
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো কার্যালয়ে ভয়াবহ হামলার পর ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ১০ মিনিটে এ মামলা দায়ের করা হয় বলে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে জানা গেছে। মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের আওতায় করা হয়েছে।
পূর্বে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা প্রথম আলো কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ চালায়। মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দুষ্কৃতকারীরা দাঙ্গা সৃষ্টি করে কার্যালয়ে প্রবেশ করে লুটপাট ও ক্ষতি করার পাশাপাশি হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেয়, ভয় দেখায় এবং অপরাধের প্রমাণ ধ্বংস করে।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, প্রথম আলোর প্রকাশনা বন্ধ করতে ও অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত করতে হামলাকারীরা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং অনলাইনে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। হামলার সময় শুধুমাত্র লুট করা সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আর মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা।
এজাহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ২০–৩০ জন দুষ্কৃতকারী দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে মিছিল করে কার্যালয়ের সামনে আসে। পুলিশ বাধা দেয়ার পরও তারা কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে উত্তেজনাপূর্ণ স্লোগান দেয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট ছড়ায়।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪০০–৫০০ জন দুষ্কৃতকারী প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে রাত ১১:৫০ মিনিটে ফটকের কাচ ও শাটার ভাঙে, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। তারা আসবাবপত্র, মালপত্র, নথিপত্র নিচে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুষ্কৃতকারীরা বিভিন্ন তলার কমপিউটার, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, লকারে রাখা নগদ টাকা এবং প্রকাশনার বইপত্র লুট করে। পাশাপাশি, তারা ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নষ্ট করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে প্রমাণ নষ্ট করে। ফায়ার সার্ভিসকেও আগুন নেভানোর কাজে বাধা দেয় তারা।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।