লক্ষ্মীপুরে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে প্রাণ গেল শিশুর


লক্ষ্মীপুরে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে প্রাণ গেল শিশুর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পড়ে থাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মো. ইসমাইল (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে ওইদিন দুপুরে রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ইসমাইল ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং চরবংশী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক সফিকুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ছেঁড়া তার সম্পর্কে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে জানানো হলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি, যার ফলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সমিতির কর্মীদের অবহেলাকে দায়ী করা হচ্ছে।

তারা জানান, বিদ্যালয়ের পাশে থাকা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে তারটি ছিঁড়ে পড়ে ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা সেটি দেখতে পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অভিযোগ কেন্দ্রে ফোন করে বিষয়টি জানায়। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ওই ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইসমাইলের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. মিজান বলেন, দুর্ঘটনায় শিশুটির শরীর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই তার দাফন সম্পন্ন হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তার ছিঁড়ে পড়ার বিষয়টি অবহেলা করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। বারবার ফোন করেও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রায়পুর কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত লাইন মেরামত করি। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না। খুঁটি থেকে তার ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়ে আমার মোবাইলে কেউ কল করেনি।

এদিকে, চার দফা দাবিতে সারা দেশের মতো লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত এক সপ্তাহ ধরে গণছুটিতে থাকায় তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে মাঠপর্যায়ে বিদ্যুতের কোনো সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহকরা অভিযোগ জানাতে পারছেন না, যা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠছে।

সূত্র জানায়, জেলার ৬৪৮ জন কর্মীর মধ্যে বর্তমানে অনুপস্থিত রয়েছেন ৫২৮ জন। রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ১০৫ জন কর্মীর মধ্যে ৯১ জনই গণছুটিতে অনুপস্থিত।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×