গাজায় ইসরাইলের বর্বর ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে চবির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:২৮ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ ও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় চবির শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন, চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহমান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চবি তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক ড. মো. শহীদুল হক। বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিশেষ দোয়ায় চবির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
ইয়াহ্ইয়া আখতার সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে শহীদ হওয়া সকল মুসলিম শিশু ও নারী-পুরুষের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং গাজায় নারী, শিশু ও মুসলিম ভাইবোনদের উপর ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান।
তিনি বলেন, “গাজায় যে আক্রমণ চালানো হচ্ছে, তা নতুন কিছু নয়; আমরা বাল্যকাল থেকেই এটি দেখে আসছি। কিন্তু এ আক্রমণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্বের দায়িত্বশীলরা নিরব ভূমিকা পালন করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গাজাবাসীর পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে যে, গাজাবাসীর ওপর ইসরাইলি বাহিনীর হস্তক্ষেপ মানবতা-বিরোধী অপরাধ।”
“শুধু দোয়া করলেই হবে না, আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চরম উন্নতি সাধন ও ঐক্যের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের বুদ্ধি ও জ্ঞানের মাধ্যমে সমাজ গড়ে তুলতে হবে, যাতে রাষ্ট্রও মজবুত হয়। শিক্ষিত ও যোগ্য ছাত্র-শিক্ষক তৈরির মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।”
তিনি ইসরাইলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান।
শামীম উদ্দিন খান বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। মানবসভ্যতায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এমন অত্যাচার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। পৃথিবীর ১৪৮টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও জাতিসংঘ ও ওআইসি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ওআইসি যদি গাজার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এ সংগঠন ভেঙে দেওয়া উচিত।”
তিনি স্বীকৃতিদানকারী ১৪৮টি রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
কামাল উদ্দিন বলেন, “চবি পরিবার আজ মানবাধিকার রক্ষায় একত্রিত হয়েছে।’
এ জন্য তিনি সবাইকে চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
কামাল উদ্দিন বলেন, “আজ আমাদের একমাত্র এজেন্ডা-যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, শিশুদের নৃশংসভাবে হত্যা করবে, তাদের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় অবস্থান নেয়া। একজন শিশুর কী অপরাধ? একজন শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে কোনো নরপিশাচও এ ধরনের নৃশংসতা চালাতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “যারা ইসলামী সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চায়, মানবতাকে ধ্বংস করতে চায়, শিশুকে হত্যা করে রক্ত নিয়ে খেলতে চায়, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আজ আরব বিশ্ব ব্যর্থ। মুসলিম সমাজ বিভক্ত। তারা রাজনৈতিক কৌশলের কারণে প্রতিবাদ করতে পারছে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”