রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বে নজরুল ইসলাম

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম । এছাড়াও সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের চার জন শিক্ষক। বুধবার (২২ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের আগামী দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নুসরাত জাহান (ম্যানেজমেন্ট), মো: মাইনুল ইসলাম (বাংলা), ইয়াতসিংহ শুভ (সঙ্গীত), জান্নাতুল মাওয়া মুন (সমাজবিজ্ঞান)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ, একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আইনের সংবিধি ১৮(১) ধারা অনুযায়ী দুই বছরের জন্য শিক্ষকগণকে প্রক্টর(ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো। নবনিযুক্ত প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম জানান, “প্রক্টরিয়াল বডির কাজ অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে এটিকে আমরা পবিত্র দায়িত্ব মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে সহায়তায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রক্টরিয়াল বডি নিরলসভাবে কাজ করবে। আমাদের এই পবিত্র দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়ায় মাননীয় উপাচার্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করছি।”

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ইতালিতে বৃত্তির সুযোগ

ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ‘ইতালিতে আপনার প্রতিভা বিনিয়োগ করুন’ স্কলারশিপ প্রোগ্রামের ১০ম ধাপে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আসন্ন সেশন থেকে এই বৃত্তি পাওয়ার জন্য যোগ্য হবে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস জানায় এক বার্তায় এ তথ্য জানায়। দূতাবাস জানায়, নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা নয় মাসের বৃত্তি পাবে এবং তাদের অধ্যয়নের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক একটি ইতালীয় কোম্পানির সঙ্গে তিন মাসের ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করবে। তারা ইঞ্জিনিয়ারিং-অ্যাডভান্সড টেকনোলজিস, ইকোনমিক্স-ম্যানেজমেন্ট এবং আর্কিটেকচার-ডিজাইন এই তিনটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মাস্টার্স এবং স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়ন করতে পারবেন। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আরও বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নলিখিত ওয়েবসাইট পরিদর্শন করতে পারেন। https://investyourtalentapplication.esteri.it/SitoIYT/EN/invest-your-talent-in-italy দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রদর্শন করে। এটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষা একটি দুর্দান্ত সুযোগ হবে। এটি শিক্ষাগত সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করবে এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ জোরদার করবে।

এখনও ডিসেম্বরের বেতন পাননি এক লাখ ২৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মত ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত কয়েক মাসের ট্রায়ালের পর চলতি মাস থেকে শিক্ষকদের বেতন ইএফটিতে দেওয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়ে নানা জটিলতায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে, এখনও ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি এক লাখ ২৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেসরকারি স্কুলকলেজের ৩ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এরমধ্যে প্রথম ধাপে এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। আর দ্বিতীয় ধাপে বেতন পেয়েছেন ৬৭ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষক-কর্মচারী। সব মিলিয়ে ২ লাখ ৫৬ হাজার শিক্ষক কর্মচারী ইএফটিতে বেতন ভাতা পেয়েছেন। সে হিসেবে এখনও বেতন পায়নি ১ লাখ ২৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দ্রুত বেতনের দাবি জানিয়েছেন বেতন না পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা। সূত্র জানায়, যাচাইকালে অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর ডাবল এমপিও, ভুল তথ্য দিয়ে এমপিও নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এছাড়া অনেকের এমপিওভুক্তির তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্যের মিল নেই। অনেকের জন্ম তারিখ ঠিক নেই। বিষয়গুলো সমাধান করে তৃতীয় ধাপের বেতন ছাড় করা হবে। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ইএমআইএস সেলের এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় ধাপে যারা বেতন বঞ্চিত হয়েছেন তাদের তথ্য সংশোধনের জন্য কয়েক দিন সময় দেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যাদের তথ্যে নামের এক অক্ষর বানানসহ ভুল রয়েছে এবং সংশোধনযোগ্য শুধু সেগুলোই সংশোধন করে তৃতীয় ধাপের টাকা যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে অধিদপ্তর। তিনি আরও জানান, তৃতীয় ধাপেও যাদের ইএফটিতে বেতন ছাড় করা সম্ভব হবে না তাদের পরবর্তী একটা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে তথ্য সংশোধন করে পাঠাতে বলবে অধিদপ্তর। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে দুই লাখ ৫৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। বাকিদের বেতনের বিষয়ে তথ্য সংশোধনের কাজ চলছে। এ প্রক্রিয়া শেষে যারা প্রাপ্য তাদের বেতন দেবে সরকার।’

ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট বিক্রি

ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নামক একটি অননুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ওয়েবসাইটে (https://eaub.info/) উল্লিখিত ভুয়া তথ্য বিশ্বাস করে কোনো ধরনের প্রতারণার শিকার না হতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি। জানা গেছে, দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ শাখার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইস্যু করা সনদের সঠিকতা যাচাইয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পাওয়া না যাওয়ায় ওয়েবসাইটের (https://eaub.info/) মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান রাজধানীর ইস্ট মেরুল বাড্ডা হওয়ায় এর কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শনের জন্য কমিশন দুই সদস্যের একটি পরিদর্শন টিম গঠন করে। গত ২০ জানুয়ারি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে টিমের সদস্যরা ইউজিসি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। রাজধানীর পূর্ব মেরুল বাড্ডায় ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কোনো ক্যাম্পাসের অস্তিত্ব নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে (https://eaub.info/) বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশ সরকার, ইউজিসি, ফার্মেসি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদনপ্রাপ্ত বলে উল্লেখ করেছে। বাস্তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোরর কোনো ধরনের অনুমোদন না নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে ইউজিসি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম টাইপ করলে স্ক্রলবারে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর নামসহ লোগো প্রদর্শিত হয়। কিন্তু ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নামেই পেজটি ওপেন হয়। আরো আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির নামের ওপর ক্লিক করলে ইবাইস ইউনিভার্সিটি (https://ibais.ac/) নামের পেইজটি ওপেন হয়। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে পরিদর্শন টিম তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সনদ বাণিজ্যের জন্যই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অননুমোদিত এ প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পরিদর্শন টিম তাদের প্রতিবেদনে প্রতারণা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (https://eaub.info/) ডোমেইনটি অতি দ্রুত বন্ধের বিষয়ে বিটিসিএল-এ পত্র প্রেরণের সুপারিশ করেছে। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি বেড়ে দ্বিগুণ, ভর্তিচ্ছুদের ক্ষোভ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ৩ মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা থেকে অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, এবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে প্রাথমিক আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের ৭০০ টাকা ফি দিতে হবে। বিগত বছর এ ফি ছিল ৩৫০ টাকা। সেই হিসাবে এবার ফি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘বিগত কয়েক বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধু এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ’র ওপর ভিত্তি করে ভর্তি করানো হয়েছে। যে কারণে ভর্তিতে তেমন ব্যয় ছিল না। এবার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাই, কর্তৃপক্ষের খরচ বেড়েছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যশোর এমএম কলেজে এবার ভর্তি হতে চান আনজুমান আরা। তিনি ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি ফি ৭০০ টাকা! গত বার যা ছিল, তার চেয়ে আরও বেড়েছে। অথচ আমরা শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছি বৈষম্য দূর করার জন্য। এ ফি কমানো উচিত।’ আব্দুর সালাম নামে আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘ভর্তি ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মানি না। পারলে ভর্তি ফি কমান। নতুন বাংলাদেশে বাড়তি ভর্তি ফি দিয়ে আমরা আবেদন করবো না। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামব।’ এ নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘এবার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর তো ভর্তি পরীক্ষা ছিল না। স্বাভাবিকভাবে খরচ বাড়বে। তারপরও হিসাব কষে কর্তৃপক্ষ যতটা সম্ভব কম ফি নির্ধারণ করেছে।’

শিক্ষকদের গবেষণা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখছে: চুয়েটের ভিসি

চুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেছেন, ‘শিক্ষকদের গবেষণা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা একটি দেশকে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। শিক্ষকদের গবেষণার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত গবেষণা তহবিলের অভাব, গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার অভাব, শিক্ষকদের উপর প্রশাসনিক কাজের চাপ, গবেষণায় প্রকাশনার অভাব ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। আর এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’ সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রোজেক্ট কমপ্লিশন একনলেজমেন্ট ২০২৪, বেস্ট রিসার্চ পাব্লিকেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ এবং গবেষণা ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রিসার্চ প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড (২০২৪-২০২৫)’ প্রোগ্রামের তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েটের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, তড়িৎ ও কম্পিউটার প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, মেকানিক্যাল ও ম্যানুফ্যাকচারিং প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। গবেষণা ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিকের সভাপতিত্বে প্রোগ্রাম সঞ্চালনা করেন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক কাজী কামরুন নাহার অনন্যা। গবেষণা ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে মোট ৩৯টি প্রজেক্ট দেওয়া হয় এবং এরমধ্যে ১৯টি প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়েছে। সবশেষে ৪টি বেস্ট রিসার্চ পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া আরও বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষকরা তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করেন। ফলে, তারা শ্রেণীকক্ষে আরও উন্নতভাবে শিক্ষাদান করতে পারেন। এতে করে পড়াশোনার মতো কঠিন ব্যাপারটা শিক্ষার্থীদের কাছে খুব আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা লেখাপাড়াটা আরো আগ্রহের সাথে করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করে। ফলে, তা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে দক্ষ করে তুলতে পারে। এই গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের স্থানীয় সমস্যা, দেশের সমস্যা ও বিশ্বের সমস্যাগুলোকে সমাধানের পথকে উন্নত থেকে আরো উন্নতর করে গড়ে তুলছে। গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান নীতিনির্ধারণে সহায়তা করে। শিক্ষকদের গবেষণা সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সঠিক নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করতে পারে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ যে তিন দাবি জানালেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা

ঢাকায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে ‘বিক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ওপর স্টুডেন্টস ফর সভেরিনটির হামলা ও দোয়েল চত্বরে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশি হামলায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। রোবাবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিক্ষার্থী ও জনতার প্রতিনিধিরা ডিএমপির কমিশনারের কার্যালয়ে ঢোকেন। তারা বর্বর হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। ছাত্র-জনতার তিন দাবির মধ্যে রয়েছে পাঠ্যপুস্তক থেকে সরানো আদিবাসী গ্রাফিতি পুনরায় বহাল করতে হবে; ১৫ জানুয়ারি এনসিটিবির সামনে হামলায় স্টুডেন্টস ফর সভেরিনিটির সদস্যদের গ্রেফতার ও ১৬ জানুয়ারি দোয়েল চত্বরে পুলিশের হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ১৫ ও ১৬ জানুয়ারির ঘটনার ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে।এদিকে, এনসিটিবির সামনে পাহাড়ি ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় আটক দুইজনসহ অজ্ঞাতনামা প্রায় ৩০০ জনকে আসামি করে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) মামলা হয়েছে। মতিঝিল থানায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগরের সভাপতি জগদীশ চাকমা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।এর আগে গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি বাতিলের দাবি এবং এর বিরোধিতা করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নারীসহ কয়েকজন আহত হন এবং পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় সংঘর্ষ

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে, তা জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে একজন ননী কুমার সাহা ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাকি চারজন আহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ননী কুমার সাহা সাংবাদিকেদের বলেন, ‘আমরা সায়েন্সল্যাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের কয়েকজনের ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। আমি মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। পরে আমার দুই বন্ধু নাহিন ও সাইদুর আমাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। আরও কয়েকজন আহত হয়েছে শুনেছি। তারা ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।’ ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, ‘ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় সায়েন্সল্যাব থেকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। পরে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ সংঘর্ষের বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস বলেন, ‘কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে, সেটা বলতে পারছি না। তবে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে এসেছি।’

সিজিপিএ কত তার চেয়েও দেশের জন্য কি করতে পারবে সেটা বড় কথা

তোমাদের মধ্যে যারা আজকে বৃত্তি পেয়েছো, ভালো রেজাল্ট করেছো সে জন্য অতিরিক্ত খুশি কিংবা অপেক্ষাকৃত কম সিজিপিএর জন্য ব্যতীত হওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ, তোমার কাছে কি ডিগ্রি বা সিজিপিএ আছে, তার চেয়েও দেশের জন্য তুমি কি করতে পারবে সেটা বড় কথা।’ রোববার (১৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামে প্রফেসর আসিফুল হক খান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম কলেজের অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, `বর্তমান প্রজন্মেকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে যে শিক্ষা প্রয়োজন, তা শুধু শ্রেণী কক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।’ তিনি শিক্ষার্থীদের জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, তাদের কাছে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে বলেন, ‘তাদের কাছে জানতে চেষ্টা কর, কেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। দেশপ্রেম কি তাদের কাছে প্রকৃতভাবে শিখতে পারবে।’ চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান, সাবেক কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল ও সাবেক অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন অনুষ্ঠান বিশেষ অতিথি ছিলেন। অনুষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের ৩৪ শিক্ষার্থীকে প্রফেসর আসিফুল হক খান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বৃত্তি দেয়া হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার কোন ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয়: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

অন্তর্বর্তী সরকার কোন ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, ‘জুলাইয়ের শহীদ ছাত্র-জনতা ও আহতদের কাছেই শুধু আমাদের জবাবদিহিতা। বিগত সরকার সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। আমরা বর্তমানে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চেষ্টা করছি। আমাদের সবাইকে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।’ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বোট ক্লাবে অনুষ্ঠিত চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ২ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেয়া হয়। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪৫২ জন ব্যবসায়, প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে পাস করা স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। বাকি ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া, অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্ব-স্ব প্রোগ্রামে অসামান্য কৃত্বিত্বে ফলস্বরূপ ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিন নির্বাচনে মানুষ তাদের ভোটাধিকার হারিয়েছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে। আমাদের সরকার গঠন হয়েছে পাঁচ মাসের কিছু সময় আগে। আমাদের সরকার শতভাগ জবাবদিহিতার মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করছে। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। আমরা চেষ্টা করছি সব ধরনের বৈষম্য দূর করার জন্য।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। মনে রাখতে হবে, সব শিক্ষা ক্লাস রুমের ভেতর থেকে পাওয়া যায় না। কিছু শিক্ষা পরিবেশ প্রকৃতি থেকে অর্জন করতে হয়। আমি মনে করি, আপনাদের প্রতিষ্ঠান পড়ালেখার পাশাপাশি সততা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছে। যা আপনারা কর্মজীবনে কাজে লাগাবেন। কর্মজীবনে আপনাদের নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অন্যের জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’ সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সুং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের রয়েছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য লিডার হিসেবে গড়ে তুলবেন। এটা আপনার বিশ্ব। আপনারা এ বিশ্বকে শাসন করার যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোরিয়ায় আমি বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামবাসীর কারণেই আমাদের সক্ষমতা হয়েছে। আমি নিজেকে চট্টগ্রামের মানুষ ভেবে গর্ববোধ করি। কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে এ অ্যাপারেলস সেক্টর।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ক্রমাগত সামাজিক বৈষম্য ও বাস্তুচ্যুতি আমাদের ব্যথিত করছে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে তোমরা আলো ছড়াবে। দক্ষ লিডারশিপের মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্ব দিবে। পুরো বিশ্ব তোমাদের সামনে। নেতৃত্ব দিতে হবে তোমাদের। জুলাই আদর্শকে ধারণ করে দেশের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।’ সিআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব।

ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ব্রিটিশ হাইকমিশনের আয়োজনে অ্যালামনাই ইউকে গালা নাইট অনুষ্ঠিত

ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ব্রিটিশ হাইকমিশনের উদ্যোগে অ্যালামনাই ইউকে গালা নাইট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ব্রিটিশ কাউন্সিলের ঢাকা অফিসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ১৭০ জনেরও বেশি যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাই ও বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের সাফল্য ও বাংলাদেশ-ইউকে অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের (বুকান) গ্লোবাল অ্যালামনাই ইউকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিবর্তনকে উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানটি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের প্রতিফলন, যা অর্জিত হয়েছে শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও বৈশ্বিক উন্নয়নে পারস্পরিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার। এই আয়োজনে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত ব্যবসায়, উদ্ভাবন, সংস্কৃতি ও টেকসই উন্নয়নের মত বিভিন্ন খাতে যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের অবদান তুলে ধরা হয়। আয়োজনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের মিনিস্টার-কাউন্সিলর (পলিটিক্যাল অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান) গ্যাভিন টেঞ্চ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত অ্যালামনাই প্রফেসর নিয়াজ আহমেদ খান। এ সময় ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের যুক্ত হওয়ার আজকের এই বড় পরিসরের অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের অসামান্য অবদানকে উদযাপন করতে আজ আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি। যোগাযোগ, প্রবৃদ্ধি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে গঠনমূলক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদী আমরা।’ আয়োজনে অ্যালামনাইদের অনুপ্রেরণার গল্প তুলে ধরা হয়, বিভিন্ন খাতে তাদের অসামান্য অবদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ সময় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঙ্গীতা আহমেদ। এআই-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ সবার সামনে তুলে ধরেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) অধ্যাপক খন্দকার এ মামুন। এছাড়াও, নিজের পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ট্রানজিট’ দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন পরিচালক আরিক আনাম খান। আয়োজনে এসব উপস্থাপনা যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের বিস্তৃত সাফল্য ও সমাজে তাদের ইতিবাচক প্রভাবকে তুলে ধরে। অ্যালামনাই ইউকে গালা নাইটের এই আয়োজনে, গ্লোবাল অ্যালামনাই ইউকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের অংশ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করে বুকান (বাংলাদেশ-ইউকে অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক)। ২০২২ সালের নভেম্বরে চালুর পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি ৩৪টি দেশের ইউকে অ্যালামনাইদের যুক্ত করেছে এবং পেশাগত উন্নয়ন, নেটওয়ার্কিং ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধি করেছে। সক্রিয় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তৈরি করা, অ্যালামনাইদের নতুন দক্ষতায় সক্ষম করে তোলা এবং বৈশ্বিক বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে জোরদার করা এই প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য। ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ব্রিটিশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের সবসময় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অ্যালামনাইদের সংযুক্ত হতে, নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনার উদ্যোগে সহযোগিতা করতে অ্যালামনাই ইউকে প্ল্যাটফর্ম তাদের কার্যক্রম চালু রাখবে। এরপর, দুই দেশের মধ্যে জোরালো সাংস্কৃতিক বন্ধনের অংশ হিসেবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে করেন মাশা ইসলাম।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিল: পুলিশ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ঢাকার মতিঝিলে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়। এতে পুলিশের একজন সদস্য আহত হয়েছেন। জানা যায়, আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালনের সময় স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজু ভাস্কর্য থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ব্যানারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন। দোয়েল চত্বর শিশু একাডেমির সামনে মুখোমুখি হয় পুলিশ ও আদিবাসী ব্যানারের ছাত্ররা।

চবিতে চলছে প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন ২০২৫

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার উদ্যোগে নবম বারের মত ১৫-১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন ২০২৫। প্রতি বছর বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা আসেন বিতর্ক, কুটনীতি ও আলোচনায় দেশের অন্যতম এ প্রতীকী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) দেশের প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে এ সম্মেলনে। এবারের সম্মেলনে আরও অংশগ্রহণ করছেন নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, আইভরি কোস্ট, উগান্ডা, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরাও। সম্মেলনটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অগ্রগতির জন্য যুব নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী উদ্ভাবনের প্রসার’। এ প্রতিপাদ্য বিষয়টিকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা ৮টি কমিটিতে বিভক্ত হয়ে জাতিসংঘের আলোকে কূটনৈতিক আলেচনায় অংশ নিবে। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ-১, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থা, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা, অন্তর্বর্তী বাংলাদেশ সরকার। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। উপস্থিত ছিলেন চবির লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. আমীর মুহাম্মদ নসরুল্লাহ ও একই বিভাগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদ, চবির ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ও দর্শন বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকি জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি ব্যতিক্রমী সুযোগ। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি সমগ্র বাংলাদেশ ও বিদেশের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনে যুবসমাজের সম্পৃক্ততা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে কথা বলার সুযোগ করে দেয়।’ আমীর মুহাম্মদ নসরুল্লাহ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। আমাদের উদ্ভাবনী উপায়গুলি নিয়ে ভাবতে হবে কিভাবে তরুণদের অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত করা যায় এবং কীভাবে তাদেরকে বিশ্বব্যাপী অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়।’ অনুষ্ঠান বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেসিডেন্সি এডুকেশন চট্টগ্রামের ভাইস প্রিন্সিপাল মো. জসিম উদ্দিন। তিনি প্রতীকী জাতিসংঘের গুরুত্ব আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রতীকি জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এমন অসংখ্য দক্ষতা অর্জন করতে পারে, যা তাদের মানসিকতাকে বিকশিত করে এবং তা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্মগুলিতে কীভাবে জড়িত হতে হয়, তা শিখতে পারে। এই একক ইভেন্টে একজন শিক্ষার্থী শুধু বৈশ্বিক সমস্যা এবং সেগুলি কেবল সমাধান করার উপায়ই নয় বরং পেশাদারভাবে উপস্থাপন করার উপায়গুলি সম্পর্কেও শেখে।’ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বৈশ্বিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে যুব সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবনী ধারণা দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করা অপরিহার্য। চবি প্রতীকী জাতিসংঘের এ অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য সমাধান অন্বেষণ এবং উন্নত বিশ্বে অবদান রাখার জন্য একটি অর্থবহ স্থান তৈরি করে।’ চবি প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার মহাসচিব ইশফাকুল কবির আসিফ বলেন, ‘আমি এখানে আগত প্রতিটি প্রতিনিধিকে এ সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং নিজেদেরকে বিকশিত করার জন্য অনুরোধ করছি। এ সম্মেলনে আগামী ৪ দিন আপনারা বৈশ্বিক বিষয়, কূটনীতি ও বিতর্ক সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি আপনাদের সকলকে এই সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য স্বাগত জানাই।’ প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকে চবি প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন শিক্ষার্থীদের কূটনীতিক চিন্তার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সম্মেলনটি তরুণদের বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার পাশাপাশি কূটনীতিক আলোচনায় আগ্রহী করে তোলে।

কুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, জানবেন যেভাবে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে এ ফল প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (https://adm.kuet.ac.bd/notice) প্রবেশ করে এ ফলাফল জানা যাবে। এর আগে, গত ১১ জানুয়ারি কুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রকৌশল গুচ্ছের অধীনে পরীক্ষা নিলেও এবার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে রেকর্ড পরিমাণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। কুয়েটসহ ১১টি কেন্দ্রে ৪৪৭টি কক্ষে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ১ হাজার ৬৫ আসনের বিপরীতে লড়েছেন ২৪ হাজার ৫২৭ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রতিটি আসনের বিপরীতে লড়েছেন ২৩ জন।

আদিবাসী শব্দ নিয়ে বিরোধ: পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

ঢাকার মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। জানা গেছে, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’। গত রোববার (১২ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। একই সময়ে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও কর্মসূচি ঘোষণা দেয়। এদিকে, বুধবার দুপুর ১টার দিকে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একজন সামনে এগিয়ে এলে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির ব্যানারে থাকা আন্দোলনকারীরাও এগিয়ে যান। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এ সময় সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং পরে তাদের দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে চলে যেতে দেখা যায়। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র সদস্যদের এনসিটিবি ভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ঘটনার পর স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি দাবি করেছে, তাদের ওপর হামলা হয়েছে। অন্যদিকে, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা দাবি করেছে, তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার সংগঠক অলিক মৃ বলেন, ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে ১১ জন আহত হয়েছেন।’ অন্যদিকে, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘আদিবাসী শিক্ষার্থীদের হামলায় স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির ১৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা এর বিচার চাই।’ এ নিয়ে মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাইমেনুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে আদিবাসী বিক্ষোভকারীরা চলে গেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’

টানা ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় সংবাদ সম্মেলনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব। এর আগে সোমবার বিকাল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিকশায় চড়ে পদযাত্রা অংশ নেন। অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। সংবাদ সম্মেলনে একেএম রাকিব বলেন, ‘আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) যে মিটিং হবে, সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি সই হবে- এ মর্মে লিখিত অঙ্গিকার পেয়েছি। বাণী ভবন ও ডা. হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিল বেজড ভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। এ ছাড়া, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। ফলে, আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’ ‘যেহেতু তারা ৩টি দাবির দুটি মেনে নিয়েছেন এবং একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন থাকবে।’ এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান, অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি, অনশন অনশন চলছে চলবে, কবে দিবা ক্যাম্পাস, প্রশাসন কী করে, আমার ভাই অনশনেসহ নানা স্লোগান দেন। এর আগে দুপুর দুইটায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে আগামী বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়। এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা ৩টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হল- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; যত দিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে। সোমবার সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাটডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মত অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে (সাবেক বিবিএ ভবন), রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাটডাউন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এ নিয়ে জাবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা জীবনের বাজি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আশা করছি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত হবে।’ এ নিয়ে জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেক এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা বিবিধের সেক্টরে আমাদের দাবির অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।’ প্রসঙ্গত, এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেননি শিক্ষার্থীরা।

জাকসু নির্বাচনের তফসিল ১ ফেব্রুয়ারি, প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ চাইলেন উপাচার্য

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরামর্শ চেয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করে এ পরামর্শ চান উপাচার্য। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে (চিফ অ্যাডভাইজর জিওবি) এই ব্যাপারে পোস্ট করা হয়। পোস্টে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের জীবনযাপন বিষয়ে কী কী অগ্রগতি ঘটেছে, সেসব বিবরণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন কামরুল আহসান।’ কামরুল আহসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে। ঘোষণা অনুসারে, নির্বাচনের তফসিল আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে গেল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পরামর্শ চেয়েছেন জাবির উপাচার্য। কামরুল আহসান বলেন, ‘১৯৭১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র নয় বার জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রায় ৩৩ বছর ধরে প্লাটফর্মটি নিষ্ক্রিয় রয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’ এ ছাড়া, তিনি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ও গবেষণার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং প্রথম বর্ষের ভর্তি ফর্ম ফি কমানো হয়েছে বলেও কামরুল আহসান প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন। জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষাগত অগ্রগতিতে সন্তোষ জানান তিনি। জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যদি চায়, তাহলে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।’ এ সময় কামরুল আহসান জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাবির ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলা সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। তিনি বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩৭ লাখ টাকা দিয়েছে। সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন জাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রব।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচিবালয় ঘেরাও

সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। অনশন করে অসুস্থ শিক্ষার্থীরাও হাতে স্যালাইন নিয়ে রিকশায় করে সচিবালয় আসেন। এর আগে বিকেল চারটায় সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তরসহ তিন দাবি পূরণে শিক্ষার্থীদের দেওয়া এক ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারও আগে সোমবার সকালে অনশনরত শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন- দুপুর দেড়টার মধ্যে মন্ত্রণালয় ও সেনা কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে না বসলে সচিবালয় ঘেরাও করবেন তারা। দুপুর ২টায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও দাবি পূরণের রূপরেখা আসবে।’ তবে এ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের চিঠি সংশোধন করার প্রস্তাব দেন। আলটিমেটামে বলা হয়, ‘দাবি মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার লিখিতভাবে না দিলে তারা অনশন ভাঙবেন না এবং বিকাল চারটায় সচিবালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা করবেন। তা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সচিবালয় অভিমুখে রওনা দেন।’ রোববার (১২ জানুয়ারি) তিন দফা আন্দোলনে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করা; শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা; অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা দেওয়া। রোববার সারাদিন ও সারারাত অনশন করে ১৫-২০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর সোমবার সকাল থেকে জবির সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

সচিবালয়ের সামনে অনশনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। প্রায় ৩২ ঘণ্টা অনশনে থাকা অসুস্থ শিক্ষার্থীরাও সেখানে এসেছেন। দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা এবার সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে সচিবালয়ের পথে রওয়ানা হন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে তারা সচিবালয়ের সামনে পৌঁছান। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে স্লোগান দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করবেন। সেখানে আমরণ অনশনও শুরু করেছেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’,‘ লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি’, ‘অনশন চলছে চলবে’, ‘কবে দিবা ক্যাম্পাস’, ‘প্রশাসন কী করে’, ‘আমার ভাই অনশনে’সহ নানা স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমরা এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম অঙ্গীকারের লিখিত চিঠি নিয়ে আসতে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি আসেনি। ফলে, পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী আমরা সচিবালয়মুখী হয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।’ অনশনরত শিক্ষার্থী রায়হান রাব্বি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি না মেনে রাজপথ ছাড়ছি না। আমাদের দাবি মেনে নেবে আগামী বুধবারের (১৪ জানুয়ারি) মিটিংয়ে এ মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দিতে হবে। পরে আমরা অনশন ভাঙব। সই হওয়া আগ পর্যন্ত জবির সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’ এর আগে সোমবার বিকেল ৩টায় ক্যাম্পাসে ব্রিফ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, বিকেল ৪টার মধ্যে তাদের তিন দাবি মেনে না নিলে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করবেন। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের তিন দাবি পূরণে করণীয় ঠিক করতে সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ সভা হবে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আহমেদ শিবলীর সই করা নোটিশে এ সভা আহ্বান করা হয়। জানা যায়, রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জবির ক্যাম্পাসে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে ১৫ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের জবি মেডিকেল সেন্টারসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছাত্ররা অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ায় কর্মসূচি চালিয়ে নিতে রাত ২টার দিকে গণঅনশনে বসেন অর্ধশতাধিক ছাত্রী। তারা সকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের তিন দাবি: সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সই করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বৈঠকের মাধ্যমে তা শেষ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালি সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোন প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে এবং যত দিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয়, তত দিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।’ এ বিষয়ে জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। বৈঠকে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।’

সচিবালয় অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী

তিন দাবি নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর যাত্রা করেছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার পর তারা ক্যাম্পাস থেকে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। বিকাল চারটা ২৫ মিনিটে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তারা পুরান ঢাকার তাতীবাজার পদক্ষিণ করছিলেন।এর আগে সোমবার বিকাল তিনটায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়া হবে- এ মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গিকার না দিলে অনশন ভাঙবে না বলে জানান তারা। বিকাল ৪টার মধ্যে এ অঙ্গিকার মন্ত্রণালয় থেকে আসতে হবে। অন্যত্থায় সচিবালয়মুখী পদযাত্রা শুরু করবেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও জাস্টিস ফর জুলাইয়ের আহ্বায়ক সজিবুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি না আসা পর্যন্ত আমাদের অনশন চলতে থাকবে। এ ছাড়া, আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মিটিংয়ে আমাদের তিনটি দাবি না মানা পর্যন্ত জবির সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাট ডাউন থাকবে।’ উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব বলেন, ‘আগামী বুধবার বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রকৌশলী ইউনিট, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ইউজিসি ও জবি প্রশাসন বসার জন্য যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে আমাদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে অঙ্গিকার দিয়ে লিখিত দিতে হবে।’ শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি হল- দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি সই করা; সব প্রকার প্রতিবন্ধকতা ব্যতিরেকে কার্য সম্পাদনের দায় নিয়ে বানী ভবন ও হাবিবুর রহমান ভীনের স্টিল বেইজড ভবনে নির্মাণ অনুমোদন ও করা বাজেট পাস করতে হবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছর আসার পূর্বেই জরুরি ভিত্তিতে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকেই প্রদানে ঘোষণা দিতে হবে।

পাঠদান ও গবেষণা হচ্ছে শিক্ষকদের মূল কাজ: চবির উপাচার্য

‘পাঠদান ও গবেষণা হচ্ছে শিক্ষকদের মূল কাজ। নতুন শিক্ষকদের একাডেমিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আইকিউএসির উদ্যোগে ‘এইচইএটি এটিপি সাব-প্রজেক্ট প্রপোজাল রাইটিং’ শীর্ষক কর্মশালায় চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এ কথা বলেন। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে চবির ব্যবসায় প্রশাসন লেকচার গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। চবি আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. শাহাদাত হোছাইনের পরিচালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন চবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বিশেষজ্ঞ বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) এটিএফ সাব-প্রকল্পের ম্যানেজমেন্ট বিশেজ্ঞ প্রফেসর ড. মো. মোজাহার আলী। কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়াহ্ইয়া আখতার আরো বলেন, ‘আজকের এ কর্মশালা আমাদের শিক্ষকদের জন্য এক বিরল সুযোগ এনে দিয়েছে, বিশেষ করে নতুন শিক্ষকদের জন্য। তাদের পাঠদান পদ্ধতি মানসম্মত পযার্য়ে নিয়ে যেতে এ প্রজেক্ট চমৎকার একটা সুযোগ করে দিয়েছে।’ উপাচার্য নতুন শিক্ষকদেরকে সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হয়ে এ প্রজেক্টের আওতায় কাজ করে নিজেদের সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি একাডেমিক সব কার্যক্রমে পারদর্শিতা অর্জনের আহ্বান জানান। তিনি চবির জীব বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, মেরিন সাইন্সেস এন্ড ফিশারিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ন্যায় অন্যান্য অনুষদকেও একাডেমিক কার্যক্রমে এগিয়ে এসে দেশ-জাতির কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। ইয়াহ্ইয়া আখতার কর্মশালায় উপস্থাপিত আলোচনা-পযার্লোচনার মাধ্যমে শিক্ষকরা নিজেদের একাডেমিক প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে সক্ষম হবেন মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষার বিষয়গুলো আমাদেরকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।’ একইসাথে উচ্চ শিক্ষাকে একটা সুনির্দিষ্ট মানে নিয়ে যেতে শিক্ষক-গবেষকদের নিয়মিত গবেষণার প্রতি জোর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এ প্রজেক্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এক্সিলেন্সকে তরান্বিত করবে।’ শিক্ষকরা বিভাগের সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরে নিজেদের প্রস্তাবনা উপস্থাপনের মাধ্যমে বিভাগকে সমৃদ্ধ করার যে সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি পরামর্শ দেন। সাইফুল ইসলাম কর্মশালায় বলেন, ‘এর মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কিভাবে প্রজেক্ট প্রস্তাবনা তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।’ কর্মশালায় চবির বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষকবৃন্দ অংশ নেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা, দুই ভবন শাট ডাউন

ঢাকার চিত্তরঞ্জন এভিনিউর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে চলমান গণঅনশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা এবং শহিদ সাজিদ ভবন ও রফিক ভবন শাট ডাউন করে অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ছয়টা থেকে সাজিদ ভবন ও সাড়ে ৮টা থেকে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে ৯টার দিকে তালা দেয়া হয় রফিক ভবন। এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আমরণ গণঅনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। রাতে অন্তত ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্যালাইন দিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তি করে রাখা হয়। পরে জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে চলমান অনশনে একাত্মতা জানাতে গভীর রাতে হল থেকে বেরিয়ে প্রায় অর্ধশত ছাত্রী জবির শহিদ মিনারের সামনে এসে বসে পড়েন। এ সময় ইংরেজি বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মহাশ্বেতা রায় মিতু বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেয়ার পক্ষে। আমাদের ভাইদের এই দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে এসেছি।’ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৪ ব্যাচের ছাত্রী রিতা বলেন, ‘যখন একেক করে আমার ভাইয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তখন আমরা হল থেকে বের হয়ে আমাদের ভাইদের দেখতে এসেছি।’ জীবন গেলেও দাবি আদায় করে ছাড়বেন বলে হুঁশিয়ার করেছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাতে হাসপাতালের বেড থেকে শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ‘সফল হলে সবাই একসাথে সফল হব। মারা গেলে সবাই এক সাথে মারা যাব, তবুও অধিকার আদায় করেই ছাড়ব।’ অন্যদিকে, রোববার রাত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ।

চুয়েটে শিক্ষক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও অবসর জনিত বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্বমিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বার্ষিক সাধারণ সভা ও তিনজন শিক্ষকের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষেে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জিএম সাদিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আরাফাত রহমান এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন পেশ করেন করেন কোষাধ্যক্ষ জনাব মনোয়ার ওয়াদুদ হৃদয়। সঞ্চালনা করেন সমিতির প্রচার ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আসিফুর রহমান। অনুষ্ঠানে চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওমর ইমাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলামকে চুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন পুড়ালো দুর্বৃত্তরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সৈয়দ আমীর আলী হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল ও মতিহার হলে কোরআনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে প্রথমে জিয়া হলে, পরে মতিহার ও আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চে কোরআন পোড়ানো অবস্থায় পাওয়া দেখে প্রশাসনকে জানায় হলের শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের মসজিদে ও সৈয়দ আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চে কোরআন শরিফের প্রথম দুই-তিন পারা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফিরোজ হাসান বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই উস্কানিমূলক একটি ঘটনা। কোন একটা দল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও আমাদের মধ্যে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির উদ্দেশ্যেই এটা করেছে। আমরা চাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক ও দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’ এ ব্যাপারে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুনর রশীদ বলেন, ‘রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হল সুপার আমাকে ঘটনা জানায়। কোন ধর্মের এমন অবমাননা করুক এটা আমরা সহ্য করব না। হল প্রশাসন একটা তদন্ত কমিটি গঠন করবে। এছাড়া, আমি উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি, তিনি দুপুর ১২টায় মিটিং কল করেছেন। কোন একটা মহল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির পাঁয়তারা করছে। যারা এ ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে।’ ঘটনার বিষয়ে মতিহার হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। ভারপ্রাপ্ত যে আছে, তার সাথে কথা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করা হচ্ছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’ তবে শহীদ জিয়াউর রহমান হল প্রাধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল কেটে দেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব জানান, এটা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা এটায় কাজ করছে। আমি শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান করব। এ ধরনের ঘৃণিত কাজ যারা করেছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।’