১৭ বিয়ে করা সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত, মামলার তদন্তে পিবিআই
- বরিশাল প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:৫৯ এম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১৭ নারীর সঙ্গে বিয়ের অভিযোগে বহুল আলোচিত বন কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে অবশেষে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। তার বিরুদ্ধে এখন শুরু হচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (পিবিআই) তদন্ত।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের এই সিদ্ধান্ত জানায়। এতে বলা হয়, বরখাস্ত হওয়া বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে আপাতত রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত রাখা হবে। একইসঙ্গে পটুয়াখালী বিভাগের উপ বন সংরক্ষক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে বরিশাল ডিএফও’র দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে নিশ্চিত করেন যে, মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি এ সংক্রান্ত একটি ইমেইল পেয়েছেন।
একই দিনে বরখাস্তের পাশাপাশি আদালতে মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারক মো. সাদিক আহম্মেদ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ পিবিআইকে।
অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু মামলায় অভিযোগ করেন, “বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও আসামি মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। আসামি প্রতিটি বিয়ের ঘটনায় মুসলিম ফ্যামিলি আইনের ১৯৬১ সালের ৬ ধারা লঙ্ঘন করে অধ্যাদেশ ৬(৫)(খ) ধারায় অপরাধ করেছেন। প্রথম বিবাহ গোপন রেখে একে একে ১৭টি বিয়ে করেছেন তিনি, যা ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেশীয় সংস্কৃতি ও সামাজিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।”
মামলায় বলা হয়, সরকারি চাকরির সুযোগ, বিদেশে পড়াশোনার প্রতিশ্রুতি, বিমানবালা হিসেবে চাকরি অথবা সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক নারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন কবির হোসেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ একাধিক জেলায় কর্মরত অবস্থায় এসব বিয়ে ও প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রাজিব মজুমদার জানান, “আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।”
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বরিশাল নগরীর কাশিপুরে বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে ‘ভুক্তভোগী পরিবার ও সুশীল সমাজ’-এর ব্যানারে মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া ও খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ মোট ১৭ জন নারী নিজেদের প্রতারণার শিকার বলে দাবি করেন।
তাদের মধ্যে একজন, খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তার, জানান যে তাকে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন কবির হোসেন। বিয়ের পরের দিনই তিনি স্ত্রীকে বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ করেন খাদিজা।