এনসিপি থেকে আরও দুই নেতার পদত্যাগ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) থেকে আরও দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তর অঞ্চল) হানিফ খান সজিব ও যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুজ জাহের। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বরাবর দুজনে পৃথক পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে হানিফ খান সজিব লেখেন, ‘আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছি।’ আব্দুজ জাহের তার পদত্যাগপত্রে লেখেন, ‘আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছি।’এর আগে বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবু হানিফ। এনসিপির আহ্বায়ক/সদস্য সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়ে আবু হানিফ লেখেন, ‘আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছি।’ প্রসঙ্গত, আবু হানিফ গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এনসিপির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হয়। এরপর হানিফসহ নুরুল হকের গণ অধিকার পরিষদের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী এনসিপিতে যোগ দেন।

বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে বিএনপির ইফতার

ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতারে ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিজ, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক টেবিলে বসে ইফতার করেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল উলিয়াম মিলার ছাড়াও রাশিয়া, জাপান, কানাডা, সংযুক্ত আবর আমিরাত, নরওয়ে, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনীতিকরাও ছিলেন এই আয়োজনে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইফতারে কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান। ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন, সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবতা সমুন্নত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্য কেবল তার জনগণই নির্ধারণ করবে।’ তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্বব্যাপী বন্ধু এবং অংশীদাররা আমাদের সম্মিলিত বিকাশের জন্য ‘হস্তক্ষেপহীন’, ‘সার্বভৌমত্ব’ এবং ‘বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান’ এর বিশ্বব্যাপী নিয়মগুলোকে সম্মান করবে। গণতন্ত্র এবং উদার বাণিজ্য অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমাদের অঞ্চলের সম্মিলিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই এবং আগামী দিনে আমরা আরও বেশি করে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য উন্মুখ। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ভয়, নিপীড়ন এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তামুক্ত একটি ভবিষ্যতের প্রত্যাশা করে। সামনের পথ স্পষ্ট, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন। ইফতারের আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার, জহির উদ্দিন স্বপন, তানভীরুল ইসলাম, এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শামা ওবায়েদ, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, মাহমুদা হাবিবা, ফারজানা শারমিন পুতুল, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ইফতারে অংশ নেন। এ ছাড়া ছিলেন অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, শফিক রেহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মনিরুজ্জামান, দেবপ্রিয় ভট্টচার্য, বদিউল আলম মজুমদার, কামাল আহমেদ, বোরহান উদ্দিন খান, তোফায়েল আহমেদ, শহীদউজ জামান, জন রোজারিও, সম্পাদকদের মধ্যে মতিউর রহমান (প্রথম আলো), মাহফুজ আনাম (ডেইলি স্টার), তৌফিক ইমরোজ খালিদী (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম), এএমএম বাহাউদ্দিন (দৈনিক ইনকিলাব),আবদুল হাই শিকদার (দৈনিক যুগান্তর), কামাল উদ্দিন সবুজ (দেশ রূপান্তর), হাসান হাফিজ (কালের কণ্ঠ), রেজাউল করীম লোটাস (ডেইলি সান) প্রমুখ ছিলেন। ইফতার এবং মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।

এনসিপি থেকে পদত্যাগ করে গণঅধিকারে ফিরলেন হানিফ

পদত্যাগ করে আবারও গণঅধিকার পরিষদে ফিরেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবু হানিফ। বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) এনসিপির আহ্বায়ক/সদস্য সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তিনি। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছি।’ হানিফের পদত্যাগ ও গণঅধিকারে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করে দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিলউজ্জামান শাকিল বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টিতে আবু হানিফের যোগদানের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। ছেলে ঘরে ফিরে আসছে। আবু হানিফের ফিরে আসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, ‘বাকি যারা গেছে তারাও গণঅধিকার পরিষদের ফিরে আসবে। গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনাই গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙতে পারে নাই। অন্য কেউ গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙতে পারবে না।’

অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমান ও মামুনের সাজা বাতিল

অর্থপাচার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাজা বাতিলের আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে এই আদেশ দেন আদালত।এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ, সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ৭ বছরের সাজার রায় স্থগিত করেন। এ মামলার যত কথা:তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে কয়টি দুর্নীতির মামলা হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত অর্থ পাচারের এ মামলাটি। এ মামলায় বিচারিক আদালতে খালাস পান তারেক রহমান। যে বিচারক এ মামলায় তাকে খালাস দেন ওই বিচারককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয় এক সময়। পরে এ খালাসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এখানে এসে তারেক রহমানকে দেয়া হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা। তারেক রহমানের আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্য মামলার সঙ্গে অর্থ পাচার মামলায় আইনি পদক্ষেপ নেন তারেক রহমানের আইনজীবীরা। খালাস চেয়ে আপিলের অনুমতি চান ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনও। যার শুনানি হয় আপিল বিভাগে। শুনানি শেষে দুইজনেরই সাজার রায় স্থগিত করেন সর্বোচ্চ আদালত।’সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আওয়ামী লীগ আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮৪ টি মামলা হয়। এরমধ্যে প্রায় ৪০টি মামলায় জিতেছেন তারেক রহমান। দণ্ড হওয়া আরও ৩ মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।

অ্যাডভোকেট মাসুদ তালুকদারের দলীয় সব পদ স্থগিত

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারের দলীয় প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারের দলীয় প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে।

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠন বিলুপ্ত

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু এবং মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হাছিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের (এইবি) বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। খুব শিগগিরই অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়াও আহ্বায়ক রাশিদুল হাসান হারুন এবং সদস্য সচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এএবি) বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ফখরুলকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন রিজভী

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে গিয়ে মহাসচিবের সঙ্গে দেখা করেন এবং স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন। এ সময় তা সঙ্গে ছিলেন দলের সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল ইসলাম প্রমুখ। জানা যায়, গত সপ্তাহে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলায় রাতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে প্রচুর ধুলাবালু থাকার কারণে অসুস্থ অনুভব করছিলেন বিএনপি মহাসচিব। দুই দিন যাবৎ খারাপ লাগছিল তার। রোববার চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান নিয়ে যা বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনের পর দলটির ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সেই সমালোচনার জবাবে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বললেন, বাংলাদেশের জনগণ মাটি এবং মানুষের যারা রয়েছেন, তারা একদিন আকাশের মধ্যে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ লিখে দেবেন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজনৈতিক দল গঠনের পর প্রথম দলীয় কর্মসূচিতে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি এবং রায়েরবাজার কবরস্থানে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের পাটওয়ারী আরও বলেন, তারা ভবিষ্যতের গণপরিষদের নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন, পার্লামেন্টারি বডি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, লোকাল ইলেকশন নিয়েও চিন্তাভাবনা করছেন। এসময় তিনি উল্লেখ করেন, একটি ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে এখানে একত্রিত হয়েছি আমরা।

নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে প্রয়োজন নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন: নাহিদ ইসলাম

নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পুরোনো সংবিধান এবং শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়।’ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে দেখতে চান তারা। সেইসঙ্গে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা দেশের মাটিতে করতে হবে বলেও জানান তিনি। এসময় এনসিপির আহ্বায়ক জানান, সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে তাদের দল। এ ছাড়া শর্ত পূরণ করে নিবন্ধনের জন্য শিগগিরি আবেদন করা হবে নির্বাচন কমিশনে। তিনি আরও বলেন, এনসিপির প্রথম লক্ষ্য তৃণমূলে দলীয় কার্যক্রম বিস্তৃত করা। এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তারা। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় সংগঠনটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন ছাড়াও নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, আব্দুল হান্নান মাসউদ, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম, তাসনিম যারা, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নিজের দল বিলুপ্ত করে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন ভিপি নুর!

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) নুরুল হক নুরের যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ নিয়ে মন্তব্য করেছেন পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। সম্প্রতি দেশের এক বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে তিনি এ কথা জানান। হান্নান মাসউদ বলেন, ‘নুরুল হক নুরু ভাই নিজেই তার দল বিলুপ্ত করে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি যাদের নিয়ে নুরুল হক সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাদের অধিকাংশই আমাদের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং পার্টিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।’ হান্নান মাসউদ আরো বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটিটা দেখেছি, কোয়ান্টিটিটা দেখিনি। আমরা নুরুল হক ভাইয়ের দলের বেশ কিছু সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। নুরু ভাই নিজেই তার দল বিলুপ্ত করার পর আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছেন। আমরা আদর্শিকভাবে অনেক দিক থেকে মিল রেখেছি, তবে আপাতত অন্য দল বিলুপ্ত করে আসা নিয়ে আমাদের কিছু দ্বিধা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে কেন্দ্রভিত্তিক কাজ করতে পারি।’ তিনি আরো বলেন, ‘নুরুল হক ভাই হঠাৎ করে মিডিয়াতে এসে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, যা আমাদের কাছে ঠিক ভালো লাগেনি। আমরা বিশ্বাস করি, এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তবে আলাপ-আলোচনা চলছে এবং যদি নুরুল হক চান, তিনি সহজেই আমাদের দলে আসতে পারবেন, অথবা আমরা তার দলে যোগ দিতে পারি যদি তার দল এ সুযোগ দেয়।’ পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের গাড়ি সরবরাহ বিষয়ে হান্নান মাসউদ বলেন, ‘পিরোজপুরের ডিসিরা আমাদের সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য গাড়ি সরবরাহ করেছেন, কিন্তু বিষয়টি সঠিকভাবে হয়নি। আমরা এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘কিছু স্থানীয় ব্যক্তির চাপের কারণে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তবে এটি সামান্য একটি ঘটনা। আমরা এ ঘটনায় জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের সময় এ ধরনের সমস্যা আসলে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আমরা এমন পরিস্থিতিতে আমাদের দলের প্রতি সমর্থন চাইছি এবং যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের উপযুক্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।’

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করবে এনসিপি

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাভারে দলের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ১০টায় রায়েরবাজারে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জেয়ারত করবেন তারা। সোমবার (৩ মার্চ )এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির নেতৃবৃন্দ মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতৃবৃন্দ রাজধানীর রায়েরবাজারে সকাল ১০টায় চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করবেন। দুইটি কর্মসূচিতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক জনাব মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সদস্যবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।’ এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর ২১৭ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। চারটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে সাংগঠনিক পরিধি বিস্তৃতি ঘটাবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির একাধিক নেতা। দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দীন সিফাত বলেন, ‘আমাদের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির চারটি প্রধান কাজ হবে- সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণয়নের কাজ করা। এর পাশাপাশি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা এবং সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম পরিচালনা করা।’

নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে: আমির খসরু

নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সোমবার (৩ মার্চ) সকালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের নিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সকালে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ আজম খান, কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুস সালেকীন, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘কেন নির্বাচন দিচ্ছে না সেই উত্তর তো তারা দিতে পারবেন। সেই উত্তর তো আমি দিতে পারব না। কিন্তু সেটা যত দেরি করবে দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া দেশের দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। একেকটা দিন যাচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যতিত, একেকটা সমস্যা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো গণতান্ত্রিক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহি দায়বদ্ধ সরকার গঠন করে যাদের পলিটিক্যাল ওয়েট থাকবে, যাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি থাকবে, যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে তারাই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।’ আমির খসরু বলেন, ‘পুলিশ, র‌্যাব, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সমর্থন ব্যতিত আপনি কোনো কিছুর সমাধান করতে পারবেন না। একটি জনগণ সমর্থিত সরকার যখন দেশ পরিচালনা করে সেই সমর্থনকে নিয়েই কিন্তু দেশ পরিচালিত হয়, সেই সমর্থনকে নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে, দেশের সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করে। সেটা আজকে অনুপস্থিত, সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে আমাদের তুলে ধরতে হবে।’ নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব কিনা জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, ‘নির্বাচন জুন মাসের মধ্যে সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করছে না। নির্বাচনের বিষয়টা তো সরকারকে বলতে হবে। সরকারের পলিটিক্যাল উইল থাকতে হবে, ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেটার অপেক্ষায় জনগণ আছে। আর বাংলাদেশের জনগণ ছাড়াও যারা স্টেক হোল্ডার আছে দেশের ভেতরে দেশের বাইরে। তারা সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করছে কারণ তাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, নির্বাচিত সরকারের অধীনে হলে তারা শর্ট টার্ম-মিড টার্ম-লং টার্ম যে সব প্ল্যান-প্রোগ্রাম তাদের আছে তা তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে। এ জন্য তারাও অপেক্ষা করছে।’

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি মহাসচিব

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৩ মার্চ) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য খায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত সপ্তাহে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বই মেলায় রাতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ছিলো, সেখানে প্রচুর ধুলাবালি থাকার কারণে অসুস্থ অনুভব করছিলেন। তারপর থেকে গত দুদিন যাবত খারাপ অনুভব করলে রোববার চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বিপ্লবোত্তর যা কিছু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত :  ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিপ্লবোত্তর অনেক কিছু হবে বলে কল্পকাহিনী প্রচার করা হলেও তার এক ভাগও হয়নি। এসময়ে যতটুকু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। রোববার (২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১৪ এর গ্র্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে ঢাকা-১৫ আসনের উলামায়ে কেরাম ও এতিমদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি। তারা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। তবে বিপ্লবোত্তর এসময়ে যতটুকু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা তা-ও সমর্থন করি না। মূলত, এদেশে কোনো বৈষম্যের স্থান দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আলেম ও তালেব উভয়ই সুসংবাদপ্রাপ্ত। কারণ, হাদিসে রাসুল (সা.)-এ বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যিনি নিজে কোরআন শিক্ষা করেন এবং অন্যকে শিক্ষা দেন’। আমরা আজ তাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে গর্ববোধ করছি। তিনি দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে দেশের আলেম সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। জামায়াত আমির বলেন, দ্বীনই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য। দেশে দ্বীনের শিক্ষা যত সম্প্রসারিত হবে ততই সমাজ আলোকিত হয়ে উঠবে। দ্বীনের শিক্ষা সংকুচিত হলে নেমে আসবে অন্ধকার। যার প্রমাণ হচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন-দুঃশাসন। তিনি নিজের গ্রেফতারের দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল গভীর রাতে। কিন্তু আমাকে আয়নাঘরে রাখা না হলেও আমি তা দেখেছি। আমাকে এমনভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল যেন তারা কোনো ভয়ঙ্কর অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম কয়েকদিন কেরানীগঞ্জ কারাগারে রাখার পর আমিসহ ৩৮ জনকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গাড়িতে আমি ছাড়া প্রত্যেকের হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে বেড়ি পরা দেখে আমি কেঁদেছি। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেককে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য রমজান মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালন করতে হবে। এদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মারা গেছেন

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক শাহিদা রফিক ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। রোববার (২ মার্চ) সকালে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে কোথায় কখন তার জানাজা ও দাফন হবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি শায়রুল কবির খান। শাহিদা রফিক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রী। রফিকুল ইসলাম মিয়া নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে শয্যাশায়ী। তবে তার স্ত্রী এত দিন সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদিত হয়েছে। রোববার (২ মার্চ) ভোররাতে পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। বার্তায় বলা হয়, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা মুক্ত হয়েছে। তবে শহীদ মিনারে ঘোষিত অভ্যুত্থানের এক দফা তথা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে এই জনপদের মানুষ ইতিহাসের নানান সময়ে নিজেদের হাজির করেছে। প্রায় ২০০ বছরের উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা ১৯৪৭ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করি। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র এই জনপদের মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষকে ধারণ ও বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বার্তায় আরও বলা হয়, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকে এই জনপদের মানুষ ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত মুজিববাদী সংবিধানের মধ্য দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছে। যার ফলে এ দেশের নাগরিকরা ইতিহাসের বিভিন্ন পরিক্রমায় বাকশাল, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদের সকল উপাদান ও কাঠামোকে বিলোপ করতে এবং এই জনপদের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আমরা, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা, ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেছি। জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম বীর যোদ্ধা শহীদ ইসমাঈলের বোন মিম আক্তার জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। ওই আহ্বায়ক কমিটি (আংশিক) আগামী ১ বছরের মধ্যে এই রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণয়ন, কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কমিটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, এহতেশাম হক ও হাসান আলী। সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), মো. মাহিন সরকার, মো. নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসেইন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তর), আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ফরিদুল হক, মো: ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মো. মঈনুল ইসলাম (তুহিন), মুশফিক উস সালেহীন, ডা. জাহেদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, মোশফিকুর রহমান জোহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আফসানা ছপা, আহনাফ সাইদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, গাজী সালাউদ্দীন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসীন রিয়াজ ও প্রীতম দাশ। মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাছের খান, সাকিব মাহদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, হানিফ খান সজীব, আবু সাঈদ লিয়ন। সংগঠক রাসেল আহমেদ, ইমরান ইমন, ফরহাদ সোহেল, রফিকুল ইসলাম আইনী, মোস্তাক আহমেদ শিশির, আজাদ খান ভাসানী, প্রীতম সোহাগ, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, এম এম শোয়াইব, নাহিদ উদ্দিন তারেক, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, অ্যাডভোকেট শিরীন আক্তার শেলী, আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ আল মুহিম, নাজমুল হাসান সোহাগ, খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল। মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোল্যা রহমাতুল্লাহ্, এস এম শাহরিয়ার, মেজবাহ কামাল মুন্না, জোবাইরুল হাসান আরিফ ও ইমন সৈয়দ। সংগঠক আকরাম হোসাইন রাজ, হামযা ইবনে মাহবুব, ওয়াহিদুজ্জামান, আসাদ বিন রনি, মোহাম্মাদ রাকিব, আরমান হোসাইন, মো. রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা, শওকত আলী, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন, মুনতাসির মাহমুদ, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাকিব শাহরিয়ার, আজিজুর রহমান রিজভী, আব্দুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ, নয়ন আহমেদ, কাউছার হাবিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, মাও. সানাউল্লাহ খান, আরিফুল ইসলাম, নফিউল ইসলাম ও মো. রাকিব হোসেন। মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম (যুব), ডা. মো. আব্দুল আহাদ (চিকিৎসা), মাজহারুল ইসলাম ফকির (শ্রমিক), দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, কৃষিবিদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, মেহেরাব সিফাত, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনুদ্দিন, খান মুহাম্মদ মুরসালীন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, নাভিদ নওরোজ শাহ, তুহিন মাহমুদ, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), সাগর বড়ুয়া, রাফিদ এম ভূঁইয়া ও মাহবুব আলম। সদস্য সানজিদা খান দীপ্তি (শহীদ আনাসের মা), খোকন চন্দ্র বর্মন (আহত), মো. ফাহিম রহমান খান পাঠান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (সন্দ্বীপ), ঋআজ মোরশেদ, ইমরান নাঈম, মশিউর আমিন শুভ, আল আমিন শুভ, প্লাবন তারিক, ওমর ফারুক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, ফিহাদুর রহমান দিবস, মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক, মো. আব্দুল মুনঈম, রকিব মাসুদ ইনজামুল হক রামিম, সৈয়দা নীলিমা দোলা, এস আই শাহীন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, তানহা শান্তা, ডা. মশিউর রহমান, ইমরান শাহরিয়ার, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, আব্দুল্লাহিল মামুন নিলয়, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, আরজু নায়েম, ডা. মনিরুজ্জামান, তাওহিদ তানজিম, মোহাম্মদ উসামা, মাহবুব-ই-খোদা, তারিক আদনান মুন, নাহিদা বুশরা, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, মারজুক আহমেদ, নীলা আফরোজ, নূরতাজ আরা ঐশী, সাইয়েদ জামিল, শেখ খায়রুল কবির আহমেদ, রফিকুল ইসলাম কনক, মীর হাবীব আল মানজুর, মো. ইমরান হোসেন, মো. আরিফুল দাড়িয়া, মো. ইনজামুল হক, আবু সাঈদ মুসা, ডা. আতাউর রহমান রাজিব, সালমান জাভেদ, ইমামুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডা. সাবরিনা মনসুর, অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ছেফায়েত উল্লাহ, আহমেদুর রহমান তনু, দিদার শাহ, রাদিথ বিন জামান, ফারিবা হায়দার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া জিসান, সোহেল রানা, রিদওয়ান হাসান, হাসিব আর রহমান, ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, জাওয়াদুল করিম, আল আমিন টুটুল, ইসমাইল হোসেন সিরাজি, ইফতেখারুল ইসলাম, হাফসা জাহান, জায়েদ বিন নাসের, মামুন তুষার, ওমর ফারুক, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, মো. হিফজুর রহমান বকুল, আসিফ মোস্তফা জামাল, জোবায়ের আলম, মো. সালাউদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল।

উর্দুভাষীদের নামে ঢালাও মামলা, রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি মান্না ও ফুয়াদের

উর্দুভাষীদের নামে ঢালাও মামলার প্রতিবাদে রাজপথে থাকবেন বলে জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। গণফোরাম সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজও এতে সমর্থন জানিয়েছেন। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট (ইউএসপিওয়াইআরএম) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ ঘোষণা দেন। ‘উর্দুভাষী সংখ্যালঘু ও তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে কর্মসূচি নির্ধারণ শীর্ষক’ ওই বৈঠকে কঠোর কর্মসূচির কথা জানান উর্দুভাষী নেতারা। ঢালাও মামলা প্রত্যাহার না করলে আত্মাহুতি কর্মসূচি ঘোষণা করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু। তবে এ ধরনের কর্মসূচি না দিয়ে রাজপথে থাকার পরামর্শ দেন মাহমুদুর রহমান মান্না ও আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ অন্য অতিথিরা। তারা বলেন, আত্মাহুতি কোনো সমাধানের পথ নয়। ঢালাও মামলার প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উর্দুভাষীরা যদি এই বিষয়ে আন্দোলনের ডাক দেন, তাহলে তাদের সঙ্গে নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, এবি পার্টি, বাসদসহ সব রাজনৈতিক দল রাজপথে নামবে। মান্না বলেন, ফাক্কু ও তাঁর সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ২০১২ সাল থেকে আমাদের সঙ্গে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। এজন্য তখন তিনি হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। চব্বিশের আন্দোলনের পর ফাক্কু ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হবেন, এটা ভাবতেও অবাক লাগে। যত দ্রুত সম্ভব এসব মামলার তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আত্মহত্যার মতো কর্মসূচি দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে মাথা নত করা যাবে না। এসব মামলা প্রত্যাহার করতে সরকার ও প্রশাসনকে বাধ্য করতে হবে। এজন্য তীব্র আন্দোলন করতে হবে। গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, মোহাজির রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মুভমেন্ট (এমআরডিএম) সভাপতি ওয়াসি আলম বশির প্রমুখ।

গুটি কয়েক ছাত্রনেতা সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে, অভিযোগ নুরের

গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, আজ তাতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। শনিবার (১ মার্চ) বিকালে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় ‘গুটি কয়েক ছাত্রনেতা সরকারকে নিয়ন্ত্রণ ও মন্ত্রণালয়ের নানা কাজে অযাচিত হস্তক্ষেপ’ করছে বলে অভিযোগ তোলেন নুরুল হক। পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদে থেকে দল গঠনে কাজ না করে দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান ডাকসুর সাবেক ভিপি। নুরুল হক নুর আরও অভিযোগ করেন, ‘নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকায় এসেছে ছাত্র-জনতা, যা কাম্য না।’ পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে আমন্ত্রণ না জানানোর সমালোচনা করেন তিনি। নুর জানান, ছাত্রনেতারা সরকারে থাকায় সরকারের নানা কাজে বিলম্ব হচ্ছে। এ জন্য ৬ মাসে সরকারের কোন উন্নতি নেই বলে দাবি তার। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন, শহীদ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন, গণহত্যার বিচার করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

১২ দলীয় জোট বিলুপ্ত ঘোষণা

১২ দলীয় জোট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেছে জোটের প্রধান শরীক জাতীয় পার্টি (জাফর)। একই সঙ্গে ১২ দলীয় জোট বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (১ মার্চ) জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যানের খিলগাঁও কার্যালয়ে দলটির নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১২ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে গেলেও বিএনপির নেতৃত্বে আগামী দিনে সব আন্দোলন সংগ্রামে জাতীয় পার্টি (জাফর) অংশীজন হিসেবে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম জোরদার করার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক সাংসদ আহসান হাবীব লিংকন, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সাংসদ নোয়াব আলী আব্বাস খান, সাবেক সাংসদ হোসনে আরা আহসান, সেলিম মাস্টার, মোস্তফা হায়দার জুবায়ের, রুহুল আমিন, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীম, কাজী মো. নজরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন মিয়া, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক লোকমান পাটোয়ারী, দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, ছাত্র সমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, যুব সংহতির আহ্বায়ক রইস উদ্দিন, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন সরকার প্রমুখ। এ বিষয়ে আহসান হাবিব লিংকন বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে ১২ দলীয় জোটের কিছু নামসর্বস্ব নেতার কার্যকলাপ নিয়ে জাতীয় পার্টি (জাফর) নেতৃবৃন্দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যার পরিপেক্ষিতে আজ শনিবার (১ মার্চ) খিলগাঁওয়ে আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। অংশগ্রহণ করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক সাংসদসহ নির্বাহী কমিটির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ।’ ‘এতে সিদ্ধান্ত হয় আজকে থেকে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোট থেকে জাতীয় পার্টি (জাফর) বেরিয়ে এককভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একই সাথে বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে বেগবান করার জন্য মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর) রাজপথে লড়াই অব্যাহত রাখবে। আজ থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ দলীয় জোটের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিলাম।’ খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, শনিবার অনুষ্ঠিত দলের জরুরি সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) নেতৃবৃন্দ ১২ দলীয় জোটের দীর্ঘ দিনের কার্যকলাপ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে জোটের কয়েকজন নামসর্বস্ব নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাফর) নেতৃবৃন্দরা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় নেতারা দলের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারকে ১২ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তারপর সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ দলীয় জোট বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার।

এসি বিস্ফোরণকে ‘বোমা হামলা’ উল্লেখ করার পর দুঃখ প্রকাশ বিএনপির

বিসিএস প্রশাসন ভবনে এসি বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘বোমা হামলা’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছে দলটি। শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় পাঠানো বিবৃতিতে এ দুঃখ প্রকাশ করে বিএনপি। দলের সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ সমিতির ভবনে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা বোমা হামলায় একজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত উল্লেখ করে আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে যে বিবৃতিটি দিয়েছেন, তা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।’ ‘প্রকৃতপক্ষে সেখানে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা কোনো বোমা হামলা সংঘটিত হয়নি। হতাহতের যে ঘটনা ঘটেছে, তা এসি বিস্ফোরণে হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বিবৃতি দেওয়ার জন্য বিএনপি দুঃখ প্রকাশ করছে।’

সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি আরেক ষড়যন্ত্র: সালাহ উদ্দিন

নয়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ও ‘গণপরিষদ নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘যারা সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদের বিষয় সামনে আনছে- এটা হয় তারা বুঝে না অথবা বুঝে; এই রাষ্ট্রব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মধ্যে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র আছে।’ শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনে’র (এনআরএফ) উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সৈয়দ আবদাল আহমেদে সম্পাদিত ‘নন্দিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে সালাহ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। এনসিপির নবযাত্রাকে স্বাগতম জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই দলটি লক্ষ্যের বিষয়ে বলেছে- ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠায় গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন। এটা নিয়ে সমালোচনা করতে চাই না। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই তার নিজস্ব কর্মপন্থা, আদর্শ থাকবে, গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্রে এ রকম ঘোষণা থাকে। কেউ সমাজতন্ত্র চায়, কেউ অন্যকিছু, কেউ হয়ত ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এরকম অনেক কিছু থাকে; বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে।’ সালাহ উদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, ‘নতুন বন্ধুদের বলতে চাই, আমাদের বর্তমান রিপাবলিক কি অসুস্থ হয়ে গেছে? সেকেন্ড রিপাবলিক কখন হয়? রিপাবলিক হচ্ছে- যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তাদের একটা নমিন্যাল অথবা ‘ইলেক্টেড হেড দি স্টেট’ থাকবে। সেটা কি আমাদের নেই?’ গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এনসিপি নতুন সংবিধানের জন্য কথা বলছে। নতুন সংবিধান যেটা হবে সেটা সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাপক সংশোধনী প্রস্তাব আপনারা তো দিয়েছেন সংস্কার কমিশনে, আমরাও দিয়েছি। সেই সংবিধানের নাম যদি আপনারা নতুন সংবিধান দেন, ঠিক আছে। কিন্তু গণপরিষদ কেনো বললেন- তা বুঝলাম না। যে সময়ে দেশে কোনো সংবিধান থাকে না, একটা নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন গণপরিষদের প্রয়োজন হয়। গণপরিষদের সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করেন। যে সংবিধানের ভিত্তিতে পরে পার্লামেন্ট ইলেকশন হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য আমরা কি নতুনভাবে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। রাষ্ট্র তো স্বাধীন আছে। আমাদের যেভাবেই হোক একটা সংবিধান আছে। এটার ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন আছে। যে সংবিধানকে শেখ হাসিনা দলীয়করণ করে গণতন্ত্রের বিপক্ষে নিজেদের পক্ষে সাজিয়েছিলেন সেজন্য সেটার সংস্কার দরকার।’ রোডম্যাপের জন্য এক মাসের আল্টিমেটাম: নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনাকে অতি শিগগিরই জাতীয় সংসদের নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে হবে। যদি আপনি কোনো বাহানায় এই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেন, তাহলে সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো বসে সিদ্ধান্ত নেবো। আমাদেরকে পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে, আমরা কোন প্রক্রিয়ায় এগোব।’ ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে টিকিয়ে রাখতে হবে: সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা দলীয় ঘোষণাপত্রে সেকেন্ড রিপাবলিক আর গণপরিষদের মধ্যে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে চান, সেটা আপনারা যখন পারবেন করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণে আর যাতে কোনো বিলম্ব না হয়, সেজন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে- এটাই আমাদের আহ্বান। যে কোনো মূল্যে রাজপথে গড়ে উঠা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং এনআরএফের সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাবির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, স্বেচছাসেবকবিষয়ক সহ-সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সহধর্মিণী বিথীকা বিনতে হোসাইন, এনআরএফের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বক্তব্য দেন।

দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আহ্বান নুরের

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে দুই উপদেষ্টাসহ (আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম) সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংশ্লিষ্ট ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর। শনিবার (১ মার্চ) বিজয়নগর আল রাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে নুর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড় দশকের ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে একটি অর্ন্তভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি হলেও দেশি-বিদেশি অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের কারণে সেটি হয়নি। একটি নির্দিষ্ট বলয় কেন্দ্রিক সরকার গঠিত হয়েছে। যার ফলে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিলো আজ তাতে ফাটল ধরেছে, বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। যা এই মুহূর্তে জাতির জন্য কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।’ গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘এ অবস্থায় সরকারের থাকা ৩ ছাত্র উপদেষ্টাদের মধ্যে ১ জন পদত্যাগ করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণকে সবসময় উৎসাহিত করে, নতুন দলকে স্বাগত জানায়। তবে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গুটি কয়েক ছাত্রনেতা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অযাচিত হস্তক্ষেপে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জনগণের মধ্যে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। যেহেতু আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করেছে সেহেতু সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা ও জনগণসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আস্থা ধরে রাখতে সরকারে থাকা অন্য দুই ছাত্র উপদেষ্টাসহ সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী সকল ছাত্রদের পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।’ গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক নতুন রাজনীতি ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তার বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার জরুরি বলে উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘আন্দোলন কেন্দ্রিক সেন্টিমিটারের জায়গায় থেকেও ছাত্রনেতৃবৃন্দ যদিও পুরোনো পথেই হাঁটে সেটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য গত ৬ মাস সেটিই অবলোকন করা গেছে। আন্দোলন কেন্দ্রিক পরিচিত ছাত্রনেতৃবৃন্দের তদবির, নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অসংখ্য ঘটনা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানেও জেলা প্রশাসকের নোটিশে ঢাকার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মতো বিষয় দেখা গেছে, গাড়ি সরবরাহে মালিক সমিতি ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বা জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো একক সংগঠন বা নেতৃবৃন্দের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সময়োপযোগী পদক্ষেপ, ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। কাজেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের আওয়ামী চেতনার বয়ানের মতো কোনো অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক ন্যারেটিভ তৈরি না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ সংবাদ সম্মেলনে থেকে বেশ কয়েক দাবি তুলে ধরা হয়- এগুলো হল জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন। আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ফারুক হাসান, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতিমা তাসনীম, জসিম উদ্দিন আকাশ, মাহফুজুর রহমান খান।

‘ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী কিছুই নতুন রাজনীতিতে জায়গা পাবে না’

ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী কোনোকিছুই নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাছে জায়গা পাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। শনিবার (০১ মার্চ) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘রাজনীতির আগেও আমার পরিচয়- আমি একজন মুসলমান। আমি আমার এই পরিচয় ধারণ করি, সবসময় করেই যাবো। আমার বিশ্বাসকে কিংবা আমার দেশের মানুষের বিশ্বাসকে আঘাত করে কোনো রাজনীতি আমি কখনও করবো না। স্পষ্ট কণ্ঠে জানিয়ে দিতে চাই, ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী কিছুই আমার বা আমাদের রাজনীতিতে কখনও জায়গা পাবে না।’ তিনি আরও লিখেন, ‘যা হয়েছে, সেটা ছিলো একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। আমরা নির্ভুল নই। কোনো ভুল করলে আপনারা আমাদের নিজের ভাই মনে করে ভুল ধরিয়ে দেবেন এবং কোনো প্রকার 'যদি', ‘কিন্তু’, 'অথবা' ব্যাতিত আমরা আমাদের ভুল সংশোধন করে নিবো। এই সংশোধন করার মানসিকতা আমাদের সবসময় ছিলো, আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।’ উল্লেখ্য, সদ্য আত্মপ্রকাশ পাওয়া রাজনৈতিক দল এনসিপিতে একজন সমকামিতা সমর্থক থাকার অভিযোগ উঠলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সমালোচনা সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে সারজিস আলম এই ফেসবুক বার্তা দিয়েছেন।

‘যদি’ ‘কিন্তু’ ‘অথবা’ ছাড়াই ভুল সংশোধন করে নেব: হাসনাত আবদুল্লাহ

অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আত্মপ্রকাশ করেছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া দলটির নেতারা ঘোষণা করেছেন, তারা অন্য কোনো দেশ নয়, তারা হবেন বাংলাদেশপন্থি। দল গঠনের পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, রাজনীতির আগেও আমার পরিচয় আমি একজন মুসলমান। আমি আমার এই পরিচয় ধারণ করি, সবসময় করেই যাবো। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমার বিশ্বাস কিংবা আমার দেশের মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করে কোনো রাজনীতি আমি কখনও করবো না। স্পষ্ট কণ্ঠে জানিয়ে দিতে চাই, ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি কিছুই আমার বা আমাদের রাজনীতিতে কখনও জায়গা পাবে না। নিজেদের ভুলের দায় স্বীকার করে তিনি আরও লেখেন, যা হয়েছে, সেটা ছিল একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। আমরা নির্ভুল নই। কোনও ভুল করলে আপনারা আমাদের নিজের ভাই মনে করে ভুল ধরিয়ে দেবেন, এবং ‘যদি’ কিন্তু’ ‘অথবা’ ব্যতীত আমরা আমাদের ভুল সংশোধন করে নেব। গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে ১০ জন এ দলের শীর্ষ পদে আছেন। কমিটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মধ্য, ডান, বাম, শিবির, কওমিপন্থি এবং আদিবাসী ও ১৫ নারী স্থান পেয়েছেন। শীর্ষ ১০ পদে রয়েছেন– আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এ ছাড়া কমিটিতে ১৬ যুগ্ম আহ্বায়ক, ৩২ যুগ্ম সদস্য সচিব, ১২ যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ৪৪ সংগঠক, ১৪ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং ৪৩ সদস্য রয়েছেন।