জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইমামদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে: ধর্ম উপদেষ্টা


15Feb Naeem/isl.jpg

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ধর্মীয় বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে ইমামরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়নে ইমামদের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইমামদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। তারা হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেটে বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 

'হাওর এলাকার জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইমামদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মসজিদের খুতবায় জীবনঘনিষ্ঠ বিষয় তুলে ধরা প্রয়োজন। মানুষের জীবনে কাজে লাগতে পারে এ ধরনের বিষয় খুতবায় প্রাধান্য দিলে জাতি উপকৃত হবে।

ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ইমামদের কথা মানুষ শোনে। তাদেরকে জনগণ সম্মান করে। কোরআন-হাদীসের আলোক সমসাময়িক বিষয়গুলো উপস্থাপন করলে মানুষ সেটা লুফে নেবে। তিনি খুতবায় অতীত ইতিহাস, ভিত্তিহীন ও বাস্তবতাবিবর্জিত কথাবার্তা পরিহার করার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া তিনি ইমামদেরকে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রণীত প্রাক-খুতবাকে চমৎকার অভিহিত করে ড. খালিদ বলেন, এ খুতবায় জীবনধর্মী ও সমসাময়িক বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এতে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, পিতামাতার প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ খুতবা অনুসরণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার জন্য ইমামদেরকে অনুরোধ জানান। এ ছাড়া তিনি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বনায়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে আলেম-ওলামাদেরকে সোচ্চার ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন।

উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের আওতায় হাওর এলাকার ২৫ হাজার ৮৭০ জন ইমাম, আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে পোস্টার ও প্রাকখুতবা মুদ্রণ ও বিতরণ, সচেতনতামূলক সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি আয়োজন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম, আলেম-ওলামার মাধ্যমে হাওর অঞ্চলের জনগণকে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়ে থাকে। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের সাতটি জেলার ৫৭টি উপজেলায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবীর সভাপতিত্বে এ সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার  মো: রেজাউল করিম, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ মুশফেকুর রহমান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক বজলুর রশীদ। অন্যান্যের মধ্যে  ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মহিউদ্দিন মজুমদার, দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার সম্পাদক মুকতাবিস উন নূর প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। 

এ সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, ইমাম, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে।

পরে উপদেষ্টা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিভাগীয় ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন এবং বাছাইকৃত শ্রেষ্ঠ ইমামদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×