
রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পড়ার পর এবার আমেরিকার তেলের দিকেই ঝুঁকছে ভারত। চলতি মাসে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে ইতিহাস গড়েছে—এটি ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে।
২০২০ সালে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই দেশটি নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত রাখতে মার্কিন তেল আমদানি ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকে।
এনার্জি কনসালটিং প্রতিষ্ঠান কেপলার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত দৈনিক ৫ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে। মাস শেষে এই সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার ব্যারেল ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী নভেম্বর মাসে এই পরিমাণ দৈনিক ৪ থেকে ৪.৫ লাখ ব্যারেলের মধ্যে থাকতে পারে।
কেপলারের প্রধান গবেষণা বিশ্লেষক সুমিত রিতোলিয়া বলেন, “অর্থনৈতিক কারণেই ভারত মার্কিন তেল আমদানি বাড়িয়েছে। ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই তেলের দামের ব্যবধান, মার্কিন তেলের তুলনামূলক কম মূল্য এবং চীনের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভারতীয় শোধনাগারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের তেলকে প্রাধান্য দিচ্ছে।”
তবে মার্কিন তেল কেনা বেড়েছে বটে, কিন্তু রাশিয়া থেকে আমদানি একেবারে বন্ধ করেনি ভারত। বর্তমানে রাশিয়াই ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী, যা মোট আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এরপরই রয়েছে ইরাক এবং সৌদি আরব।
ভারতীয় সরকারি ও তেল শিল্প সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশটির শোধনাগারগুলো মার্কিন মিডল্যান্ড ডব্লিউটিআই ও মার্স গ্রেড তেল কেনা বাড়িয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো সরবরাহ উৎসে বৈচিত্র্য আনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার বার্তা দেওয়া।
রাশিয়ার তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট ও লুকঅয়েল-এর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হওয়ায় ভারতের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকদের মত। তবে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত এখনো রাশিয়ার ওই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকেই তেল কিনছে।