নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার
- রাজবাড়ী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:২৩ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
 
                                রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি চুরির সময়ের একটি ভাইরাল ভিডিওতে ধরা পড়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে এক অভিযানে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ তাকে আটক করে।
গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের সময় ওই জেনারেটরটি চুরি হয়। ঘটনার সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিজানুরকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং দরবারে সংঘটিত হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
পুলিশ এ পর্যন্ত ওই সহিংস ঘটনার দুটি পৃথক মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বলেন, “নুরাল পাগলার দরবার থেকে জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যায় মিজানুর রহমান। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হই। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, দরবারে সহিংসতার সময় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা অজ্ঞাতনামা সাড়ে তিন থেকে চার হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। “সোমবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দায়ের করা মামলায় হত্যাসহ অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি ও জখমের অভিযোগ আনা হয়েছে,” বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২৩ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল। তার অনুসারীরা গোয়ালন্দের দরবার শরিফের ভেতরে তাকে দাফন করেন এবং তার কবরের ওপরে প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার একটি স্থাপনা নির্মাণ করেন। ওই স্থাপনার গঠন মক্কার কাবা শরিফের মতো বলে অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের একটি অংশ আপত্তি জানায়, যা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়।
এর জেরে ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর কয়েক শত মানুষ দরবারে হামলা চালায়। তারা কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নুরাল পাগলার অনুসারী ও স্থানীয় 'ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটির' সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ হারান রাসেল মোল্লা নামে এক ভক্ত। আহত হন সাংবাদিকসহ অন্তত ২২ জন।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হলেও বিক্ষোভকারীরা ইউএনও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্য ও দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহত হন।
এই ঘটনায় পুলিশ ও নিহত রাসেল মোল্লার পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়, যাতে অজ্ঞাতনামা প্রায় ৭ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
 
                        
                     
                             
                             
                             
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    