শেবাচিমে চিকিৎসকদের ওপর হামলা, অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা
- বরিশাল প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৪২ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৫

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। রবিবার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৩টার পর থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। রাতে হাসপাতালের মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
হঠাৎ চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি হওয়ার পরও ওয়ার্ডে চিকিৎসা না মেলায় রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে দুপুরে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রজনতা হাসপাতালের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করে। এসময় তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে এক চিকিৎসকসহ তিনজন আহত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, গত ১৪ আগস্টও তারা নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন। তবে হাসপাতাল পরিচালকের অনুরোধ ও রোগীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন এবং কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা জোরদারে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেন। কিন্তু রবিবার (১৭ আগস্ট) আবারও বিক্ষোভকারীরা মেডিসিন বিভাগের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. দিলীপ রায়ের ওপর আকস্মিক হামলা চালায়। এ ছাড়া হাসপাতালের অন্য স্টাফদের লক্ষ্য করে হামলা এবং ভবনজুড়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়, যা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতার কারণে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত বলেন, কর্মস্থলে নিরাপত্তার অভাবে ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসকরা কর্মস্থল ত্যাগ করেন, ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। তবে হাসপাতাল পরিচালকের বিশেষ অনুরোধ এবং পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তার কারণে ও মুমূর্ষু রোগীদের কথা বিবেচনায় আমরা বিকেল ৫টা থেকে শুধু জরুরি সেবা চালু রেখেছি।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, হামলার পর চিকিৎসকরা আতঙ্কে কর্মস্থল ছেড়ে যান। চিকিৎসা না পেয়ে রোগী ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে এবং পুলিশের সহায়তায় চিকিৎসকদের ফিরিয়ে এনে আপাতত জরুরি সেবা চালু রাখা সম্ভব হয়েছে।