
ভোলার দৌলতখানে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের সময় জামায়াতে ইসলামি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিবাদে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার সূত্রপাত জামায়াতের নেতাকর্মীদের ‘রাজাকার’ হিসেবে সম্বোধন করার অভিযোগ থেকে, যদিও বিএনপি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার আমির জাং গজনবী স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলছিল। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সকাল ৯টার দিকে চেয়ার না পেয়ে বিএনপির কয়েকজন নেতা ও কর্মী জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের উদ্দেশে ‘রাজাকার’ বলে মন্তব্য করেন। এরপর দুই দলের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ছড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও মারামারিতে পর্যবসিত হয়।
আহতদের মধ্যে ছয়জনকে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন সৈয়দপুর ইউনিয়ন জামায়াত আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম (৬০), জামায়াত কর্মী হাসনাইন (২৮), আবু তালহা (৪০), মো. সরোয়ার আলম (৫০), শাহরুপ (২৮) ও আমজাদ হোসেন (২৪)।
দৌলতখান উপজেলা জামায়াতে ইসলামের আমির হাসান তারেক অভিযোগ করেন, ‘বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমরাও ইনভাইটেড (দাওয়াতি) ছিলাম। আমাদের বসার জন্য নির্ধারিত চেয়ারও ছিল। সেখানে জামায়াতে ইসলামীর লোকজনও ছিল। সকাল ৯টার দিকে দৌলতখান পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি গ্রুপ সেখানে ঢুকেছে। এ সময় বাবুলের আসন কোথায় জানতে চান। তখন আমাদের দলের সেক্রেটারির নির্ধারিত আসনে লেখা স্টিকার ছিঁড়ে ফেলে সেই চেয়ারে বসে পড়েন ওই বিএনপির ওই নেতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমি তাকে বললাম এটা আপনি ঠিক করেননি। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই ভবানীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি স্বপন কেরানি ও বিএনপি নেতা জহিরের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাদের রাজাকার বলে গালি দিয়ে আমাদের লোকজনদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
অভিযোগ অস্বীকার করে দৌলতখান পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো কিছুই হয়নি। আমাদের তো চেয়ার ছিল। সেখানে সব দলের লোকজন ছিল। সেখানে রাজাকার নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর লোকজনের হট্টগোল হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে যেহেতু আমাদের জোট ভাঙে নাই। সেহেতু তারা এখনও আমাদের বন্ধু।’
দৌলতখান থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সিকদার জানান, স্টেডিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।