গাজায় অবিস্ফোরিত ইসরায়েলি বোমায় আহত হচ্ছে শিশুরা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৫৯ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
গাজায় যুদ্ধ শেষ হলেও বিপদের শেষ হয়নি। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া অবিস্ফোরিত বোমা এখন নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য। ধারণা করা হচ্ছে, অঞ্চলটিতে প্রায় ২০ হাজার অবিস্ফোরিত বিস্ফোরক ডিভাইস রয়ে গেছে, যা যেকোনো সময় প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, আল জাজিরার ফ্যাক্ট-চেকিং বিভাগ ‘সানাদ’ যাচাই করা কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, অবিস্ফোরিত বোমার আঘাতে ইয়াজান ও জুদ নুর নামের দুই ফিলিস্তিনি শিশু গুরুতরভাবে আহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজা শহরের পশ্চিমে নাসর পাড়ায় নিজেদের ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়ি দেখতে ফিরে আসার সময় বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আহত দুই শিশুকে আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গাজা সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, গত দুই বছরে ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষেপ করা রকেট, গোলা ও বোমা থেকে তৈরি হাজার হাজার বিস্ফোরক ডিভাইস এখনো গাজার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে। সংস্থাটি আরও জানায়, এসব ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে অন্তত ৭ কোটি টন ভগ্নস্তূপ পুরো উপত্যকাকে বিপজ্জনক এলাকায় পরিণত করেছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বিশাল এই ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ নানা বাধায় থমকে আছে। ইসরায়েলের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারী যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকায় উদ্ধারকাজেও বিঘ্ন ঘটছে, এমনকি নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে আরও শত শত মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনাও বহু প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। বর্তমানে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারের মুখোমুখি।