বাঁশ দিয়ে তিতুমীর কলেজের সামনের রাস্তা আটকে দিলেন শিক্ষার্থীরা

ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। এবার বাঁশ দিয়ে তিতুমীর কলেজের সামনের দুই পাশের রাস্তা আটকে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাস্তা আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করার ফলে মহাখালী থেকে গুলশান এবং গুলশান থেকে মহাখালী পর্যন্ত রাস্তার যান চলাচল সম্পন্ন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবির পক্ষে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে না না স্লোগান দিচ্ছেন। এদিকে, হঠাৎ করে রাস্তা বন্ধ করার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তার যাত্রীদের কথাবার্তা হয়। যাত্রীরা রাস্তা খুলে দিতে বললেও শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না।’ রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা পর্যন্ত আমরণ অনশনে রয়েছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এখনো চারজন অসুস্থ হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘যে কোনো মূল্যে ৭ দফা কর্মসূচি মেনে নেওয়ার ঘোষণা আসতে হবে। যতক্ষণ এই ঘোষণা না আসবে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’ শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে; তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে; শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে; ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় 'আইন' এবং 'জার্নালিজম' বিষয় সংযোজন করতে হবে; একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে; শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সবশেষ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এর আগের দিন বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। এ সময় তারা ৭ দফা দাবি জানান।

চলছেই তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অনশন, অবরোধ বিকালে

ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চতুর্থদিনে গড়িয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার মধ্যে এ বিষয়ে ঘোষণা না এলে তারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করবেন। আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আজকে বিকাল ৪টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা না এলে আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব।’ কলেজের প্রধান ফটকে অনশনরত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বেলা ১১টায় বলেন, ‘আজকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমরা সময় বেঁধে দিয়েছি, যদি আজকে বিকাল ৪টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না করে তখন শিক্ষার্থীরা কিছু করলে সেটা তাদের বিবেচনা।’ আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’র এই সদস্য বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি শিথিল থাকবে। ‘এর মধ্যে আমাদের অনশন কর্মসূচি যেটা চলছে, সেটা চলমান থাকবে।’ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবি নিয়ে অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ‘তিতুমীর ঐক্য’র সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা। এছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের। এর আগে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ‘তিতুমীর ঐক্য’র তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে ‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পর দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তারা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শনিবার বিকাল থেকে ঢাকা উত্তরে অবরোধের ডাক তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পেলে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ডাক দিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বারাসাত বেরিকেড টু ঢাকা নর্থ’, যা বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে কয়েক ঘণ্টা শিথিল রাখা হবে। শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার সময় কলেজের সামনের মহাখালী-গুলশান সড়কে তাদের অবরোধ চলছিল। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিতুমীরের ছাত্রীরাও। সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর প্লাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যের’ নেতা গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘শনিবার বিকাল ৪টার মধ্যে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না এলে আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা অবরোধ করব। সড়ক ও রেলপথ এর আওতায় পড়বে।’ বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে রোববার ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি শিথিল থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’ কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘গণঅনশনে সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন। একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে।’ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দাবিতে এই আন্দোলন করছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেন তারা। এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর থেকে ভোর পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করেন। তাতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মানুষ। সেদিন রাত ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান। দাবি-দাওয়া সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরবেন, তার এমন আশ্বাসেও পথ ছাড়েননি শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার ভোরে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলেও তাদের কয়েকজন আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যান। জুমার নামাজের পর তাদের সতীর্থরা একটি মিছিল নিয়ে মহাখালীর আমতলী ঘুরে এসে সড়ক অবরোধ করেন। তবে ছুটির দিন হওয়ায় এদিন আশপাশের সড়কে তেমন প্রভাব পড়েনি। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’র সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা। এছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে শিক্ষার্থীদের। এর আগে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ‘তিতুমীর ঐক্য’র তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখনই। আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে 'তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়' লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তারা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

অনশনে থাকা তিতুমীরের ২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিসহ সাত দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে অসুস্থ অবস্থায় সহপাঠিরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে। অসুস্থরা হলেন- গনিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান (২২) ও বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ (২৩)। শিক্ষার্থীরা বলেন, তিতুমীর কলেজ পুর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সহ সাত দফা দাবিতে এই অনশন চলছে। এতে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পরে। তাদের দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই অনশন চলবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, মহাখালী তিতুমীর কলেজ থেকে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের দুজনকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠিয়েছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন আছে।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে রাস্তা অবরোধ শুরু করেছেন। তাদের অবরোধের কারণে গুলশান-মহাখালী সড়কে দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলছিল। এদিকে, রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান নেতৃত্বে সরকার দলীয় একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত হয়। তারা তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শিপ্রা রানী মণ্ডলসহ কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে, শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করবেন না বলে জানান। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির প্রতি অবিচল থেকেছেন এবং তারা বলেন, যদি তিতুমীর কলেজকে 'তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়' হিসেবে ঘোষণা না করা হয়, তাহলে তারা রাজপথ ছেড়ে যাবেন না। তারা গণঅনশন, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যুগ্মসচিব নুরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের জানান, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করা সম্ভব নয়, এটি একটি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। তিনি বলেন, ‘এই দাবিটি অযৌক্তিক নয়, তবে এটি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং শিগগিরই এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ তবে শিক্ষার্থীরা এই বক্তব্য মেনে নেননি এবং তারা স্লোগান দিতে শুরু করেন, "হয় তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়, না হয় মৃত্যু।" এছাড়া, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুধু মুলা ঝুলিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চাচ্ছেন, যা তারা আর মেনে নেবেন না। এর আগে, ২৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। প্রথমে পাঁচজন শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে আরও দুজন এতে অংশ নেন। বুধবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন ২৯ ঘণ্টা পরেও অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে ছয়জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ‘তিতুমীর ঐক্য’ ব্যানারে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন গঠন, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিতকরণ, এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় চালু করা। এছাড়া, শিক্ষক নিয়োগ, গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না তাদের দাবির সমাধান না হয়।

সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’

ঢাকার সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজসহ এ-সংক্রান্ত কমিটির তিন সদস্য শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই এই নাম প্রস্তাব করা হয়। জানতে চাইলে এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘কয়েকটি নামের মধ্যে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি তাদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। শিক্ষা উপদেষ্টাও এই নামের প্রশংসা করেছেন। তবে ছাত্ররা যেটা বলবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা ও কাঠামো নিয়ে কাজ করছি। যেমন- একটা কাঠামোতে আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে দেশের সবগুলো কলেজ আছে, আবার অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এতদিন কিছু কলেজ ছিল। আমরা এসব কাঠামো নিয়ে কাজ করছি।’ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এই সাত কলেজকে ফের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে আলাদা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না।ঢাকার সরকারি এই সাত কলেজ হল- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। সরকারি এই সাতটি বড় কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এ জন্য ইউজিসির মাধ্যমে একটি কমিটি কাজ করছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে ইউজিসি এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠকও করেছে।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক অবরোধ

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে তারা কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।এটি ছিল তাদের নতুন আন্দোলনের অংশ, যেখানে শিক্ষার্থীরা ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ কর্মসূচিও পালন করেছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে তারা এই আমরণ অনশন শুরু করেন এবং তখনই সাত দফা দাবি তুলে ধরেন।শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য’ তাদের দাবির মধ্যে কিছু প্রধান বিষয় তুলে ধরেছে। তারা চায়— সরকারি তিতুমীর কলেজকে দ্রুত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হোক; তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার ঘোষণা করা হোক;২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে একটি নতুন প্রশাসন গঠন করা হোক;সকল শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের আবাসিক খরচ অনতিবিলম্বে বহন করা হোক; আন্তর্জাতিক মানের দুটি নতুন বিভাগ, আইন এবং সাংবাদিকতা, অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি ধারী যোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হোক এবংগবেষণাগার নির্মাণসহ শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা হোক।তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে তাদের কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর আবারও তারা নতুন করে এই দাবি উত্থাপন করেন এবং রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।

আন্দোলনরত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সুখবর দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

দেশের সব ইবতেদায়ি মাদরাসা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এ তথ্য জানা গেছে। অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব এসএম মাসুদুল হক। মঙ্গলবার বিকালে শাহবাগে শিক্ষকদের অবস্থানস্থলে এসে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের উপর পুলিশের জলকামান ও লাঠিচার্জের নিন্দা জ্ঞাপন করেছি। আপনাদের বঞ্চনার লাঘব হয়েছে। আপনাদের ছয় দফা দাবিসহ আরও বেশ কিছু কাজ করেছি। অতিরিক্ত কাজ করেছি।’ ‘প্রথম দফা সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়টি সব এবতেদায়ী মাদ্রাসা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে। ছয় দফার সব মেনে নেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সাল থেকে আমরা এমপিওর কাজ শুরু করব।’ এর আগে সচিবালয়ে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলরতদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠক থেকে বের হয়ে শাহবাগে এসে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল আসতেছে। আমাদের বলেছে, আপনাদের দাবি দাওয়া যৌক্তিক।’ এর পরপরই যুগ্ম সচিব মাসুদুল হক শাহবাগে এসে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। এর আগে, নিবন্ধনভুক্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারত শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। দুপুর ২টার মধ্যে ঘোষণা না এলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, ‘একই পাঠ্য বই পড়ানো হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু প্রাথমিকের শিক্ষকদের মতো বেতন ভাতা পান না তারা। এ জন্য জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা।’ এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন এসব শিক্ষক। জাতীয়করণের দাবি‌র অংশ হিসেবে ‌প্রেস ক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি থেকে রোববার (২৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি দেয়ার ঘোষণা দেন তারা। এরপর তারা জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে, লা‌ঠিচার্জ করে। শিক্ষকরা জানান, ১০ হাজার মাদরাসার ৫০ হাজার শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সাত কলেজ: বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা জানাতে ১৫ দিন সময় দিল শিক্ষার্থীরা

সাত কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের রূপরেখা জানাতে সরকারকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। রহমান বলেন, ‘সাত কলেজ নিয়ে কেমন বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার একটি রূপরেখা চাচ্ছি। আমাদের যে কমিটি (সাত কলেজেকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি) তারা জানিয়েছে তাদের কাজ শেষ। তারা বলছেন, খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দেবেন। তবে, আমরা ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছি।’ এর মধ্যে সরকারি সাত কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাস বা কোনো যানবাহন চলাচল করতে না দেওয়া এবং ও নিউ মার্কেট থানা ঘেরাওয়ের যে কর্মসূচি শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করেছিলেন, তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তারা। এই দুই কর্মসূচি ছাড়াও শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ‘মুখোমুখি’ অবস্থানে দাঁড় করানোর দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবের ওপর ‘হামলার’ ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার দায়িত্বশীলদের প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে ‘ক্ষমা’ চাইতে হবে এসব দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তারা। এর মধ্যে কর্মসূচি কেন প্রত্যাহার করে নেওয়া হল তার ব্যাখ্যায় আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘দেশের সব রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং শিক্ষকদের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটামের পর আসলে কি হবে? আমরা শিক্ষার্থীরা তৃতীয় পক্ষকে সুবিধা দিতে চাই না। কোনো প্রকার সহিংসতা ঘটে এমন কোন কর্মসূচি আমরা দেব না। তবে যারা দোষী আছে তাদের শাস্তি নিশ্চিতে রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কি সিদ্ধান্ত নেন সেটি আমরা পর্যবেক্ষণ করবো।’ ঢাবি ক্যাম্পাস এবং নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট এলাকায় রোববার (২৬ জানুয়ারি) গভীর রাত পর্যন্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাবির শিক্ষার্থীদের ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। ওই সংঘর্ষের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ’ নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থী হিসাবে আমরা তাদের প্রতিপক্ষ না, আমরাও তাদের প্রতিপক্ষ না। এটি তাদের কেউ ভুলে যেতে হবে, আমাদের কেউ ভুলে যেতে হবে।’ ‘উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিতের অভিপ্রায়ে আমাদের পরস্পর পাশাপাশি থেকে কাজ করতে হবে। যা হবে, আশা করি বাস ভাঙচুরের মত কিছু হবে না।’ সংঘর্ষের পর দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। এর অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ সেশন অর্থাৎ চলতি বছর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধের কথা বলা হয়। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। গত আগস্টে ক্ষমতায় পালাবদলের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছিলেন, অধিভুক্তির কারণে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় ভুগতে হয় তাদের। নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে তারা নানা সমস্যায় পড়েন। সেজন্য ঢাবির থেকে বেরিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বাস বন্ধ ও থানা ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিউ মার্কেট থানা ঘেরাও এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাস বন্ধ করার কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দাবিগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মেনে নেওয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠকের পর সাত কলেজ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের এ কথা জানান। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র) মো. খোদা বখস চৌধুরী, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ, ইডেন মহিলা কলেজের সাদিয়া আফরিন মৌ উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার আমাদের ছয় দফা দাবির বিষয়ে ইতিবাচক। যেগুলো তাৎক্ষণিক পূরণ করা যায় সেগুলো পূরণ করা হয়েছে। আমরা কর্মসূচি দিয়েছিলাম ২৪ ঘণ্টা পর সাত কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ অন্যান্য বাস বন্ধ এবং নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়ের যে কর্মসূচি দিয়েছিলাম, সেই কর্মসূচি আমরা প্রত্যাহার করে নিলাম।’ ‘গতকাল (সোমবার) সকালবেলা একটা সংবাদ সম্মেলন হয়েছিল। সেখানে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল। ওই দিন রাতে আমরা ছয় দফা দাবির বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে যাতে সমস্যাটা সমাধান হয় সেজন্য ডাকা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবিগুলো এখানে উপস্থাপন করেছি। দাবিগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মেনে নেওয়া হবে বলে আমাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’ দাবিগুলো তুলে ধরে এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘সাত কলেজ শিক্ষার্থী ও ঢাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মামুন স্যারকে ক্ষমাপ্রার্থনা করে পদত্যাগ করতে হবে। আমাদের এখান থেকে বলা হয়েছে মামুন স্যার এখন থেকে ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের সংশ্লিষ্ট কোনো কমিটির সঙ্গে থাকবেন না। আর তার পদত্যাগের বিষয়ে ঢাবির উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে আগানো হবে। এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে বসবেন।’ ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ শিক্ষার্থীদের ওপরে নিউমার্কেট থানা পুলিশের যে আক্রমণ সেটার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্ত করার জন্য তিন দিন সময় নেওয়া হয়েছে। এই তিন দিনের মধ্যে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে।’ ‘আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছিল। আর ঢাবি এর আগে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আক্রমণ করেছিল, সেজন্য ক্ষমা চাওয়াসহ আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি স্যারের সঙ্গে বসবো সেখানে এ বিষয়টি সমাধান করা হবে। এ বিষয়ে এখান থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস আমাদের দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বাতিলের যে দাবি (চতুর্থ) সেটি গতকাল পূরণ হয়েছে।’ মইনুল ইসলাম বলেন, ‘পঞ্চম দাবি ছিল এ সামগ্রিক বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামসহ সরকারের সঙ্গে বসা। সেটাও আজকে আমরা বসলাম।’ ‘ষষ্ঠ দাবিতে ছিল ঢাবিসংশ্লিষ্ট এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষকে এত দিন ঢুকতে দেওয়া হতো না। আমরা এখন থেকে সিটি কর্পোরেশনের রাস্তায় সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের জানানো হয়েছে, এটা ইতিমধ্যে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘তাদের দাবি ও সমস্যা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা হয়েছে। আমরা সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।’ সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় ও টেকনিক্যাল মোড়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১১টার দিকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন। এরপর শুরু হয় সংঘর্ষ ধাওয়া ও পালটা ধাওয়া। শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে যান। সংঘর্ষের পর সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা দাবি জানায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রক্রিয়া জটিল: শিক্ষা উপদেষ্টা

সরকারি সাত কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। তবে, তা করতে জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘নতুন একটা বিশ্ববিদ্যালয় করতে সময়ের প্রয়োজন। এটা তিনদিনের মধ্যে করা তো সম্ভব নয়। এটার কাঠামোর বিষয় রয়েছে। এটার মডেল কী হবে, সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। কারণ এটি বেশ জটিল প্রক্রিয়া।’ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আট বছর আগে একটি সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। এ কারণে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।’ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, একটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে বহু দিন থাকবে। এখানে বহু বছরের শিক্ষার্থীদের স্বার্থের ব্যাপার রয়েছে। তাই আমরা তড়িঘড়ি করে অবিবেচনামূলক সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। ভেবেচিন্তে সবকিছু করা হবে’ বিশ্ববিদ্যালয় করতে হলে প্রথমে সংবিধি তৈরি করতে হয় উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে শিক্ষক নিয়োগসহ আরও অনেক কিছু বিষয় রয়েছে। এছাড়া আইন ও অর্থের ব্যাপারও রয়েছে। এছাড়া সনদের প্রয়োজন হয়। সেটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় হয়।’ সনদ পাওয়ার আগে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের কর্তৃপক্ষ আগামী সেশন থেকে আলাদাভাবে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই, সামনের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কোনো একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভর্তি করতে হবে।’ চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির বিষয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হবে। তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে৷ নির্ধারিত সময়ে দাবি না মানলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়৷ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের পক্ষে এ আল্টিমেটামের সিদ্ধান্ত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন৷ তিনি বলেন, ‘অসহায় শিক্ষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেড কেন? ৫ আগস্টের পর টিয়ার গ্যাসের কবর দেওয়া হয়েছে৷ আগামী ১০ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসে ব্যাখ্যা দেবেন কেন এই লাঠিচার্জ হলো। এটা না করলে শাহবাগ থানা ঘেরাও হবে৷ এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা সচিবালয় ঘেরাও করা হবে৷’ ঢাবির এই শিক্ষক বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টা কি এই লাঠিপেটা দেখেননি? পুলিশ কিভাবে এই লাঠিচার্জ করে?’ আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা আব্দুল হান্নান হোসেন বলেন, ‘গতকাল সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন৷ তারা বলেছেন, আজকে দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত আসবে৷ আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করছি৷ যদি আজকের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি সুরাহা না করে তাহলে সামনে বড় আন্দোলনের ডাক আসতে পারে৷’

সোনাচোরাকারবারি সিরাজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র

পেশায় গাড়িচালক হলেও বেশভূষা তার জমিদারি। পরোয়া করেন না কাউকে। সিরাজ দৌলা নামক সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাবের) ওই গাড়ি চালকের প্রভাবে অনেক কর্মকর্তাও অসহায়। তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করলেই তার বিরুদ্ধে চলে নানা ষড়যন্ত্র। সম্প্রতি সিরাজ মেতেছেন সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, কুর্মিটোলা অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে। জানা যায়, কয়েকদিন আগে ওই স্কুলে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজের সন্তানকে ভর্তি করানো সহ নানাবিধ অবৈধ সুবিধা প্রাপ্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন সিরাজ। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন অপরিহার্য। এ বিষয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে অধিদপ্তর। গাড়িচালক সিরাজ নিয়ম অনুযায়ী ছেলের জন্য অনলাইন আবেদনে অংশ না নিয়েই প্রভাব খাটিয়ে ভর্তি করতে চান। স্কুল কর্তৃপক্ষ সরকারি বিধি মোতাবেক ভর্তি হতে বললে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অস্থিতিশীল করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন সিরাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করাসহ পাঠদানের বিদ্যমান পরিবেশ বিঘ্নিত করার জন্য মানববন্ধন করারও হুমকি দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত অন্য অভিভাবকদের সাড়া না পেয়ে তা প্রত্যাহার করেন সিরাজ। সিরাজের এমন কর্মকান্ডে বিব্রত সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খানের নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন সিরাজ দৌলা। দাবি করতেন তার দাদাশ্বশুর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী ফারুক খানের আস্থাভাজন। আওয়ামী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সিরাজ বিমানবন্দরে সোনাচোরাকারবারি চক্র তৈরি করেন। ২০২৪ সালের ৩০ মে ডিজিএফআইয়ের বিমানবন্দর ডেস্কে তিনি সোনা চোরাচালানের অপরাধে আটকও হন।এ সময়ে তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তাকে বদলি করাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে সিরাজ রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা তো দূরে থাক, বদলি ও করতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। নানা অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া সিরাজ বর্তমানে মেতেছে সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ অস্থিতিশীল করার খেলায়। যে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সর্বপ্রথম শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করে বর্তমান অধ্যক্ষের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠায়। ২০২৪ সালের এস এসসি পরীক্ষায় ও শতভাগ পাশের উক্ত কৃতিত্ব অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ উইং কমান্ডার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান নানা অসঙ্গতি দূর করে পড়ালেখার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হই। বিগত বছরগুলোতে কলেজ শাখার অনুমোদন গ্রহণ করে কলেজ শাখার কার্যক্রম শুরু করি। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে স্কুল শাখায় ইংরেজি ভার্সন চালু করা সহ কলেজ শাখায় ইংরেজি ভার্সন চালু করতে সক্ষম হই। প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ পাশের গৌরবসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমে বিভিন্ন সফলতা অর্জন করছে।তবে সম্প্রতি ড্রাইভার সিরাজ সহ কতিপয় দুস্কৃতিকারী প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমার প্রত্যাশা এই প্রতিষ্ঠানের সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে কেউ বিঘ্নিত করতে না পারে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিরাজের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এবার নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়ের ঘোষণা সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা না হলে এবং প্রত্যাহার করা না হলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের শহীদ মিনার থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি, ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী মইনুল হোসেন বলেন, ‘ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। এর দায়ভার পুলিশকে নিতে হবে। নিউমার্কেট থানার ওসি এবং এসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সঙ্গে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. মামুন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে।’ এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও করা হবে।’ একইসঙ্গে ৭ কলেজের সামনে দিয়ে ঢাবির কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। এর আগে, সোমবার দুপুরে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের জরুরি সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজ না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মডেল ইউনাইটেড নেশনসের সপ্তম আসর অনুষ্ঠিত

অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্লেনরিচ উত্তরা সিনিয়র ক্যাম্পাস কর্তৃক আয়োজিত ‘গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মডেল ইউনাইটেড নেশনস’-এর (গ্লেনমুন) সপ্তম আসর। গত ২৩-২৬ জানুয়ারি এই ইভেন্টটি আয়োজিত হয়। এই বছরের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য ছিল “ক্লিয়ার দ্য হেইজ, সেট দ্য ট্রুথ অ্যাব্লেজ।” দক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে কীভাবে বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যাবে- এ বিষয়ে আলোকপাত করেন অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। গ্লেনরিচ উত্তরার অধ্যক্ষ অম্লান কে. সাহা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীর মনোমুগ্ধকর গিটার পরিবেশনা (একক) ও গ্লেনরিচ উত্তরার হাউস ব্যান্ড ‘ইগনাইট’-এর গান উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। সম্মেলনে মোট ২৮টি স্কুল ও সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল থেকে প্রায় ৪৫০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এবারের সম্মেলনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি), জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ (ইউএনএইচআরসি ডাবল-ডেলিগেশন), উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট (ন্যাটো), আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), জাতিসংঘের নারী অধিকারবিষয়ক কমিশন (ইউএনসিএসডব্লিউ), অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়ক পরিষদ (ইকোফিন) ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারসহ মোট ১৪টি কমিটি ছিল। প্রতিনিধিরা বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সংকট উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা আলোচনায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। জাতিসংঘের অনুকরণে আয়োজিত গ্লেনমুনের ৭ম আসরে শিক্ষার্থীরা নিজেদের চিন্তা ও বিতর্ক দক্ষতা প্রদর্শন করেন। অম্লান কে. সাহা বলেন, ‘আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবে। অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাশক্তির মাধ্যমে দেশ ও বিশ্বের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এই প্রজন্ম। গ্লেনমুন এসব প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমী প্ল্যাটফর্ম; বিতর্কের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান বের করতে উৎসাহিত করে এই আয়োজন। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা উচ্ছ্বসিত। শিক্ষার্থীদের এমন আগ্রহ এই অনুষ্ঠানের সাফল্যের প্রতিফলন।’ আলোচনা ও বিতর্কের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে এনকোর ব্যান্ডের কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় দিনে ছিল নেমেসিস এর পরিবেশনা এবং শেষ দিনে ‘লেভেল ৫’ দর্শকদের মুগ্ধ করে। রোববার (২৬ জানুয়ারি) ভবিষ্যত পৃথিবীর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলনের ইতি ঘটে। আয়োজনের শেষ দিন ছিল উৎসবমুখর; গালা ডিনারের মাধ্যমে এই বছরের সম্মেলনটি শেষ হয়। গ্লেনমুন সপ্তম আসরের টাইটেল স্পনসর ছিল এক্সিলেন্স কর্পোরেশন। এছাড়া, এই আয়োজনকে সফল করতে প্ল্যাটিনাম স্পনসর হিসেবে ছিল সিটি ব্যাংক। এই আয়োজনের ব্রোঞ্জ স্পনসর ছিল বেঙ্গল, গিনজা, মিনিসো ও অ্যাসরোটেক্স।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকছে না সাত কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজকে সম্মানজনক পৃথকীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আর ঢাবির অধীনে হবে না। এছাড়াও, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাবির অধীনে সরকারি সাত কলেজে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। তবে, চলমান শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম ঢাবি সম্পন্ন করবে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে ঢাবির উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খানের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ঢাবি প্রশাসন অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ধৈর্যধারণ, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ঢাবি ও অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।’ সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- ঢাবির অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজকে সম্মানজনক পৃথকীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়; অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এক বছর এগিয়ে এনে এবছর থেকেই অর্থাৎ ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি না নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়; শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়; ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে এবং যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাবির চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’ এর আগে ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে ৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন ৭ কলেজ শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে রোববার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে হামলার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারসহ ৬ দফা দাবিও জানান তারা। সোমবার ঢাকা কলেজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবির বিষয়ে জানানো হয়।

চার ঘণ্টার আল্টিমেটাম ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের দায় নিয়ে ঢাবি প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা এবং উপ-উপাচার্য মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি মেনে নিতে চার ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তারা। বিকেল চারটার মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি এবং নিজেদের অবস্থান নিয়ে ব্রিফ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো- ১. ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং প্রো-ভিসি মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে। ২. ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি, ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. ঢাবি শিক্ষার্থীদের ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে তা বাতিল করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ৫. উদ্ভুত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসি সদস্য এবং ঢাবি ভিসির সমন্বয়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পার্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এই ঘটনার সমাধান করতে হবে। ৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এরিয়ায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সজীব উদ্দিন বলেন, জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে গেল রাতের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হয়নি। পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে সেটা পরেই জানানো হবে। উল্লেখ্য, গতকাল রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবি প্রো-ভিসির সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে তিনি ‘দুর্ব্যবহার’ করেছেন বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। এমন অভিযোগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করেন তারা। এ সময় প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাতে সাড়া না পেয়ে রাত ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়ে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। উত্তেজনার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। রাত তিনটা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় নীলক্ষেত মোড়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। পরে এলাকায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রাত তিনটার দিকে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার সকাল ৯টা থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সেই কর্মসূচি পালন না করে চার ঘণ্টার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয় তারা।

সাইন্সল্যাব অবরোধ করল সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, পাঁচ দাবি

পাঁচ দাবিতে ঢাকার সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা দিকে কয়েক শত শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করেন। এতে সাইন্সল্যাব, নীলক্ষেত মোড় ও এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজের ভর্তির আসন কমানোসহ ৫ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে ঢাবির প্রো-ভিসি এবং কয়েকজন শিক্ষক সাত কলেজের অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীকে অপমান করা হয়। এরই প্রতিবাদে এই অবরোধ।দাবিগুলো হচ্ছে ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে; সাত কলেজের শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না; শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে; সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে এবং সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ছাড়া নতুন একটি অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফি টাকা জমা রাখতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের স্মারকলিপি, দাবি আদায়ে চলবে আন্দোলনও

ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে সরকারিকরণের দাবিতে দেয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার ও সরকারিকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সরকারিকরণের দাবি নিয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যেতে চান শিক্ষকরা। তবে পুলিশ তাদের বাধা দেন। এ সময় লাঠিপেটা ও জলকামানের ব্যবহারে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এতে অনেক শিক্ষক আহত হন।পরে বিকেলে শিক্ষক প্রতিনিধি কাজী মোখলেছুর রহমান জানান, প্রধান উপদেষ্টা স্মারকলিপি নিয়েছেন। সচিব বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু যারা আহত হয়েছেন, এর বিচার ও চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই আন্দোলন ছেড়ে যাবেন না ইবতেদায়ি স্বতন্ত্র মাদ্রাসা শিক্ষকরা।তিনি আরও বলেন, ‘রোববার সকালে আন্দোলন রত শিক্ষকদের ওপরে হামলার বিচার ও দাবি দাওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে এপিএস রাস্তায় এসে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। তিনি জানান- সচিব আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলবেন। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে শিক্ষক প্রতিনিধিরা গ্রহণ করেছেন। তবে যতক্ষণ হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’এদিকে, শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।এ বিষয়ে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে হাসনাত লিখেন, ‘ইবতেদায়ি শিক্ষকসহ বাংলাদেশে সামগ্রিক শিক্ষক সমাজ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের নিন্দা জানাই। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, পুলিশ মিছিলের অনুমতি দিয়েও হামলা চালিয়েছে। তারা বলেন, ‘৪০ বছর অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন মাদ্রাসার শিক্ষকরা বিনা বেতনে শিক্ষকতা পেশায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয়করণের ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।’তবে, শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের এডিসি মীর আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মিছিল নিয়ে ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেয়া হয়। তবে, তারা যে লাঠিচার্জের অভিযোগ করছেন তা ভিত্তিহীন। ছত্রভঙ্গ করার জন্য জলকামান ব্যবহার করা হয়।’

জানুয়ারির মধ্যেই প্রাথমিকের শতভাগ শিক্ষার্থী বই পাবে: উপদেষ্টা

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। জানুয়ারির মধ্যেই প্রাথমিকের শতভাগ শিক্ষার্থী বই পাবে।’ রোববার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউসের সভা কক্ষে মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কোথাও দুর্নীতি পেলে সাথে সাথে তুলে ধরতে অনুরোধ জানিয়ে দুর্নীতির প্রমাণ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর অনেক অনেক শিক্ষানীতি করা হয়েছে। সেজন্য বিভিন্ন প্রকার প্রস্তাবও পেশ করা হয়েছে কিন্তু তা কখনো কার্যকর হয়নি। এটা মূলত আমাদের জাতীয় সমস্যা। এর জন্য আমাদের দেশের অগ্রসর নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে বলে আমি মনে করি। বিশ্বের সমৃদ্ধ দেশগুলো তাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে প্রণয়ন করে যেন দেশের প্রতিটি নাগরিক এ শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যায়। এ জন্যই তাদের মধ্যে একি ধরণের মূল্যবোধ সঞ্চার হয়। অথচ আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দিন দিন বিভক্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি ঠিক কিন্তু সে কাঠামোতে এখনো বন্ধি। আমরা কাগজে কলমে শিক্ষিত হচ্ছি ঠিক কিন্তু এখনো প্রকৃত স্বাক্ষর হয়ে উঠিনি। আমি জানি এ দুরাবস্থা এত কম সময়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। সে জন্যই আজকে মাঠপ্রশাসনের সাথে মতবিনিময় করেছি আপনাদের পরামর্শ নিয়েছি । আশা করছি এ আলোচনা সভা ফলপ্রসূ হবে।’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল হাকিম। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টা পরে চট্টগ্রামে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) পরিদর্শন ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং শিক্ষকগণের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। পরে পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষার বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের লেখাপড়ার খোঁজখবর নেন। এছাড়া রোববার সকালে উপদেষ্টা চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (চট্টগ্রাম জেলা) ২০২৪’-এর উদ্বোধন করেন। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন, প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

স্কলারশিপ দিচ্ছে তুরস্ক

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ ঘোষণা করেছে তুর্কি সরকার। দেশটির প্রষিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনে এ সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে। তুরস্ক সরকারের অর্থায়নে এই স্কলারশিপ দেয়া হচ্ছে। যেটি একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রাম। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে এক শিক্ষার্থী এবং গবেষক তুরস্কের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে ফুল টাইম অথবা শর্ট টাইম প্রোগ্রামে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে থাকেন। আগামী নেতাদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন এবং একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে তুরস্ক এই স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। গত ১০ জানুয়ার থেকে তুরস্কে স্কলারশিপের জন্য আবেদন শুরু হয়েছে, যা আগামী ২০ জানুয়ারি শেষ হবে। অনার্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রির জন্য এই স্কলারশিপে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের জন্য উত্তীর্ণ হলে তার যাবতীয় খরচ তুর্কি সরকার বহন করবে। এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা, টিউশন ফি, থাকার সুবিধা এবং স্বাস্থ্য বিমাসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনেরও সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। তুরস্কে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে ক্লিক করুন।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ২৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ২৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিরুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট এফেয়ার্সের উর্ধ্বতন সহকারি পরিচালক অমিত কুমার চক্রবর্তীর সঞ্চালন্য় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম মাহাবুবুল হক মজুমদার, ট্রেজারার হামিদুল হক খান, বাণিজ্য ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মাসুম ইকবাল, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ড. লিজা শারমিন, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নাদির বিন আলীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। দিনব্যপী আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল র‌্যালী, আলোচনা অনুষ্ঠান, কেক কাটা, মানব লগো তৈরি, খেলাধুলা, ফান ইভেন্টস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিম সংয়ের নৃত্যনাট্য পরিবেশনা। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। শীতের প্রচন্ড কুয়াশা উপেক্ষা করে ২২ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা বর্ণিলসাজে সজ্জিত হয়ে শনিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এসে মিলিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রমাগত উন্নয়নের ধারায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মো. সবুর খান বলেন, ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হবে বাংলাদেশের প্রথম স্কীল ফোকাসড ইউনিভার্সিটি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও বেকার থাকেবে না। দুয়েকজন বেকার থাকলেও যারা উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হবে, তারা তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ অন্যান্য প্রযুক্তিতে অমাদের শিক্ষার্থীদের এমনভাবে দক্ষ করে তুলতে চাই, যাতে তারা বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে।’ সবুর খান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যরে জন্য নয় বরং আমরা আমাদের নৈতিকতাকেও জাগ্রত করতে চাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য গত জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ৩১ কোটি টাকার বৃত্তি দেয়া হয়েছে; যা প্রতিটি শিক্ষার্থী কম-বেশী পেয়েছে।’ এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ের সবকটি সূচকেই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান ধরে রেখেছে এবং আগামী দিনেও এ বিশ্ববিদ্যালয় আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রায় ৩০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এ বিশ্ববিদ্যালয়। সংখ্যায় আমরা অসংখ্য হলেও সম্মিলিতভাবে আমরা একক এবং আমরা সবাই ড্যাফোডিলিয়ান।’

দশম গ্রেডের দাবিতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সমাবেশ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীর শহীদ মিনারে সমাবেশ করছেন শিক্ষকরা। আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় এ সমাবেশ শুরু হয়। এদিন সকাল দশটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জরো হোন শিক্ষকরা। তারা বলেন, ১৩তম গ্রেডের মাধ্যমে শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এমন গ্রেডে থাকা মানেই শিক্ষকদের অমর্যাদা করার সামিল। সমাবেশে শিক্ষকদের ‘এক দফা, এক দাবি, শিক্ষকদের ১০ গ্রেড’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, শিক্ষক সমাজ জেগেছে’, ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এসময় শিক্ষকরাই দেশ গড়ার কারিগর উল্লেখ করে তারা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ১৩তম গ্রেডের বেসিক বেতন ১১ হাজার টাকা। দশম গ্রেডে তা দাঁড়াবে ১৬ হাজার টাকা।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বে নজরুল ইসলাম

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম । এছাড়াও সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের চার জন শিক্ষক। বুধবার (২২ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের আগামী দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নুসরাত জাহান (ম্যানেজমেন্ট), মো: মাইনুল ইসলাম (বাংলা), ইয়াতসিংহ শুভ (সঙ্গীত), জান্নাতুল মাওয়া মুন (সমাজবিজ্ঞান)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ, একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আইনের সংবিধি ১৮(১) ধারা অনুযায়ী দুই বছরের জন্য শিক্ষকগণকে প্রক্টর(ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো। নবনিযুক্ত প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম জানান, “প্রক্টরিয়াল বডির কাজ অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে এটিকে আমরা পবিত্র দায়িত্ব মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে সহায়তায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রক্টরিয়াল বডি নিরলসভাবে কাজ করবে। আমাদের এই পবিত্র দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়ায় মাননীয় উপাচার্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করছি।”