লক্ষ্মীপুরে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিতে নাকাল জনজীবন
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:৪৫ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে মঙ্গলবার সকাল থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টির রেকর্ড। বিষয়টি জানিয়েছেন রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা মো. সৌরভ হোসেন।
এই কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সক্রিয় মৌসুমি বায়ু ও পূর্ণিমার প্রভাবের কারণে বৃষ্টি হচ্ছে। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি এই মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড।
গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে মারাত্মক সমস্যার মুখে পড়েছেন।
অনেকেই পলিথিনে বই মুড়িয়ে, জুতা হাতে নিয়ে পানি পার হয়েছেন। শহরের বেশিরভাগ রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে শহরের জেবি রোড, কলেজ রোড, বাঞ্ছানগর, মজুপুর ও শমসেরাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে পৌরবাসী।
পৌরবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ নির্মাণ, পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলে শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দ্রুত ড্রেনেজ পরিষ্কার করে পানি সরানো না হলে আরও দুর্ভোগ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৃষ্টি এইভাবে অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কাও করছেন অনেকেই।
স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, যেসব জায়গায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সেখানে পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি সরানোর কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ড্রেনেজ পরিষ্কার করে দ্রুত সময়ে পানি সরানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, সে জন্য শহরের আশপাশে খাল পরিষ্কার করে পানি প্রবাহের কাজ করছে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট মাসের শেষ দিকে প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর ডুবে যায়। পরবর্তীতে ফেনী-নোয়াখালী থেকে বন্যার পানি এসে প্রায় দেড় মাস পানিবন্দি ছিল জেলার কয়েক লাখ মানুষ। তাই এই বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগ থেকে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকারের নির্দেশনায় জেলায় অবস্থিত নদী ও খানে জলাবদ্ধতা নিরসনে অভিযান পরিচালনা করে আসছে স্থানীয় প্রশাসন।