সচিবালয়ের সামনে অনশনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৫৬ পিএম, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। প্রায় ৩২ ঘণ্টা অনশনে থাকা অসুস্থ শিক্ষার্থীরাও সেখানে এসেছেন। দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা এবার সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে সচিবালয়ের পথে রওয়ানা হন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে তারা সচিবালয়ের সামনে পৌঁছান। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করবেন। সেখানে আমরণ অনশনও শুরু করেছেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’,‘ লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি’, ‘অনশন চলছে চলবে’, ‘কবে দিবা ক্যাম্পাস’, ‘প্রশাসন কী করে’, ‘আমার ভাই অনশনে’সহ নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমরা এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম অঙ্গীকারের লিখিত চিঠি নিয়ে আসতে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি আসেনি। ফলে, পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী আমরা সচিবালয়মুখী হয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।’
অনশনরত শিক্ষার্থী রায়হান রাব্বি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি না মেনে রাজপথ ছাড়ছি না। আমাদের দাবি মেনে নেবে আগামী বুধবারের (১৪ জানুয়ারি) মিটিংয়ে এ মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দিতে হবে। পরে আমরা অনশন ভাঙব। সই হওয়া আগ পর্যন্ত জবির সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
এর আগে সোমবার বিকেল ৩টায় ক্যাম্পাসে ব্রিফ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, বিকেল ৪টার মধ্যে তাদের তিন দাবি মেনে না নিলে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করবেন।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের তিন দাবি পূরণে করণীয় ঠিক করতে সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ সভা হবে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আহমেদ শিবলীর সই করা নোটিশে এ সভা আহ্বান করা হয়।
জানা যায়, রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জবির ক্যাম্পাসে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে ১৫ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের জবি মেডিকেল সেন্টারসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ছাত্ররা অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ায় কর্মসূচি চালিয়ে নিতে রাত ২টার দিকে গণঅনশনে বসেন অর্ধশতাধিক ছাত্রী। তারা সকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দাবি: সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সই করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বৈঠকের মাধ্যমে তা শেষ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালি সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোন প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে এবং যত দিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয়, তত দিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।’
এ বিষয়ে জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। বৈঠকে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।’