অনিয়মিত মাসিক কেন হয়? কারণসমুহ জানালেন ডা. তাসনিম জারা


February 4 2025/tasnim jara.webp

মাসিক বা পিরিয়ড নারীর জীবনে একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট চক্র মেনে ঋতুস্রাব হয়। সাধারণত ২১ থেকে ৩৫ দিন পর পর মাসিক হওয়াকে নিয়মিত মাসিক বলে ধরা হয়। কিন্তু অনেক সময় এই চক্রে গোলমাল দেখা দেয়, যাকে অনিয়মিত মাসিক বলা হয়। বিভিন্ন কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে নিজস্ব চ্যানেলে অমিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজের শিক্ষক ও সহায় হেলথের সহপ্রতিষ্ঠাতা ডা. তাসনিম জারা।

অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণসমূহ:

অনিয়মিত মাসিকের পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু কারণ স্বল্পমেয়াদী এবং সহজে সমাধানযোগ্য, আবার কিছু কারণ দীর্ঘমেয়াদী বা অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে।

মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত ঘটায়, যার ফলে মাসিক চক্র প্রভাবিত হতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজন: শরীরের ওজন মাসিকের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ওজন অথবা অতিরিক্ত কম ওজন উভয়ই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে মাসিককে অনিয়মিত করতে পারে।

অতিরিক্ত ব্যায়াম: যারা খুব বেশি strenuous ব্যায়াম করেন, বিশেষ করে পেশাদার ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে, তাদের শরীর অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা অনিয়মিত হতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত পুষ্টি এবং হঠাৎ করে ওজন কমানোর চেষ্টা করলেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।

এছাড়া শরীরে থাকা কিছু রোগের কারণেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে...

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: এটি অনিয়মিত মাসিকের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রার তারতম্য হলে মাসিক চক্র ব্যাহত হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকাল, মেনোপজের কাছাকাছি সময় (পেরিমেনোপজ) এবং প্রসবের পর এই ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS): এটি একটি সাধারণ হরমোনজনিত সমস্যা, যা ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি করে। PCOS-এর কারণে মাসিক অনিয়মিত হয়, পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ব্রণ এবং শরীরে অবাঞ্ছিত লোম গজাতে পারে।

থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা: থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন কম বা বেশি হলে মাসিকের ওপর প্রভাব পড়ে। হাইপোথাইরয়েডিজম (কম থাইরয়েড হরমোন) এবং হাইপারথাইরয়েডিজম (বেশি থাইরয়েড হরমোন) উভয়ই অনিয়মিত মাসিকের কারণ হতে পারে।

গর্ভনিরোধক পিল বা অন্যান্য ঔষধ: কিছু নির্দিষ্ট ঔষধ, যেমন – জন্মনিয়ন্ত্রক পিল, অ্যান্টিকোগুল্যান্টস, থাইরয়েড ঔষধ বা কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস মাসিক চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে।

ফাইব্রয়েডস (Fibroids): জরায়ুতে নন-ক্যানসারাস টিউমার (ফাইব্রয়েডস) থাকলে মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত বা অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।

জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের অন্যান্য সমস্যা: জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের সংক্রমণ, এন্ডোমেট্রিওসিস বা অন্যান্য কাঠামোগত সমস্যাও অনিয়মিত মাসিকের কারণ হতে পারে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×