রাঙামাটিতে দুই দম্পতির উদ্যোগে মৌসুমি ফল বিতরণ


saurav/WhatsApp Image 2025-07-04 at 7.28.44 PM.jpeg

রাঙ্গামাটির ভেদভেদী এলাকায় সরকারী শিশু পরিবারের শিশু-কিশোরী ও স্টাফসহ প্রায় দুইশত মানুষের মাঝে মৌসুমি ফল বিতরণ করলেন রাঙ্গামাটির দুই দম্পত্তি। এই দুই দম্পত্তিরা হলো শহরের মাঝেরবস্তী এলাকার বাসিন্দা লিটন শীল ও তার স্ত্রী লাক্সমি এবং বিলাইছড়ির মনু মারমা ও তার স্ত্রী জনি তংচঙ্গ্যা। 

শুক্রবার (৪ জুন) বিকেলে রাঙ্গামাটি শিশু পরিবার কার্যালয় গিয়ে কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে এই মৌসুমী ফল বিতরণ করেন এই দুই দম্পত্তি। 

ফল বিতরণ অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক কর্মকর্র্তা মোঃ আব্দুর রশিদ, সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট জুনোটন চাকমা’সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মৗসুমী ফল বিতরণকালে সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্ববধায়ক কর্মকর্র্তা মোঃ আব্দুর রশিদ বলেন,  এই দম্পত্তির মধ্যে লাক্সমি ও এক সময় শিশু পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি এখান থেকে চলে গেলেও তার অতিতকে সে ভোলেনি। তাই লাক্সমি ও তার স্বামী তাদের বিয়ের খাবার এই শিশুদেরকে খাইয়েছিলেন। আজ আবার তোমাদের মাঝে এই মৌসুমি ফলগুলো বিতরণ করলেন। যা অবশ্যই প্রসংসার দাবী রাখে। তাদের থেকে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় তোমাদের শিখতে হবে। তাদের ন্যয় তোমরাও এখান থেকে চলে গেলেও এই পরিবারের কথা মনে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।  

সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট জুনোটন চাকমা বলেন, শুধু সম্পদ থাকলেই হয়না। যে কোন মহৎ কাজ করতে বড় মন লাগে। আমাদের সমাজে অনেক বিত্তবান আছে কিন্তু এ ধরনের মহৎ কাজ করতে তাদের সময় কুলোয় না। আমি এই দম্পত্তিদের জন্য মন থেকে আর্শিরবাদ করছি। 

মৌসুমি ফল বিতরণকালে লিটন শীল প্রতিবেদককে বলেন, নিজের সামর্থ অনুযায়ী এই শিশুদের বছরের মৌসুমি ফল ''আম ও কাঠাল'' বিতরণ করলাম। মনে অনেক শান্তি পাচ্ছি তাদের মাঝে এই ফল বিতরণ করে। কারণ এখানে অনেক শিশু রয়েছে যারা কেউ মা আবার কেউ বাবাহীন। সমাজের বিত্তবানদের বলবো সামর্থ অনুযায়ী তাদের পাশে এসে দাঁড়াতে। 

লাক্সমি শীল বলেন, ছোট বেলায় বাবা-মাকে হারানোর পর আমার মামা আমাকে এই সরকারী শিশু পরিবারে ভর্তি করে দিয়ে যান। আমার বয়স তখন ৭-৮ বছর। এখানে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরম মমতায় সেই থেকে শৈশব ও কৈশর কেটেছে এখানেই আমার। আমিও এই শিশু পরিবারের একজন সদস্য। এখানে থাকা শিশুদের কষ্টগুলো নিজে অনুভব করতে পারি। তাদের জন্য কিছু করতে পারলে মানসিকভাবে অনেক শান্তি পায়। তাই ছুটে আসি। 

মনু মারমা তার স্ত্রী জনি বলেন, বিলাইছড়ি আমার বাড়ী হলেও চাকুরী সুবাদে আমার রাঙ্গামাটিতে থাকা এবং লিটন দাদার সাথে পরিচয়। তিনি নিজেদের আতœীয় স্বজনদের না খাইয়ে ওনাদের বিয়ের খাবার এই শিশুদের খাওয়ালেন। এটি এক মহৎ ও উদার মনের পরিচয় বহন করে। তাই আমরাও লিটন দাদার সাথে যুক্ত হয়ে এই শিশুদের মাঝে মৌসুমি ফল বিতরণ করলাম।  বিতরণ করতে পেরে মানসিকভাবে শান্তি পাচ্ছি।

উল্লেখ্য, লিটন ও লাক্সমি শীলের বিয়ের অনুষ্ঠানে তাদের আত্মীয় ও অতিথিদের না খাইয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং শুক্রবার দুপুরে এই সরকারী শিশু পরিবারের শিশু-কিশোরী ও স্টাফ প্রায় ২শত মানুষকে পেট ভরে খাইয়ে ছিলেন।  

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×