অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না আন্দোলনে আহত অনেকেই
- জয়পুরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৩:৩৮ পিএম, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

জয়পুরহাটের রাকিবুল হাসান রকি। কাজ করতেন নারায়ণগঞ্জ মেট্রো নিটিং এন্ড ডাইং লিমিটেডে। অংশ নিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। জয়পুরহাট শহরের জিরো পয়েন্টে পুলিশের ছোড়া গুলি লাগে চোখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাবা মোকলেছুর রহমানকে হারাতে হয়েছে হোটেলের শ্রমিকের কাজ। চিকিৎসার খরচ বহন করতে না পারায় দৃষ্টি হারানোর পথে রকিবুল হাসান।
রাকিবুলের মত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহতদের অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এখনও হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন আহতরা। শুরুতে চিকিৎসা করালেও এখন পরিবার হয়ে পড়ছে ঋণগ্রস্ত। সরকারি সহায়তার আশায় থাকলেও ফুরাচ্ছে না অপেক্ষা।
আহত রাকিবুল হাসান রকি বলেন, ‘আমার এক চোখ বাদ হয়ে গেছে। আরেক চোখে ১০০ ভাগের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ দেখতে পাব, ১০ ভাগ মাইনাস। আমার ডান চোখটা বাদ হয়ে গেছে। এখন আমাকে যদি বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করত, তাহলে আমি চোখের দৃস্টি ফিরে পেতাম।’
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহত হন নাটোরের ৮১ জন। আহতদের অনেকের অভিযোগ- কেউ এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ খবর নেন নি। অনেকের শরীরে রয়েছে ছররা গুলি।
আন্দোলনে আহত নাটোরের এক যুবক বলেন, ‘আমার গায়ে অনেকগুরো গুলি লাগছে। মোটামুটি ১৪টার মত গুলি লেগেছিল। তার মধ্যে একটা চোখে লাগছে। চোখে লাগার পরে আমি অজ্ঞান হয়ে গেছি।’
আহত আরেক যুবক বলেন, ‘বলতেই হচ্ছে, বলতে বাধ্য হচ্ছি, অর্থের অভাবে এখন যে আমি ঢাকা যাব, সেই অবস্থাটাও এখন আমার নাই।’
এ দিকে, আহতদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগিতার কথা জানান নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এরই মধ্যে আহতদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আহত ও নিহতদের পরিবারের সব ধরনের সহায়তার জন্য নাটোর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করে যাবে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
এ দিকে, ঢাকার বনশ্রীতে বিজিবির বুলেটে পায়ের হাড় ভেঙে যায় চাঁদপুরের নাঈম ইসলামের। বর্তমানে সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য আড়াই লাখ টাকা ঋণ করেছে তার পরিবার।