দক্ষিণ আফ্রিকায় ফ্রিজে মিলল বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর লাশ
- নোয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:২৪ এম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ আফ্রিকার উইটব্যাংকে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে একটি ডিপ ফ্রিজ থেকে।
নিহতের নাম কাজী মহিউদ্দিন পলাশ। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গাবুয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে কাজী আমিন উল্লাহর ছেলে। আট ভাই-বোনের মধ্যে পলাশ ছিলেন ষষ্ঠ। প্রায় ১৫ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করছিলেন তিনি। দেশে তার স্ত্রী ও দুটি ছোট সন্তান রয়েছে, একজনের বয়স তিন বছর, অন্যজনের এক বছর। সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে বেড়িয়ে আবার আফ্রিকায় ফিরে যান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার সন্ধানে ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান পলাশ। সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করার পর উইটব্যাংক এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ব্যবসা ভালোই চলছিল। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বিরক্তি এড়াতে এক মালাউয়ি নাগরিককে দোকানে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি।
নিহতের বড় ভাই কাজী সালে উদ্দিন মাসুম বলেন, "হঠাৎ তিন দিন ধরে পলাশ নিখোঁজ ছিল। দোকান বন্ধ থাকায় আশপাশের ব্যবসায়ীরা খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে জানতে পারি, তার দোকানের ডিপ ফ্রিজ থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, দোকানে কর্মরত আফ্রিকান যুবক ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মিলে তাকে হত্যা করেছে।"
তিনি নিহতের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দোকান বন্ধের পর বুধবার সারাদিন দোকান খোলা হয়নি। সাটার তালাবদ্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পেছনের দরজা খোলা দেখে কিছু লোক দোকানে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ এসে ফ্রিজের ভেতর খোঁজ নিয়ে আইস প্যাকেটের নিচে পলাশের মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহে গলায় প্লাস্টিক জড়ানো এবং মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "পুলিশ এসে পলাশের লাশ উদ্ধার করে। তার গলায় প্লাস্টিক মোড়ানো ছিল, মুখে মারধরের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। ফ্রিজের পাশে একটি পাঁচ কেজি ওজনের বড় হাতুড়িও পাওয়া গেছে।"
তিনি আরও জানান, দোকানের মালাউয়ি কর্মচারীর এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি, এবং তাকে মূল সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। নিহতের পরিবার দেশে থেকে বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং মরদেহ দ্রুত ফেরত আনার জন্য কূটনৈতিক সহায়তা কামনা করেছে।