আ.লীগ নেতাকে নিয়ে শিবির-যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০


আ.লীগ নেতাকে নিয়ে শিবির-যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০

নোয়াখালীর কাশেম বাজারে রাজনৈতিক উত্তেজনা রূপ নেয় সহিংস সংঘর্ষে, যেখানে ইসলামী ছাত্রশিবির ও যুবদলের কর্মীদের মধ্যে রোববার অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার ও পুরনো রাজনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে শুরু হওয়া এই দ্বন্দ্ব কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজার এলাকায়। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত শনিবার একটি স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত শিবিরের কুরআন তালিম ও ফরম পূরণের কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ রয়েছে, শিবিরের আয়োজনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জামায়াত সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি, সেলিম, যিনি অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মসজিদে উপস্থিত হন যুবদলের স্থানীয় নেতারা। তাদের দাবি, মসজিদে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চলা উচিত নয়। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরদিন রোববার একই স্থানে আবারও কুরআন তালিম ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে শিবির। তবে এ কার্যক্রমেও বাধা দেন যুবদলের নেতারা। এতে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা ছড়িয়ে পড়ে বাজারের আশপাশে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও আশেপাশের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন, “৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা সেলিমের নেতৃত্বে মসজিদে ঢুকে ফরম ফিলাপ করেছে শিবির। এ সময় যুবদলের নেতাকর্মীরা মসজিদে রাজনৈতিক কার্যক্রম না করার জন্য অনুরোধ করেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে শিবিরের নেতৃত্বে জেলা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে পুনরায় সেখানে সভা ডাকে এবং আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে বাজে স্লোগান দেয়। এ সময় তাদের নিভৃত থাকতে বললে তারা যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে নেওয়াজপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক, যুবদল নেতা রায়হান, জিয়াসহ ২৫ থেকে ৩০ নেতাকর্মী আহত হন।”

তিনি আরও দাবি করেন, এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং জেলা শহর থেকে সংগঠিত হয়ে ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল শিবিরের কর্মীদের।

অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের শহর শাখার প্রচার সম্পাদক কেএম ফজলে রাব্বি পাল্টা অভিযোগ করেন, “শিবিরের উদ্যোগে শনিবার কাশেম বাজার মসজিদে কুরআন তালিম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে স্থানীয় যুবদল নেতা ফারুকের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। একপর্যায়ে শনিবার কুরআন তালিম করা যায়নি। পরে রোববার পুনরায় সেখানে কুরআন তালিমের আয়োজন করা হয়। আজও ফারুকের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে হাসান, দেলওয়ার হোসেন মিশু, আবিদ, সালাউদ্দিনসহ ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন।”

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, “দুইপক্ষের মধ্যে বিকালে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তিনিসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×