কিয়েভসহ একাধিক শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা, ব্যর্থ ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৪০ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২৫

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন। কিন্তু আলোচনার পর ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, এই কথোপকথন থেকে কোনো কার্যকর সমাধান মেলেনি। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।”
এই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরপরই, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর নতুন করে ভয়াবহ হামলা শুরু করে। কিয়েভ শহর কর্তৃপক্ষ জানায়, টানা ১৩ ঘণ্টা ধরে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ বাহিনী। রাতভর চলা এই হামলায় অন্তত ২৩ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, রাশিয়া একসঙ্গে ৫৩৯টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে ৪৭৬টি প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ ড্রোন হামলা রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই প্রথম। একই সময়ের মধ্যে রুশ বাহিনী আরও ১১টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়ে।
এই হামলার কারণে রাতভর হাজার হাজার মানুষকে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়। কেউ আশ্রয় নেন ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনে, কেউবা গ্যারেজ বা পার্কিং লটে। বিস্ফোরণের শব্দ কিয়েভসহ একাধিক শহরে শোনা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বহু বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। এমনকি কিয়েভের রেলস্টেশন এবং অ্যাম্বুল্যান্সেও হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাশিয়া ইউক্রেনে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। তার দাবি, গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই অস্ত্র ব্যবহারে রাশিয়া যেন এক ধরনের নিয়মিততা তৈরি করছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুতর অপরাধ। তিনি রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একদিকে কূটনৈতিক আলোচনা ব্যর্থ হচ্ছে, অন্যদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে হামলার তীব্রতা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আরও বলেন, পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হলেও ইরান ও ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো চুক্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও তিনি শিগগিরই কথা বলবেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে তার ছয়বার ফোনালাপ হলো। তিনি ক্ষমতায় আসার আগেই বলেছিলেন, এই যুদ্ধ থামানো সম্ভব এটি শুধু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখনো তিনি কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেননি।