শের-ই-বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসক-শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, বিপাকে রোগীরা


শের-ই-বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসক-শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, বিপাকে রোগীরা

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) ও দেশের অন্যান্য হাসপাতালের স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন। তিন দফা দাবিতে টানা ২১ দিনের আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তারা।

অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা পাল্টা কর্মসূচি নিয়েছেন। তারা আন্দোলনের নামে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর হামলার অভিযোগে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। পাশাপাশি, আদেশ বাস্তবায়ন না হলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আজ বেলা সাড়ে ১২টায় হাসপাতালের সামনে শেবাচিমের সব স্তরের চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম সাদ বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। কিছু অযৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনের নামে চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও কর্মচারীদের আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া দুঃসাধ্য। আমরা শুধুমাত্র জনস্বার্থে আগামী ৪৮ ঘণ্টা সেবা প্রদান করব; হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে দায়িত্ব পালন বন্ধ রাখবো।

মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন সৈকত উল্লেখ করেন, গতকাল মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে হাসপাতালের প্রবেশ পথে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা মেডিসিন ইউনিট-২ এর মেডিকেল অফিসার ডা. দিলিপ রায়কে মারধর করেছেন। মুমূর্ষু রোগীদের কথা ভেবে বিকেল ৫টার পর থেকে শুধু জরুরি সেবা চালিয়ে যাব।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেতা মহিউদ্দিন রনি দাবি করেছেন, শের-ই-বাংলা হাসপাতালসহ সারাদেশের মেডিকেল সেক্টরের অব্যবস্থাপনা দূর করাসহ তিন দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে, অনশন করছে। অথচ আমাদের ওপর বারবার হামলা করা হয়েছে। হামলাকারীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী, যারা হাসপাতালের সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে।

মানববন্ধনের আগে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বর্হিবিভাগে চিকিৎসা বন্ধ রাখায় রোগী ও স্বজনরা বিপাকে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে তারা হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নেন, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পুনরায় ভেতরে ফিরানো হয়।

চিকিৎসা নিতে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, হাসপাতালের কোথাও ডাক্তার নেই। তারা মিছিল-মিটিং নিয়ে ব্যস্ত।
আরেক রোগীর স্বজন আব্দুল সালাম হাজী যোগ করেন, ভোর থেকে টিকিট কেটে অপেক্ষা করছি, কিন্তু এখনও কোনো ডাক্তার উপস্থিত নয়। বরিশালবাসীকে জিম্মি করে রেখেছেন হাসপাতালের ডাক্তাররা।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×