তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:০২ এম, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে রাস্তা অবরোধ শুরু করেছেন। তাদের অবরোধের কারণে গুলশান-মহাখালী সড়কে দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলছিল।
এদিকে, রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান নেতৃত্বে সরকার দলীয় একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত হয়। তারা তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শিপ্রা রানী মণ্ডলসহ কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে, শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করবেন না বলে জানান।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির প্রতি অবিচল থেকেছেন এবং তারা বলেন, যদি তিতুমীর কলেজকে 'তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়' হিসেবে ঘোষণা না করা হয়, তাহলে তারা রাজপথ ছেড়ে যাবেন না। তারা গণঅনশন, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
যুগ্মসচিব নুরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের জানান, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করা সম্ভব নয়, এটি একটি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। তিনি বলেন, ‘এই দাবিটি অযৌক্তিক নয়, তবে এটি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং শিগগিরই এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ তবে শিক্ষার্থীরা এই বক্তব্য মেনে নেননি এবং তারা স্লোগান দিতে শুরু করেন, "হয় তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়, না হয় মৃত্যু।"
এছাড়া, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুধু মুলা ঝুলিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চাচ্ছেন, যা তারা আর মেনে নেবেন না।
এর আগে, ২৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। প্রথমে পাঁচজন শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে আরও দুজন এতে অংশ নেন। বুধবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন ২৯ ঘণ্টা পরেও অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে ছয়জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা ‘তিতুমীর ঐক্য’ ব্যানারে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন গঠন, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিতকরণ, এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় চালু করা। এছাড়া, শিক্ষক নিয়োগ, গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না তাদের দাবির সমাধান না হয়।