কৃষককে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা, মসজিদের মাইকে প্রচার
- বরিশাল প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৬:৫২ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরিশালের বাকেরগঞ্জে এক কৃষককে হাতে-পা বেঁধে মারধরের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহত সোহেল খান (৩৫)-এর পরিবার বলছে, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। পরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাত নিহত হয়েছে বলে প্রচার করা হয়।
ঘটনা শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার কবাই ইউনিয়নের উত্তর কবাই গ্রামে ঘটে। নিহত সোহেল খান ওই গ্রামের নূর ইসলাম হাওলাদারের ছেলে। তার পরিবার অভিযোগ করেছে, একই গ্রামের শাহীন হাওলাদার ও তার সহযোগীরা হত্যায় জড়িত।
নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান, ১৫ দিন আগে তার একটি সন্তানের জন্ম হয়েছে। ওইদিন তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন। রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশী শাহীন হাওলাদার তার স্বামীকে লোক দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। এরপর রাত ১২টার দিকে বাড়ির পাশে মসজিদের সামনে তাঁকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে রাত ১টার সময় মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত’ বলে প্রচারণা চালানো হয়। রবিবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
সাজেদা বেগম জানান, তরমুজ চাষের জন্য গত বছর শাহীন হাওলাদার তাদের কাছ থেকে কয়েক বিঘা জমি লিজ নেন। কিন্তু এ বছর জমি না দিয়ে সোহেল খান চাষাবাদ করলে শাহীন ক্ষুব্ধ হয়ে শতাধিক মহিষ দিয়ে ফসল নষ্ট করে দেন। সেই শত্রুতার জেরেই শনিবার রাতে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। স্বামীকে হারিয়ে পাঁচ সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন সাজেদা। তিনি স্বামী হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
নিহতের কন্যা ফাতিমা আক্তার বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। তিনি কখনো ডাকাতিতে জড়াননি। তবু তরমুজ চাষের জমি না দেওয়ার কারণে শাহীন হাওলাদার ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে বাবাকে হত্যা করেছে। এখন মা ও আমাদের পাঁচ ভাইবোনের দায়িত্ব কে নেবে?
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, রবিবার ভোর ৪টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল আসে, কবাই গ্রামে এক ডাকাতকে আটকে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেলের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি আরও বলেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জেরেই শাহীন ও তার সহযোগীরা সোহেলকে হত্যা করে মসজিদের মাইকে ডাকাত বলে প্রচারণা চালিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের স্ত্রী মামলা করবেন বলেছেন।