
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরের পর বৃহস্পতিবার রাতে হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশের শীর্ষ দুই গণমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। তারা জানিয়েছে, হামলাকারীরা পৌঁছানোর আগেই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সহায়তা চাওয়া হলেও কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি।
হামলার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই প্রতিষ্ঠানের অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে শুক্রবার রাত থেকে ধীরে ধীরে অনলাইন প্রকাশনা আবার চালু করা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোর অনলাইনে ‘প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা নিয়ে প্রথম আলোর বক্তব্য’ শিরোনামে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রথম আলোর অফিস উদ্দেশ্য–প্রণোদিত ও সংগঠিত আক্রমণের শিকার হয়েছে”।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে প্রথম আলো প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরের ইতিহাসে- সংবাদপত্র-জনিত ছুটি ছাড়া, এই প্রথম পত্রিকাটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। একই পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির অনলাইন কার্যক্রমও দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
প্রথম আলো জানায়, ‘সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীন’ পরিবেশে তাদের কর্মীরা ‘জীবন নিয়ে শঙ্কায়’ ছিলেন। তবে দ্রুতই অনলাইন কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক করা হবে এবং আগামীকাল থেকে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশিত হবে বলে জানানো হয়।
হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
এদিকে, হামলার দিনটিকে ‘বাংলাদেশের জন্য এক কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। ডেইলি স্টারের অভিযোগ, ‘সমন্বিত ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হলে’ তাদের ভবনের ছাদে আটকে পড়া কর্মীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ‘চরম অনিশ্চয়তা ও মৃত্যুভয়ে কাটাতে হতো না’।
প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে এই দুই গণমাধ্যম। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা একাধিকবার হামলার হুমকির সম্মুখীন হয়। প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে উগ্রপন্থিদের গরু জবাই ও ভোজের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির ঘটনাও ঘটেছে। তবে এবারই প্রথম এ ধরনের সরাসরি হামলার শিকার হলো প্রতিষ্ঠান দুটি।
এদিকে, হামলার ঘটনার ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে ‘ন্যায়বিচারের’ আশ্বাস দেয় এবং প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ‘পাশে থাকার’ কথা জানায়। তবে কেন হামলা ঠেকানো যায়নি- সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।