সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৮ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এলজিআরডি মন্ত্রীর শ্যালক ও লাকসাম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, বিপুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, গোবিন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম, কান্দিরপাড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, তাজুলের উন্নয়ন সমন্বয়কারী কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আজকরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের শাহীন ও কাওছার আহমেদ। আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রাতে লাকসাম পৌরসভার নশরতপুর এলাকার বাইপাস মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর ও ১৮ আগস্ট রবিবার রাতে বসত-বাড়িতে চাঁদা দাবি, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও পরিবারসহ হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৯০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। লাকসাম থানা পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

খালেদা জিয়া ভালো আছেন, জাতির প্রয়োজনে নেতৃত্বও দেবেন: ডা. জাহিদ
দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে চিকিৎসায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে শারীরিকভাবে অনেকটা ভালো আছেন। একইসঙ্গে পারিবারিক আবহে থাকায় মানসিকভাবেও তিনি আগের চেয়ে ভালো। এমন তথ্য জানিয়ে তার পূর্ণ সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জাতির প্রয়োজনে নেতৃত্বও দেবেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয়তার বিষয়ে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ এই নেতা বলেছেন, ‘একজন নেত্রী বলতেন উনি (খালেদা জিয়া) যায় না কেন, যায় না কেন? এখন উনিই চলে গেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়া আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। দেশনেত্রী জাতির যখনই প্রয়োজন হবে তখনই নেতৃত্ব দেবেন।’ মঙ্গলবার (০৬ মে) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজার সামনে লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে ফেরার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ। এসময় খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ। ওনার জন্য সবাই দোয়া করবেন। এই চিকিৎসক বলেন, লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তারেক রহমান তার মায়ের চিকিৎসার জন্য যা করেছেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি চেয়ারপারসনের মানসিকভাবে প্রশান্তি আনতে কাজ করেছেন তার তিন নাতনি। আমরা তাদের কাছেও কৃতজ্ঞ। লন্ডনের বিএনপির নেতাকর্মী, অন্যান্য দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে অনেকেই দোয়া করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। চেয়ারপারসনও সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতের কারণে তিনি অনেকটা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক ভালো আছেন। লম্বা জার্নি করেছেন, আবার বাসা পর্যন্ত আসতে একটা সময় লেগেছে। তারপরও মানসিকভাবে ভালো আছেন। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জাহিদ হোসেন বলেন, সবাই চেয়ারপারসনকে সুস্থ করার জন্য দোয়া করেছেন, তার প্রতি যে আনুগত্য দেখিয়েছেন, মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।। বিশেষ করে কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়েছেন এজন্য দেশটির আমির ও সরকারের প্রতি খালেদা জিয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান ডা. জাহিদ।বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফেরার পথে সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দেয়ার কথা তুলে ধরে ডা. জাহিদ বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সব আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই গণমাধ্যমের প্রতি। চেয়ারপারসনকে হাসপাতাল থেকে বাসায় গৃহবন্দী করে রাখার দিন থেকে এখন পর্যন্ত সবসময় আপনারা পাশে ছিলেন।

খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দীর্ঘ দিন দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকার পর খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত। দেশ আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক অস্থিরতা, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও অস্থিতিশীল রাজনীতি দেশকে এক ভয়াবহ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করছে।’ মঙ্গলবার (৬ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান একথা বলেছেন। জিএম কাদের বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে বিভক্তি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির প্রসার ঘটছে। দেশ প্রতিদিন এক সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে, বেগম খালেদা জিয়ার মতো বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, জনগণের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সৃষ্টির মাধ্যমে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলবেন ও দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, বলে প্রত্যাশা করি। আমরা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।’

গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
দীর্ঘ চার মাস লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের অভ্যর্থনা গ্রহণ শেষে বেলা ১১টার পর খালেদা জিয়া বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রওনা দেন। পরে মঙ্গলবার (০৬ মে) দুপুর দেড়টার দিকের দিকে তার বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধু ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এর আগে বিমানবন্দর থেকে ফিরোজায় আসার পথে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানান। জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে সরাসরি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ উঠবেন। এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে তার বাসভবন ‘ফিরোজা’ও। বাসভবন ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ফিরোজার নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এর আগে লন্ডনের গ্রিনিচ সময় গতকাল সোমবার বিকাল ৪টা ১০মিনিটে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ রাজকীয় বিমানে (আধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন খালেদা জিয়া। যাত্রাপথে কাতারের দোহা বিমানবন্দরে বিরতি শেষে বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ০৫ মিনিটে আবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।

খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশে স্বাগতম : সারজিস আলম
চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফেরায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট করেন তিনি। ওই পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশে স্বাগতম। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতা যে আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বুকে ধারণ করে অকাতরে রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে; সেই আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সামনে রেখে তিনি এবং তার দল বিএনপি আপসহীনভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের স্বার্থকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাবেন। তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে দীর্ঘ চার মাস পর দেশে ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী কাতারের আমিরের বিশেষ বিমানটি (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। একই ফ্লাইটে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান।

গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে নেতাকর্মীদের ঢল, সতর্ক পাহারা
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে গুলশানে তার বাসভবন ফিরোজার সামনের সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। মুহুর্মুহু শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা, বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। দলীয় ও জাতীয় পতাকা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যোগ দিয়েছেন অগণিত সাধারণ মানুষও। অনেকের হাতে রয়েছে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফ্যাস্টুন। এগুলো হাতে নিয়ে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার সামনে প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে শ্লোগ্লান দিচ্ছেন তারা। বাসভবনের সামনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা। আজ সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে বহন করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। বাসভবন ফিরোজার প্রবেশ পথে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে অভ্যর্থনা জানাতে দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কোথায় অবস্থান নেবেন সে দিকনির্দেশনা আগেই দিয়ে দিয়েছেন দলীয় হাইকমান্ড। তবে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরের পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যাবে না। হেঁটেও যাওয়া যাবে না। প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। পর দিন ৮ জানুয়ারি হিথ্রো বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বড় ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকে সরাসরি দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি। ১৭ দিন চিকিৎসার পর বড় ছেলের বাসায় ওঠেন। পরবর্তী সময়ে সেখানেই তার চিকিৎসা কার্যক্রম চলে। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান এবং চিকিৎসক ও মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যসহ ১৩ জন।

১৭ বছর পর দেশে ফিরলেন জোবাইদা রহমান
দীর্ঘ ১৭ বছর পর শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরেছেন ডা. জোবাইদা রহমান। এর আগে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি তার স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। এরপর একে একে ১৭টি বছর কেটে গেলেও তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি। স্বামী ও তার একমাত্র সন্তান জায়মা রহমানকে নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছিলেন জোবাইদা রহমান। লন্ডনে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এসময় তার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাদের বহনকারী কাতারের আমিরের বিশেষ বিমানটি (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০২৩ সালের এক রায়ে ঢাকার একটি আদালত জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আদালতের দেওয়া ওই সাজা স্থগিত হয়। জানা গেছে, দেশে ফিরে জোবাইদা রাজধানীর ধানমন্ডিতে তার বাবার বাসায় উঠবেন। ‘মাহবুব ভবন’ নামে পরিচিত বাড়িটি তার প্রয়াত বাবা সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসভবন। পৈতৃক বাড়িতে জোবাইদাকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিও চলছে। দেশে ফিরে তিনি নিজের অসুস্থ মায়ের সঙ্গে থাকবেন। জোবাইদা রহমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি করেন। তিনি চিকিৎসকদের সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় প্রথম হয়ে ১৯৯৫ সালে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে লন্ডনে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে ছুটি বাড়ানোর পরেও ফেরত এসে চাকরিতে যোগ না দেওয়ায় তাকে বরখাস্ত করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জোবাইদা রহমানের জন্ম বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। তিনি প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর মেয়ে। মাহবুব আলী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকারের সময়েও তিনি যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী জোবাইদা রহমানের চাচা। ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সঙ্গে জোবাইদা রহমানের বিয়ে হয়। ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন তিনি। ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে তিনি স্বামী তারেক রহমানের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেন।

দুই পুত্রবধূকে নিয়ে ‘ফিরোজার’ পথে খালেদা জিয়া
গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে গত জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চার মাস পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় দেশে ফিরলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। কাতারের আমিরের দেওয়া রাজকীয় বিমানে খালেদা জিয়ারে সঙ্গে দেশে এসেছেন তার দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান। এছাড়াও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য, বিএনপি নেতা ও তার ব্যক্তিগত কর্মচারীরা বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরেছেন। লন্ডন থেকে ফেরার পথে দোহায় যাত্রাবিরতি শেষে মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল দশটা ৪২ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে করে গুলশানের বাসা ফিরোজার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। খালেদা জিয়ার বড় ছেলের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ফিরলেন প্রায় ১৭ বছর পর। এদিকে সুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পর পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিমানবন্দর থেকে বাসা পর্যন্ত পুরো সড়কে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়ার বাসভবন 'ফিরোজা' পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিতে থাকেন। সবার হাতে ছিলো জাতীয় ও দলীয় পতাকা। এছাড়া নানা ধরণের ব্যানার ফেস্টুনও হাতে শোভা পেয়েছে নেতাকর্মীদের। এদিকে জনসাধারণের চলাচলে যেন অসুবিধা না হয় সেটা নিশ্চিত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের এই সড়কের ফুটপাথে অবস্থান নেওয়ার কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে। তবে খালেদা জিয়া দেশে পৌঁছার পর সেই নির্দেশনা খুব একটা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। দেখা যায়, সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা ফুটপাথেই দাঁড়িয়েছেন। দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের ফুটপাতে দাঁড়ানো নিশ্চিতে সচেষ্ট। তবে, কিছু কিছু জায়গায় তারা ফুটপাত থেকে সড়কের ওপরও খানিকটা নেমে এসেছেন। ফলে, সড়কের বেশকিছু জায়গায় যান চলাচলে রয়েছে ধীরগতি। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। সেটিতেই তিনি লন্ডনে যান। কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই আবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন তিনি। সোমবার (৫ মে) স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই ড্রাইভিং করে মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। বিমানবন্দরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান।

দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া
দীর্ঘ চার মাস পর দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী কাতারের আমিরের বিশেষ বিমানটি (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দর ত্যাগ করার পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এদিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকেই বিমানবন্দরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই নেতাকর্মীরা বাইরের সড়কে জড়ো হন। তাছাড়া খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষ্যে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেখানে অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনীও। প্রসঙ্গত, সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়। খালেদা জিয়া গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তার যুক্তরাজ্য গমনের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছিলেন। সেটিতেই লন্ডন যান এবং একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরেছেন।

এখনও আদালত আমাদের সেকেন্ড হোম: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আগেও আদালতপাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ঠিকানা ছিল, এখনও আছে। এই আদালতপাড়া এখনও আমাদের সেকেন্ড হোম। প্রায়ই সেখানে যেতে হয়। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পেশাজীবী জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলাসমূহের অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নামেও অনেক মামলা দেওয়া হয়েছিল। সেসময় আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। এখন তিনি তার বিরুদ্ধের সব মামলা প্রত্যাহার করে চেয়ারে বসেছেন, অথচ আমি গয়েশ্বর কেন এখনওকোর্টে হাজিরা দিই?তিনি বলেন, বিএনপি কখনওপ্রতিহিংসার রাজনীতি করেনি। এর ফলে যে সুবিধাটা হয়েছে, অনেকেই ভেবে নিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে লেখা ও বলা সবচেয়ে নিরাপদ। সাংবাদিকরা আগে বলতো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নাই। তাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু লেখা যেত না, কিন্তু বিএনপির বিরুদ্ধে নানা কথা লেখা হতো। তবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানেই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নয়। সংবাদপত্রের মালিক বা প্রকাশকের স্বাধীনতাই মূল স্বাধীনতা। কিছু মিডিয়ার মালিক সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে, ফলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করে না। অনেক মিডিয়ার পয়সার অভাব নেই, কিন্তু সাংবাদিকদের ঠিকমতো বেতন দেয় না।তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট যদি হাসিনা না পালিয়ে পদত্যাগ করতেন, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া লাগতো। তাহলে এখন নির্বাচন কমিশনের দেড় দুই বছর সময় লাগছে কেন? আমরা এখন নির্বাচন কমিশনের কীসের প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা করছি?সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ।

চার মাস পর লন্ডন থেকে দেশের পথে খালেদা জিয়া
প্রায় চার মাস পর চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় তার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯টার দিকে যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে কাতার আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়া ও তার সঙ্গীরা ঢাকার পথে রওয়ানা দেন।এর আগে স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই ড্রাইভিং করে মাকে নিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। বিমানবন্দরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান।মাকে দেশের পথে পাঠিয়ে দেওয়ার সময় ছেলের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। পাশে থাকা লোকজন সবাইকে হাসিখুশি দেখা যায়। মা তার সন্তানকে বিদায় বেলায় গালে আদর করে দেন। তারেক রহমানও মাকে বিদায় জানানোর মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। এছাড়াও আছেন তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার ও ডা. জাফর ইকবাল; বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, খালেদা জিয়ার সহকারী মাসুদুর রহমান, মিসেস দিলারা মালিক, তার দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মাঝে কাতারে যাত্রাবিরতি করবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।এদিকে ঢাকায় খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার জন্য তার বাসভবন ফিরোজা প্রস্তুত করা হচ্ছে। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।বিএনপির চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এতে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়।

গাজীপুরে হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা, ১০০ জনের নামে মামলা
গাজীপুরের বাসন সড়ক এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ১০০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যায় এনসিপির সদর থানার আহ্বায়ক খন্দকার আল আমিন বাদী হয়ে বাসন থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এর আগে, এনসিপির নেতারা বাসন থানায় উপস্থিত হয়ে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলার ঘটনায় মামলার এজাহার দায়ের করেন। পরে সন্ধ্যায় ১০০ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীন খান।মামলায় বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে হামলা চালিয়ে কাঁচ ভেঙ্গে তাকে হত্যার চেষ্টা করে।মামলার বাদী খন্দকার আল আমিন বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা মেনে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমরা বাসন থানায় মামলা দায়ের করেছি। মামলায় একশ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত নামাদের আসামি করা হয়েছে। তবে আমরা চাই কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানি না হয়। প্রকৃত অপরাধীদের যেন দ্রুত ধরা হয় পুলিশ প্রশাসনকে সেই অনুরোধ করছি।গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুত দায়ীদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রাতভর চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পরে এই ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে ৫৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। পরে এই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

নাজমুল হাসান পাপন ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন ও তার স্ত্রীসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে আরও পাঁচজনের নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ জারির সুপারিশ করা হয়েছে। আজ সোমবার দুদকের রাজধানীর সেগুনবাগিচায় প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। দুদক জানায়, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন ২০ কোটি ৭ লাখ ৪১ হাজার ১২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়াও, ২০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭৪২ কোটি ৭৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮৬.৭৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারায় একটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, তার স্ত্রী রোকসানা হাসানের বিরুদ্ধেও ১২ কোটি ১২ হাজার ২১৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ১১০.০৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আরেকটি মামলার রুজুর সুপারিশ করা হয়। একইভাবে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চাকরিচ্যুত নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইসমাইল হায়দার মল্লিকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৭০ লাখ ১২ হাজার ৪৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ এবং ৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩০ লাখ ২৬ হাজার ৭০১.৮৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধেও পৃথক আরেকটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই তিনজন ছাড়াও আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে তাদের অর্জিত সম্পদের উৎস যাচাইয়ের লক্ষ্যে দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় সম্পদ বিবরণী জমাদানের জন্য নোটিশ ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে। তারা হলেন— নাজমুল হাসান পাপনের মেয়ে রুশমিলা রহমান (অহনা), মেয়ে সুনেহরা রহমান (তন্নি), ছেলে রাফসান রহমান, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের স্ট্র্যাটেজিক ব্র্যান্ড ম্যানেজার ও পাপনের জামাতা রাকিন আল মাহমুদ এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চাকরিচ্যুত নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইসমাইল হায়দার মল্লিকের স্ত্রী সুলতানা নিঝুম। দুদক সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্টদের সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদায় বেলায় মা-ছেলের আবেগঘন মুহূর্ত
প্রায় চার মাস নিজের কাছে রেখে গুরুতর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা চালিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় দেশে ফেরার মনস্থির করেন মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নির্ধারিত সময় মাকে বিদায় দেওয়ার জন্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় রাত ৭টা ৪০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এরপর মাকে বিদায় জানান ছেলে। মাকে দেশের পথে পাঠিয়ে দেওয়ার সময় ছেলের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। পাশে থাকা লোকজন সবাইকে হাসিখুশি দেখা যায়। মা তার সন্তানকে বিদায় বেলায় গালে আদর করে দেন। তারেক রহমানও মাকে বিদায় জানানোর মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেন।অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাকে ছেলের বিদায় দেওয়ার আবেগঘন মুহূর্তের ছবি পোস্ট করেছেন।বেগম খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্য কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বাংলাদেশে আসছেন। সঙ্গে আছেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। এছাড়াও তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার ও ডা. জাফর ইকবাল; বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, খালেদা জিয়ার সহকারী মাসুদুর রহমান, মিসেস দিলারা মালিক, তার দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিএনপির চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এতে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়

হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া, দেশে রওয়ানা দেওয়ার অপেক্ষায়
প্রায় চার মাস পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ইতোমধ্যে তিনি যুক্তরাজ্যের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি কাতার আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশের পথে রওয়ানা দেবেন। আগামীকাল সকাল ১০টায় তার ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।সোমবার (৫ মে) স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই ড্রাইভিং করে মাকে নিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। বিমানবন্দরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান।তারেক রহমান মাকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় সেখানে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।স্থানীয় সময় বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা করবে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার দুই পুত্রবধূ, ব্যক্তিগত চিকিৎসক, গৃহকর্মীসহ বেশ কয়েকজন রয়েছেন।এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মাঝে কাতারে যাত্রাবিরতি করবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।এদিকে ঢাকায় খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার জন্য তার বাসভবন ফিরোজা প্রস্তুত করা হচ্ছে।গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।বিএনপির চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এতে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়।

হিথ্রো বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া
চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর দেশে আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ইতোমধ্যে তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের বাসা থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা করেছেন।সোমবার (৫ মে) স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই ড্রাইভিং করে মাকে নিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুই পুত্রবধূ, ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ আরও কয়েকজন রয়েছেন। হিথ্রো বিমানবন্দরে কাতার আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় সময় বিকেলে এটি খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা করবে। তবে মাঝে কাতারে যাত্রাবিরতি করবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। আগামীকাল সকাল ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।এদিকে হিথ্রো বিমানবন্দরে আগে থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করেছেন তাদের প্রিয় নেত্রীকে বিদায় জানাতে। ঢাকায়ও খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীতগত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।বিএনপির চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এতে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়।

আওয়ামী লীগের প্রতি সরকারের সহমর্মিতা বাড়ছে : রাশেদ খান
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফলতা কী কী, সেটা বুঝতে পারছেন না গণঅধিকার পরিষদের সাধরাণ সম্পাদক রাশেদ খান। তবে তার মতে, এই সরকারের বড় সফলতা হলো, সরকার নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে সমাজে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের সহমর্মিতা বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাশেদ খান। আজ সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে এসব মন্তব্য করেন গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা। রাশেদ খান বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার যখন বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এই কথার প্রতিবাদ করলে, একদল সুশীল এসে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। এরা নাকি রাষ্ট্রকে জবাবদিহিতামূলক করতে চায়। তাই এদের দৃষ্টিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন একজন ব্যাংকের কর্মকর্তাকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বানিয়ে রাখেন, যখন বিভিন্ন জায়গায় নিয়োগে চট্টগ্রামকে প্রাধান্য দেন, তার গ্রামীণ ব্যাংক ও সার্কেলের লোক ছাড়া যোগ্য লোক খুঁজে পান না, তখন সেটি নিয়ে নাকি প্রতিবাদ করা যাবে না। একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পেয়েছেন! যিনি নিজেই জানেন না কী করতে হবে। মাঝেমধ্যে দু-এক দিন মিডিয়ার সামনে পুলিশকে ধমক দেওয়ার কারণে তিনি নাকি ফাটাকেস্ট। অথচ প্রতিদিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা আরো বলেন, বিজনেস সামিটের নামে বিশাল বিনিয়োগের ধোঁয়া তোলা হয়, রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে যখন আইওয়াশ করা হয়, মানবিক করিডর নামে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলার চেষ্টা করে, তখনো নাকি প্রতিবাদ করা যাবে না! রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল রেখে ম্যাজিক দেখিয়েছে সত্য! কিন্তু রমজানের পরে কি আর মানুষের খাওয়া-দাওয়া লাগে না? বাজার যে নিয়ন্ত্রণহীন, তা কি বাণিজ্য উপদেষ্টা জানেন না? আওয়ামী লীগের প্রতি সরকারের সহমর্মিতা বাড়ছে দাবি করে রাশেদ খান বলেন, আগের তুলনায় আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে, ঝটিকা মিছিলের পরিমাণ বেড়েছে, বিদেশিরা আওয়ামী লীগের জন্য লবিং করা শুরু করেছে। আর সে জন্য সরকারের উপদেষ্টারা সাবের-মান্নানদের জামিনে সহযোগিতাও করা শুরু করেছে। অর্জন বলতে এতটুকুই দেখছি, আওয়ামী লীগের প্রতি সরকারের সহমর্মিতা বাড়ছে, আওয়ামী লীগের ডামি এমপিরা জামিন পাচ্ছে। গ্রেপ্তার হচ্ছে না এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগও নিষিদ্ধ হচ্ছে না! এরই অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আইনে গণহত্যার দায়ে সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের বিধান বাদ দিয়েছে। ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, এই সরকারের আরো বড় সফলতা হলো, সরকার নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে সমাজে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে! আপাতত এতটুকুই সরকারের সফলতা!

হাসনাতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ: এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার পূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ‘দেখে নেওয়ার এবং হামলার হুমকি দিয়েছিল বলে জানিয়েছে দলটি। রোববার (৪ মে) মধ্যরাতে দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক প্রস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি জানায়, আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে ঙ্গ্যে করেছি, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাফ্যাক্ট’ এর জরিপে উঠে এসেছে যে, গত ৯ মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর ৩৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে ৮৯ জন আহত এবং ১ জন শহীদ হয়েছেন। দলটি জানায়, এসব হামলাকারীদের এবং জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে তড়িৎ ও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই ঘটনাসমূহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অপেশাদারত্ব এবং অবহেলার চিত্র ফুটে উঠেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি মনে করে জুলাই গণহত্যার দায়ে একটি ফ্যাসিবাদী দল হিসাবে আওয়ামী লীগের দলগত বিচার নিশ্চিতে গড়িমসি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতাই আজকের হামলার অন্যতম মূল কারণ। এদিকে, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, বগুড়া, রংপুর মহানগর, কেরাণীগঞ্জ উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাৎক্ষণিক মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এনসিপি। দলটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হামলার সুস্পষ্ট তদন্তপূর্বক জড়িত ব্যক্তিদের এবং জুলাই গণহত্যাকারীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে।

হাসনাতের ওপর হামলা, শিবির সভাপতির হুঁশিয়ারি
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছেন, আন্দোলনের সাথীদের ওপর হামলা হলে জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধাদের একসঙ্গে প্রতিরোধ করবে। ফ্যাসিস্টদের ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। রোববার (৪ মে) এক বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা আমাদের সহযাত্রী, তাদের ওপর হামলা হলে আমরা জুলাই যোদ্ধারা একসঙ্গে তা প্রতিরোধ করব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ৩৬ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে পুরোনো হোক কিংবা নব্য ফ্যাসিস্ট-কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। ছাত্রশিবির সভাপতি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এর আগে, রোববার রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ গাড়িতে ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করা হয়েছে বলে জানান এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আন্তঃনদীর পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র বানানো উচিত নয়: মির্জা আব্বাস
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, পানি মারণাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। ‘আন্তঃনদীর পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র বানানোও উচিত নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, একমাত্র ভারতই বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা ‘পানিকে’ যুদ্ধের মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মির্জা আব্বাস আজ রোববার (৪ মে) বিকেলে রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বরে ‘তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত ‘গণপদযাত্রার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি’র রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর সভাপতিত্বে ‘গণপদযাত্রার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, রংপুর মহানগর আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু ও দলীয় নেতা এমদাদুল হক ভরসা বক্তৃতা করেন। উত্তরাঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষের ‘জীবন-রেখা’ হিসেবে বিবেচিত আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার পানি ভারত একতরফাভাবে প্রত্যাহার করায় এই নদীটি প্রায় মৃত। তিস্তা নদী রক্ষায় দেশের বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। গণপদযাত্রায় অংশ নিয়ে বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা তিস্তা রক্ষায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা ভারতের কাছে কিছু চাই না, শুধু পানি চাই। আমরা বকশিশ চাই না, ভিক্ষা চাই না, আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আজ না হোক, কাল তা দিতেই হবে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। পূর্ববর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে এই হিসাব-নিকাশ করেনি, কারণ, তারা সরকারে বার-বার থাকার ইচ্ছায় ভারতকে চাপে ফেলেনি।’ ‘আমাদের কাছে ভারতের স্বার্থজনিত অনেক কিছুই রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়গুলো এখন হিসাব করতে হবে। হিসাব করার সময় এসেছে। আমাদের তিস্তার পানি চাই, ফারাক্কার পানি চাই। দেশের যেখানে পানি দরকার, সেখানে তা দিতে হবে।’ বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বহু আগেই পানির ন্যায্য হিস্যা পেতাম যদি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার না আসতো। তারা ভারতের কাছে কোনো দিন পানির দাবি তুলতে পারেনি, তুলেওনি।’ শামছুজ্জামান দুদু বলেন, ‘পানির ন্যায্য হিস্যার প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না। তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা অবশ্যই আদায় করতে হবে।’ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, তিস্তাপাড়ের মানুষের আর্তনাদ কারো কানে পৌঁছায় না । তাই যতদিন পর্যন্ত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে । আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব । কারণ, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা উত্তরের মানুষের অধিকার, সেজন্যই এই আন্দোলন।’ এদিকে গণপদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রোববার দুপুর ১টা থেকে তিস্তা নদীবেষ্টিত বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে হাজার-হাজার মানুষ রংপুর শহরে আসতে শুরু করেন। গণপদযাত্রা শুরুর আগেই এই শহরে মানুষের ঢল নামে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ - এই স্লোগানে শুধু শাপলা চত্বরই নয়, পুরো রংপুর মহানগরী মুখরিত হয়ে ওঠে । সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে বিকেলের আগেই রংপুর মহানগরী পরিণত হয় জনস্রোতে। নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের ঢলের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এই গণপদযাত্রা শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ গিয়ে শেষ হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষক সংগঠন, শ্রমজীবী মানুষ, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এই গণপদযাত্রাটি পরিণত হয় হয় গণমানুষের মহাসমুদ্রে। বলা যায়, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এটি গণ-আন্দোলনের আরেক রূপ। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে তিস্তাপাড়ের কয়েক লাখ মানুষ এতে অংশ নেয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দু’দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। দু’দিনের কর্মসূচির শেষ দিনে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রধান অতিথির বক্তব্যও রাখেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই স্লোগানে দেন ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ এই স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে তাঁবু খাটিয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে উত্তরাঞ্চলের মানুষের ‘তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার’ দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুলের সাথে জাপানি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি।আজ রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।এসময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, তার দেশে ফেরা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, জাপান সবসময়ই বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তারা (জাপান) স্বাভাবিকভাবেই চায় ভবিষ্যতে নতুন সরকারের সাথেও কর্মপরিবেশ বজায় থাকুক। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে জাপানের বড় বিনিয়োগ রয়েছে এবং ভবিষ্যতে তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আমরা সবসময় জাপানি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি।’ খসরু বলেন,‘সবাই নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহী। জাপানও নির্বাচনের সময় জানতে চায়। তারা চায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসুক, এটাই প্রত্যাশা করছে।'

হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলা
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনি আহত হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ঢাকার দিকে আসার সময় গাজীপুরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় পেছন থেকে ১০-১২টা মোটরসাইকেল এসে হাসনাতের ওপর হামলা করে। এতে তিনি আহত হন। এখন হাসনাত ঢাকায় ফিরছেন। সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপির আরেক নেতা আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘গাজীপুরের চান্দনায় হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলা হয়েছে। আশপাশে যারা আছেন দ্রুত এগিয়ে আসেন, প্লিজ।’ একই তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন।’

তারা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতর থেকে মনে হয়, তারা তো নির্বাচন চায় না। তারা একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে- এ রকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না, অমুক মাসেই নির্বাচন হবে। রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকাস্থ নীলফামারী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে, দোসরদেরকে দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা (দোসররা) হয়তো আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে যে, বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা মনে হচ্ছে এ রকম। আপনার সরকারের ভেতর থেকে মনে হয়, তারা তো নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে- এ রকম নানা কথা বলছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আজকে সরকার দিনকে দিন তালবাহানা করছে। কিন্তু দেশ তার যে ’৭১-এর অহংকার এবং ’২৪ এর ৫ আগস্টের যে অহংকার, সে অহংকার মিলিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা অর্থাৎ বহুদলীয়, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা- এটাতো এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। সেই সুযোগ অনেকে নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, আজকে মানবিক করিডরের কথা বলছেন। এই মানবিক করিডরের কথা আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের ম্যান্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন। আজকে সব দিক থেকে এই কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়া কী হবে, আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কী হবে- এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি। অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আপনার সরকারের প্রতি প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সেই সমর্থনের মধ্যে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ, জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন। এত লুকোচুরি করছেন যে, কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে আপনারা সন্দেহের মধ্যে পড়ছেন। তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের (ভারত) সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতোই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই। একইসঙ্গে এটা করলে আমাদের বিকল্প কী, এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ, সড়কপথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল- সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদেরকে জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একই রকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে, কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, আমরা তো বারবার বলি- আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। যারা বিএনপিবিরোধী, বেগম খালেদা জিয়াবিরোধী, তারা প্রশাসনে আছে এবং তারা গিরগিটির মতো রঙ পরিবর্তন করছে। রং পরিবর্তন করে ওরা নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করছে এবং ওরা গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে দিতে চায় না। আমরা বলেছি, যারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেছে, যারা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, তারা তো আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে, আজও চাকরি করছে। যে বিচারপতি আক্তারুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন, তিনি এখনো কীভাবে বিচারপতি থাকেন? অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সংকট হচ্ছে, গণতন্ত্রই নেই: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। এবার সরকারে থাকি আর না থাকি, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করবো না। আমরা আরেকজনের মতের স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেবো। এটাই আমাদের চিন্তাভাবনা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। রোববার (৪ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয়। আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে, তখন থেকে এ বিষয়টি সবচেয়ে সামনে এসেছে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সে সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। একটি সুবিধা ছিল। তখন সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনো গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ অনেক উঁচু দরের ছিল। তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রায় ১৬ ভাগ বেড়েছে। সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন দেখি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনো কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীও সেটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিও প্রদান করে। আমি জানি না, একটি গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজে এটা কতটুকু গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে! সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি ট্রানজিশন পিরিয়ডে আছি। অনেক রকমের ঘটনা চলছে, অনেক রকম টানা-হেঁচড়া চলছে। তবে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে একটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে, চিন্তাভাবনাগুলোকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। সংকট হচ্ছে, গণতন্ত্রই তো নেই। ১৫ বছর ধরে লড়াই করলাম গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য। চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে। তার চিন্তাভাবনা, তার রায়, তার মতের ওপর আস্থা রাখতে হবে। 'আমি' চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার গণতন্ত্রের জন্য। আমাদের সংবাদমাধ্যমে এই চর্চাটা বেশি করা দরকার। গণতন্ত্র চর্চা করার জিনিস। তিনি আরও বলেন, আমাদের নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা সংস্কার নয়, নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কার বিষয়টি শুরুই হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় আসছি। আমরাই প্রেসিডেন্ট ফর্ম সরকার থেকে পার্লামেন্ট ফর্ম সরকারে গেছি। অনেক অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমরা কেয়ারটেকার সরকারকে সংবিধানে নিয়ে এসেছি। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করা এটার পেছনে কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালণায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ প্রমুখ।