কুষ্টিয়ায় পৌঁছেছে প্রখ্যাত শিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ
- বিনোদন ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:২২ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লোকসংগীতের প্রখ্যাত শিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ কুষ্টিয়ায় পৌঁছেছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা ২৩ মিনিটে তার মরদেহ কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্থানে পৌঁছায়। সেখানে জানাজা শেষে তাকে মা-বাবার কবরেই দাফন করা হবে।
মরদেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্স গোরস্তানের সামনে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। লালন সংগীতের কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে তার ভক্ত, পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়দের শোক আর কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। মরদেহ একনজর দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকার ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফরিদা পারভীন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুর খবরে শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। শ্রদ্ধা জানাতে শিল্পীর মরদেহ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হয়, সেখানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসা হয়।
কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্থানের খাদেম নুরু বলেন, “শিল্পী ফরিদা পারভীনের বাবা কুষ্টিয়া হাসপাতালে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে ছোটবেলায় তিনি কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠেন। আমরা একই এলাকার মানুষ ছিলাম। ফরিদা পারভীনের সাথে আমরা ছোটবেলায় খেলাধুলা করতাম। আমরা সমবয়সী হওয়ায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। বড় হওয়ার পরে তিনি কুষ্টিয়ার বাইরে থাকেন। এজন্য যোগাযোগ ছিল না। তবে দেখা হলে আমাদের কথা হতো।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বহু বছর ধরে কুষ্টিয়া গোরস্থানের খাদেম। কুষ্টিয়া পৌর গোরস্থানে একটি জায়গায় সর্বপ্রথম তার বাবাকে দাফন করা হয়। এরপর ওই কবরে ফরিদা পারভীনের মাকেও দাফন করা হয়। মা-বাবার সেই কবরে ফরিদা পারভীনের মরদেহ দাফন করা হবে। আমরা দুপুর ১টার দিকে কবর খননের কাজ শুরু করি। তার মরদেহ কুষ্টিয়ায় এলে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।”
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চলতি বছর তিনবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয়।
নজরুল সংগীত ও আধুনিক গান দিয়ে সংগীত জীবনের সূচনা করলেও ফরিদা পারভীন পরিচিতি পান লালন সংগীতে। লালনের গানের বাণী ও সুর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে তার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। বাংলাদেশের লালন সংগীতের ইতিহাসে তার নাম একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।