ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ভেঙেছে কুশিয়ারা নদীর বাঁধ, বন্যার শঙ্কা
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৪৩ পিএম, ০২ জুন ২০২৫

সিলেটের জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙে প্রবল স্রোতে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
রোববার (২ জুন) দিবাগত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তিনটি স্থানে ডাইক ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে উপজেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতের পর সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টির প্রকোপ কমেছে। তবে আসামের পাহাড়ি এলাকায় ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ঢলে সিলেটের জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই তিন স্থান দিয়ে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ডুবতে শুরু করেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কুশিয়ারার ডাইকে আরও ভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত ভারত থেকে নেমে আসা বরাক নদীর ঢলে আশঙ্কাজনকভাবে কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার লোকজনের বসতঘরে ইতোমধ্যে পানি ঢুকে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রোববার রাত থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া শুরু করেছেন। উপজেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করেছে।
এ পরিস্থিতিতে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের প্রায় ১শ ফুট ও বাখরশাল গ্রামে ৫০ ফুট, খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকার ৪০ ফুট বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গেছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, প্রশাসন সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ইউএনও।
এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের পাশে কুশিয়ারা নদীর ডাইক দিয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। সোমবার ভোররাতে একই ইউনিয়নের বাখরশাল ও সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামের পাশে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে যায়। এতে আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে।
অন্যদিকে জকিগঞ্জ পৌর শহরের নিকটবর্তী কেছরী গ্রামের পাশে ডাইকের ওপর দিয়ে শহরে ঢুকছে কুশিয়ারার পানি। মাইজকান্দি গ্রামের কাছে ডাইকের একাংশ ধসে পড়েছে। জকিগঞ্জ ইউনিয়নের ছবড়িয়া, সেনাপতিরচক, সুলতানপুর ইউনিয়নের ইছাপুর, খলাছড়া ইউনিয়নের একাধিক স্থান, বারঠাকুরী ইউনিয়নের পিল্লাকান্দি ও আমলশীদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক পয়েন্ট দিয়ে ডাইক উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
সোমবার দুপুরে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত স্থানীয়রা বালু ও মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে ডাইক রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।