
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের চারটি ফ্ল্যাট থেকে জব্দকৃত শতাধিক ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, “নিলামে মালামাল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আদালতের আদেশ মোতাবেক গুলশানের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে থাকা ১৯টি ফ্রিজ, প্রায় ১০০টি এসি, আধুনিক আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যেমন শার্ট-প্যান্ট ও জুতা সহ শতাধিক ধরনের মালামাল ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হয়েছে।
দুদকের চিঠি অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী ও কন্যাদের চার ফ্ল্যাটে থাকা পচনশীল খাদ্যপণ্য, ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কাপড়-চোপড়, তৈজসপত্র, রান্নাঘরের জিনিসপত্রসহ অন্যান্য মালামাল আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ভাণ্ডারে জমা দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর, দুদক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও দুই কন্যার নামে চারটি মামলা করে। মামলায় পরিবারের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। অনুসন্ধানে দুদক তাদের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাব শনাক্ত করে আদালতের আদেশে জব্দ ও অবরুদ্ধ করে।
গত ২৩ মে, আদালত বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিল ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন। এরপর ২৬ মে, তাদের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার এবং গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, যাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদও ছিলেন।