে তেলের দাম এক লাফে প্রায় ১০শতাংশ বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ইরান হরমুজ প্রণালীতে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল, যা বিশ্ব সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ, পরিবাহিত হয়। রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের কৌশলগত বৈঠক এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি গতকাল রবিবার মস্কো পৌঁছেছেন এবং সোমবার তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। বৈঠকে ইরান-রাশিয়ার হুমকি ও প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কড়া সমালোচনা করে বলেছে, ‘এটি একেবারে দায়িত্বজ্ঞানহীন একটি সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।’ উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে রাশিয়া ও ইরান একটি ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ সই করেছে, যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সামরিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হয়। সার্বিকভাবে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এখন একটি বহুমুখী যুদ্ধের রূপ নিচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াও সরাসরি জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে। ইরান কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটিই এখন পুরো অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এদিকেমার্কিন নাগরিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানে মার্কিন হামলার পর দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে এই সতর্কতা জারি করা হয়।ইরানের বড় ধরনের এই হামলার পরই ইসরায়েলে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এর জেরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। সূত্র : সিএনএন

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ইসরায়েলের ওপর একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এই হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে। বড় ধরনের এই হামলার পরই ইসরায়েলে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এর জেরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দক্ষিণ ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইসরায়েল ইলেকট্রিক করপোরেশন (আইইসি) নিশ্চিত করেছে যে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র “কৌশলগত অবকাঠামো স্থাপনার” কাছে সরাসরি আঘাত লেগেছে। এর ফলে আশপাশের বেশ কয়েকটি শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এক বিবৃতিতে আইইসি জানায়, “দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যে আমাদের টিমগুলো এখনই ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে। এ সময় অবকাঠামোর মেরামত এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি অপসারণের কাজ চলছে, যা নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে।” এদিকে, হামলার সময় প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে সাইরেন বাজতে থাকে, ফলে নাগরিকদের দীর্ঘ সময় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করতে হয়। ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ জানায়, “ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এবারই ইসরায়েলিরা সবচেয়ে দীর্ঘ সময় আশ্রয়কেন্দ্রে কাটাল।” এর আগে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ঘোষণা করে, তারা ইসরায়েলের ওপর একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানায়, এই হামলায় কঠিন ও তরল জ্বালানিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি এমন কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে সক্ষম। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের পাঁচটি স্থানে — সাফাদ, তেল আবিব, আশকেলন, আশদোদ এবং বেইসানে — রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এই হামলার পর এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

ক্যান্সার হওয়ায় ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছে নাতী

ভারতের মুম্বাইয়ে আবর্জনার স্তূপের উপর পড়ে থাকা ৬০ বছর বয়সী যশোদা গায়কওয়াড় তার নাতিকে সেখানে ফেলে দেওয়ার জন্য দোষারোপ করেন

ইরানে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে জনগণ, অংশ নিলেন প্রেসিডেন্টও

ইরানের তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশটির রাজধানীজুড়ে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেখানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। বিক্ষোভ ‘আমেরিকার আগ্রাসনের জবাব চাই’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’- ইত্যাদি নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ইরানি পতাকা, নিহতদের ছবি এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলি নেতাদের কুশপুতুল। অনেকে হাতে ধরে রেখেছিলেন ব্যানার যাতে লেখা ছিল: ‘আমরা প্রতিরোধ করবো, আত্মসমর্পণ নয়’, ‘হামলা হলে জবাব আসবেই’, ‘পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রক্ত বৃথা যাবে না’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই হামলা কেবল ইরানের নয়, সমস্ত মুসলিম বিশ্বের ওপর আঘাত। আমেরিকা জানে না, ইরান কখনও মাথানত করে না।’ ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিক্ষোভের লাইভ সম্প্রচার করে। অনেক জায়গায় ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত থেকে জনগণকে ‍উদ্বুদ্ধ করেন প্রতিরোধে সক্রিয় থাকতে। তেহরানের আজাদি স্কয়ার, ফার্দৌসি স্কয়ার, ইমাম হোমেইনি মসজিদের সামনে এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ছিল প্রধান বিক্ষোভস্থল। তবে দেশটির বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো করে বিক্ষোভ হয়। তেহরানেরআজাদি স্কয়ারে আসেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশ নেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভগুলো শুধু সরকার সমর্থিত নয়—বিশেষ করে ইরানে পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের ওপর হামলার পর সাধারণ জনগণের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ও ক্ষোভ উভয়ই দৃশ্যমান। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এর পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইরানের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে যারা

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এরই মধ্যে ইরানপন্থি মিলিশিয়াদের সশস্ত্র প্রস্তুতি শনাক্ত করেছে। প্রাথমিকভাবে ইরাকের আইন আল আসাদ ঘাঁটি এবং সিরিয়ার কিছু মার্কিন অবস্থানে হামলা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউস কিংবা তেহরান আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সূত্র জানিয়েছে, ইরাক সরকার সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আপাতত এসব মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে বলেও দাবি করা হয়। ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশে অবস্থিত আইন আল আসাদ ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। এখান থেকেই ইরাকি বাহিনী ও ন্যাটোর বিভিন্ন অভিযানে সহায়তা দেয় মার্কিন সেনারা। ২০২০ সালে ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় হত্যা করার পর এই ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক মিসাইল হামলা চালিয়েছিল ইরান। এ ছাড়া ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের ইরবিল বিমানঘাঁটিতেও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র বাহিনীর উপস্থিতি। এই ঘাঁটি গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, প্রশিক্ষণ এবং সরবরাহ সহায়তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য, ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইরাকের হাশদ আশ-শাবি, যার অন্তর্ভুক্ত কতাইব হিজবুল্লাহ, আসাইব আহল আল-হক ও বদর অর্গানাইজেশন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী হামলায় সক্রিয়। লেবাননের হিজবুল্লাহ ইরানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরব ও ইসরায়েলের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত ফাতেমিয়ুন (আফগান যোদ্ধা) ও জাইনাবিয়ুন (পাকিস্তানি শিয়া) ব্রিগেড রয়েছে, যারা আসাদ সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করে। এসব গোষ্ঠীকে সমন্বয়, অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের বৈদেশিক শাখা কুদস ফোর্স।