
বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কার্টার সেন্টারের বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান দ্য কার্টার সেন্টার এর একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে। শুক্রবার (৯ মে) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপির পক্ষে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। কার্টার সেন্টারের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন, ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জোনাথন স্টোনস্ট্রিট। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন, তারা শরিফ (সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর), মাইকেল বালদাসারো (ডেটা সায়েন্টিস্ট), সাইরাহ জাইদি (অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর), ড্যানিয়েল রিচার্ডসন (প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট, পিস ও ডেমোক্রেসি প্রোগ্রাম) এবং স্থানীয় মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ কাজী শহীদুল ইসলাম। প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে বিএনপির সঙ্গে এ বৈঠক করে।

তারেক রহমানের সঙ্গে সিঙ্গাপুর বিএনপি নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিঙ্গাপুর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (৮ মে) লন্ডনে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। সিঙ্গাপুর বিএনপির সভাপতি শামছুর রহমান ফিলিপের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফুর রহমান রবিন, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম আজাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ অন্য নেতাকর্মীরা।

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ, চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আজ (শুক্রবার) বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। জামায়েতর লক্ষ্যে সমাবেশের জন্য ট্রাক দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে এই মঞ্চ তৈরর কাজ চলছে। শুক্রবার (৯ মে) সকাল ১০টার দিকে দেখা গেছে, ৫টি ট্রাক একসঙ্গে করে ওপরে সামিয়ানা লাগিয়ে এই অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণের কাজ করছেন শ্রমিকরা। ওইদিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রাস্তার দিক থেকে, কাকরাইল মসজিদের দিক থেকের রাস্তায় পুলিশ ব্যারিকেড বসিয়ে সকল ধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাস ভবন যমুনার সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে এনসিপি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দেখা যায়, যমুনার প্রধান ফটলের সামনে বিক্ষোভ করছে এনসিপির নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে যমুনার চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আজ (শুক্রবার) বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে এই জমায়েত হবে। এতে দল মত নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (৯ মে) সকালে যমুনার সামনে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এই জমায়েতের ডাক দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। পরে যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। হাসনাত বলেন, সার্ক ফোয়ারার সামনে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে বাদ জুমা জনসমুদ্র হবে। আজকে তারা বুঝতে পারবেন কারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়।

চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আনলে আমাদের পুনরায় জবাই করবে: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘চাঁদাবাজদের যদি আবার ক্ষমতায় আনা হয়, তবে আমাদের আবার জবাই করা হবে।’ বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সকল আইনি উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবিতে। চরমোনাই পীর বলেন, ‘৫ আগস্টের ঘটনার পর মায়ের আর্তনাদ থামেনি। আজও সেই কান্না, সেই চিৎকার আমাদের কানে বাজে। মুগ্ধর পানি পানি শব্দ ভুলিনি, আবু সাইদের গুলিবিদ্ধ বুকে দুই হাত ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্য ভুলিনি। অথচ সেই ঘটনায় যারা দায়ী, তারাই আজ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্টেশন-ঘাট দখল নিয়ে আবারও মাঠে নেমেছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, দেশের লাখ লাখ মানুষ আন্দোলনে পঙ্গু হয়েছে, অনেকেই চোখ হারিয়েছে, প্রাণ হারিয়েছে বহু সাংবাদিক। তারপরও যারা এসব ঘটনার পেছনে, তাদের যদি আবার ক্ষমতায় বসানো হয়, তাহলে এই জাতি আরেকটি গণবিনাশের মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও জনতা তা কিছুতেই মেনে নেবে না। এই রাষ্ট্রে প্রথম প্রয়োজন প্রকৃত সংস্কার। তার আগে কোনো জাতীয় নির্বাচন নয়।’ চরমোনাই পীর আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল। স্বাধীনতার পর কেউ এত বড় জনসমর্থন পায়নি। এত সমর্থন পেয়েও সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠায় তারা ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন হলো— এই ব্যর্থতার দায় কোথায়?’ নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নারীদের বাদ দিয়ে যে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, তা বিশ্বে নজিরবিহীন। এটি কোনো সভ্য রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না।’ এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি আকরাম আলী। আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, সহ-সভাপতি মনতাছির আহমাদ এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আখিনুর মিয়া।

রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আপ বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ আজ
আজ শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (ইউপিবি/আপ বাংলাদেশ)। বিকেল ৪টায় ইউপিবির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হবে। দলটির প্রধান উদ্যোক্তা আলী হাসান জুনায়েদের দেওয়া এক ফেসবুক বার্তায় গত সোমবার (৬ মে) এ তথ্য জানানো হয়। তবে এটি মূলত একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, দল নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। জুনায়েদ বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করাই হবে এই প্ল্যাটফর্মের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা। আর দীর্ঘমেয়াদে আমরা বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের বিকাশ, সুবিচার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে চাই। ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের আলোকে সামাজিক চুক্তির পুনর্বহাল করে সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সমাজ গড়ায় কাজ করতে চাই। ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে এই প্ল্যাটফর্ম কাজ করবে। আপনাদের সবার পরামর্শ, দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটি। ইউপিবির এক সংগঠক ফায়াজ শাহেদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, জুলাই শহীদ, পিলখানা শহীদ, শাপলার শহীদ, সাঈদীর রায়কেন্দ্রিক শহীদ পরিবারসহ আহত ও আয়নাঘরের কয়েকজন জীবন্ত শহীদের মর্মস্পর্ষী বক্তৃতার মধ্য দিতে আমাদের প্রাণের প্লাটফর্ম ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’ এর আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমিটি প্রকাশসহ আমরা সারাদেশকে জানান দেব ‘জুলাই যোদ্ধারা এখনো বেঁচে আছি’।

আ. লীগের বিষয়ে আজ রাতেই ফয়সালা হবে : নাহিদ ইসলাম
আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠব না। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নাহিদ এই আহ্বান জানান। স্ট্যাটাসে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। দলটির নিবন্ধন বাতিল বা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। বরং আসামিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতিকে চোখের সামনে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রতি আমাদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাইয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল খুনিদের বিচার। মুজিববাদীরা বাংলার মাটিতে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। আজ রাতেই ফয়সালা হবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে।’ জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠব না।’ শহীদ পরিবার ও আহতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবাই চলে আসুন। জুলাইয়ে সকল শক্তি, সকল শহীদ পরিবার ও আহতদের আহ্বান জানাই রাজপথে নেমে আসুন। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’

যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিলেন হাসনাত
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ১০টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করবেন বলে তিনি ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন। হাসনাত লিখেছেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত আজ রাত দশটা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট বয়ান নাই, তার সঙ্গে আমরা নাই। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নয় মাস পর বুধবার (৭ মে) দিনগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যু নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

করিডরের নামে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না : মির্জা ফখরুল
দেশের মানুষের সঙ্গে আলোচনা না করে, মায়ানমারে মানবিক করিডরের মতো কোনো কিছু জনগণণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের মিলনায়তনে প্রয়াত অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলীর স্মরণে আয়োজিত সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত যিনি আছেন (নিরাপত্তা উপদেষ্টা) তিনি অনেক কথা বলছেন।তিনি গতকাল একটা কথা বলেছেন, যে যেই থাক (রাখাইনে) তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে। তো তার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন, দেশের মানুষ, জনগণের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন না? আলোচনাটা করেন। আমরা তো দেশে, দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের স্বার্থে কখনোই তো বাধা নই। বরঞ্চ আমরাই সামনে এসে দাঁড়াব।বাংলাদেশের মানুষকে অবমূল্যায়ন করবেন না। বারবার বলছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাফল্য চাই, আমরাই তাদের বসিয়েছি। কিন্তু এমন কোনো কাজ করবেন না, যা জাতির বিরুদ্ধে যাবে, বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যাবে। এমন কোনো কাজ করবেন না, যেটা বাংলাদেশের মানুষের জন্যে উপযোগী হবে না।আজকে এমন কাজ করছেন যে বাংলাদেশের মানুষ ক্লিয়ার না। করিডর দেবেন, সেই করিডর নিয়ে মানুষের সঙ্গে আলাপই করছেন না, কথা বলছেন না। আপনি করিডর দিয়ে দিচ্ছেন আরাকানে। যেখানে আর্মি গর্ভমেন্টই নেই। করিডর কী দেবেন? যদি প্রয়োজন হয় ১০০ বার দেবেন, মানবতাকে যদি সাহায্য করতে হয়, সাহায্য করব।কিন্তু আপনি তো দেশের জনগণকে নিয়েই সেটা করবেন। আপনি দেশের দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে করবেন। কোনো আলোচনা নাই।’ খালেদার জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত পরশু যখন লন্ডন থেকে ফিরে এসেছেন, তার স্বাস্থ্যের মধ্যে, তার চেহারার মধ্যে, নতুন করে আমরা আলো দেখতে পেয়েছি। গোটা জাতি আজকে নতুন করে আলো পেয়েছে। এই সময়টাকে কাঁধে নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে। আমাদের কথাকে ভুল ব্যাখ্যা করে বিচার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা এটা জানি কেন করা হচ্ছে? গত পরশু সেটা প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা, প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপি হচ্ছে সবচাইতে বড় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। প্রমাণিত হয়েছে বিএনপির হাতেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র নিরাপদ।’সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংস্কার চেয়েছি সবসময়। এখন অনেকে বলছে যে, আগে সংস্কার হবে তারপরে নির্বাচন। তো সংস্কার যে একটা চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার হতে হতে আপনার যদি ৫ বছর ১০ বছর লাগে? লাগতে পারে এটা চলমান। তাহলে কী নির্বাচন ১০ বছরেও হবে না। আর ১০ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী আমলাদের হাতেই দেশ চলবে? এখন তো আমরা ফ্যাসিবাদী আমলাদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছি। সেক্রেটারিয়েটের আমলারা ৯০ শতাংশ ফ্যাসিবাদের দোসর। আপনারা (আইনজীবীরা) এখানে আলোচনা করলেন যে আপনাদের বারে অনেকে আছেন, যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন। তা হলে এই অনির্দিষ্টকালের জন্য, একটা অনির্দিষ্ট, অনিশ্চিত, অন্তবর্তী সরকার! এটা কি দেশের মানুষের জন্য খুব উপকারে আসবে? আসতে পারে না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সালাহউদ্দিন আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড আবদুর রেজ্জাক খান, অ্যাড সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, প্রয়াত এ জে মোহাম্মদ আলীর সহধর্মিণী ফারজানা আলী প্রমুখ।

আব্দুল হামিদের পালিয়ে যাওয়া সরকারের সিগন্যালে হয়েছে: নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিন থেকে আজকে আব্দুল হামিদের পালিয়ে যাওয়া সবকিছু সরকারের সিগন্যালে ও মধ্যস্থতায় হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের ৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হক নুর বলেন, আমরা বারবার বলেছি, দেশের এই বাস্তবতায় আমরা একটা রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যেতে চাই। সেখানে সবার সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করুন। কিন্তু, এটা করা হয়নি। ক্রমাগতভাবে যেসমস্ত উপদেষ্টাদের অন্তর্বর্তী সরকারে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অন্তত ৫ জন আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্তত আরও ৫ জন উপদেষ্টা আছে, যারা বিদেশি অ্যাম্বাসির মদদপুষ্ট। ফ্যাসিবাদের দোসর, বিদেশি মদদপুষ্ট এই উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে সংস্কার কী হবে? তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুরুর দিকে বলেছে— আমরা নির্বাচন চাই, নির্বাচনী রোডম্যাপ দেন। কেন তাদের মনের মধ্যে এই সন্দেহ সংশয় মনে হলো। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) যে পথে যাচ্ছেন এবং যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করছেন, সেটা আপনাদের জন্য ভালো হবে না এবং দেশের জন্যও ভালো হবে না। আপনারা ১/১১ এর মতো দেশকে সেই পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবেন। আপনারা যদি সংস্কার করতে চান, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপ দেন। জাতীয় সরকার ছাড়া আপনারা টিকতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র কম্প্রোমাইজ করা যাবে না উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমাদের ছাত্র নেতারা দু-একজন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ৫ আগস্ট যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই ঐক্যের নষ্টের মূল কারিগরদেরও একসময় জবাবদিহি করতে হবে। যদি একা একা ভেবে থাকেন যে আপনারা এই বিপ্লব উদ্ধার করে ফেলেছেন, যা ইচ্ছা তা করবেন আর জনগণ মেনে নিবে, পরিস্থিতি সবসময় অনুকূলে থাকবে না। তাই সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আগামীর গতিপথ ঠিক করতে হবে। ছাত্র প্রতিনিধিরা এখন জেলা-উপজেলায় মন্ত্রীদের চেয়েও পাওয়ারফুল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানের পরেও আমরা যতই নতুন বন্দোবস্ত ও নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলছি, কিন্তু সবকিছুই চলছে পুরোনো ধারায়। কোনও জায়গায় খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। প্রশাসন এখনও নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করছে না। বর্তমানে একটা নব্য আধিপত্যবাদী দাঁড়িয়ে গেছে তথাকথিত ছাত্র সমন্বয়কেরা। নুর বলেন, ড. ইউনূস নিজে বলেছেন ছাত্ররা তার নিয়োগকর্তা। তারা যতদিন চায় তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। ছাত্ররা কেন বলেনি, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করলে আপনাকে (ড. ইউনূস) ক্ষমতায় বসাবো না। সরকারে দুজন ছাত্র উপদেষ্টা আছে। সরকারের সবচেয়ে ভারী মিনিস্ট্রি হলো এলজিআরডি। সেখানে একজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এলজিআরডি মিনিস্ট্রি তো দূরের কথা, যার নূন্যতম মিনিস্ট্রি সম্পর্কে ধারণা নেই, প্রত্যেকটি দায়িত্বের কাজ তাদের লোকজন ছাড়া আর কেউ পাচ্ছে না। আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দ্রুত নির্বাচনে দেশ রক্ষা পাবে, আপনাদের মানসম্মানও থাকবে: শামসুজ্জামান দুদু
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে আপনি যত দ্রুত নির্বাচন দেবেন, তত দেশের জন্য মঙ্গল হবে। বিশৃঙ্খলা থেকে দেশ রক্ষা পাবে এবং আপনাদের মানসম্মানও থাকবে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মানুষ ৫ আগস্টের পর স্বপ্ন দেখেছে, ভাবতে শুরু করেছে, এবার ভোট দেওয়ার দিন এসেছে। বিএনপি ১৬-১৭ বছর ধরে নিরলস কাজ করে গেছে। গুম-খুনের শিকার হয়েছে, ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছে। প্রায় পৌনে পাঁচ হাজার নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। এটি শুধু বিএনপির লিস্টে আছে। এর বাইরেও অনেকে আছে। এতো ত্যাগ শুধু গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য। তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে যখন দেশে এলেন, শুধু ঢাকা শহর নয়; সারা বাংলাদেশ যেন রাস্তায় নেমে এসেছে। তার ফেরার অপেক্ষায় সারাদেশ উদগ্রীব হয়ে ছিল। তিনি (খালেদা জিয়া) শুধু আমাদের নেত্রীই নন, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রের আন্দোলনের প্রতীকে রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি ‘গণতন্ত্রের মা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তারেক রহমান ও তার পরিবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মন্তব্য করে দুদু আরও বলেন, তারেক রহমান দেড় যুগ ধরে দেশের বাইরে আছেন। ওনাকে আসতে দেওয়া হয়নি। তার ওপর যেভাবে অত্যাচার হয়েছিল, তাকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন। তার ছোট ভাই (আরাফাত রহমান কোকো) তো নির্যাতনের কারণে মারা গিয়েছিল। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এখন কেউ যদি বলে একদল খেয়েছে, আরেক দল খাবে। কী আর বলবো! রুচির সংকট। সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, কেউ আবার বলছে, আমরা তো কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য গণঅভ্যুত্থান করিনি। তারা কি তাহলে লুটপাট করা আর জামায়াতের কাছ থেকে প্রাডো গাড়ি নেওয়ার জন্য গণঅভ্যুত্থান করেছে! আগে পকেটে মানিব্যাগ ছিল না, এখন বিশাল অফিস। বিভিন্নভাবে পত্রপত্রিকায় এগুলো এসেছে। তারা বাংলাদেশকে হতাশ করেছে। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনকে বিতর্কিত করেছে। ‘এখন নতুন দরবেশ নামে একজনকে পাওয়া গেছে। যিনি ৪০০ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। পুরোনো দরবেশকে আমরা বিদায় করার পর আরেকজন নতুন দরবেশ এসেছে।’ তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র হচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা ১৬-১৭ বছর ধরে ষড়যন্ত্র করেছেন। কোনোভাবেই নির্বাচন মানতে চাননি। জালিয়াতির নির্বাচন করে ক্ষমতায় ছিলেন। শেখ হাসিনাকে বিদায় করা হয়েছে গণতন্ত্র ফেরানোর প্রত্যাশায়। এখনো যদি ভোটের দাবি জানাতে হয়, এরচেয়ে লজ্জা আর কিছু নেই। ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা কখনোই ছিল না, তারা এখন সরকার পরিচালনা করছে। আমি তাদের ছোট করছি না। গণতন্ত্র চাওয়ার কারণে, রাস্তায় মিছিল করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে একটা মামলাও হয়নি। এখন আপনারা একটা ভালো কাজ (নির্বাচন) করে যান, ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে আপনাদের নাম থাকবে। কৃষকদলের সাবেক এ আহ্বায়ক বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ধৈর্য ধরতে বলেছেন। বিএনপি ধৈর্য ধরে আছে। বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে, অনেক অত্যাচার সহ্য করেছে, নির্মমতার মুখোমুখি হয়েছে। মানুষ বিএনপিকে পছন্দ করে। মানুষ জিয়া পরিবারকে পছন্দ করে। বিএনপি ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ডুবেছে নিজের কারণে। তিনি বিএনপিকে নিয়ে অনেক উপহাস করেছেন। এখন যে কোথায় আছেন খুঁজেও পাচ্ছি না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন ব্যাপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন ও রেজাবউদ্দোলা প্রমুখ।

আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করবে যুব অধিকার
অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদ আমালের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছে যুব অধিকার পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সচিবালয় অভিমুখে রওনা করবে যুব অধিকার। এতে উপস্থিত থাকবেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুনসহ নেতারা। যুব অধিকারের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ৯ মাস পর বুধবার মধ্যরাতে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ সময় ছেলে ও শ্যালক তার সঙ্গে ছিলেন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ। এ সময় তার সঙ্গে ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ড. এএম নওশাদ ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে দেশছাড়ার সবুজ সংকেত পান সাবেক রাষ্ট্রপতি। আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো সংস্থার কাছে কোন অভিযোগ ছিল না বলে জানা গেছে। রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তারা তিনজন ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেন। উল্লেখ্য, আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগের সময় ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আ.লীগের কারা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন, জানালেন রিজভী
আওয়ামী লীগ করলেও যারা দলটির দুঃশাসন, বর্বরোচিত, লুটপাট, টাকা পাচার পছন্দ করতেন না কিংবা আগেই দলটি থেকে সরে গেছেন তারা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (০৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে অনেক নেতাকর্মী রাজনৈতিক সুর পাল্টে বিএনপিতে আশ্রয় নিয়েছেন এমন অভিযোগ আছে খোদ ত্যাগী নেতাকর্মীর। এমন অবস্থায় ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার, অন্যদিকে সেই দলের লোকদের দলে আসার সুযোগ দেওয়ার কথা বলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করছেন। রিজভী বলেন, কেউ দীর্ঘদিন রাজনীতি করেননি অথবা আওয়ামী লীগের আমলেও হয়তো একসময় আওয়ামী লীগ করত, কিন্তু আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, বর্বরোচিত, লুটপাট, টাকা পাচার পছন্দ করতেন না। আগেই আওয়ামী লীগ থেকে সরে গেছেন, তারা আসতে পারেন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন ইঙ্গিত দিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা চাচ্ছি, সমাজের যারা ফ্রেশ মানুষ, একদম ভদ্র মানুষ, যারা হয়তো অবসরে গেছেন তিনি একজন শিক্ষক হতে পারেন, একজন ব্যাংকার হতে পারেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে পারেন, একজন এনজিও কর্মকর্তা হতে পারেন, একজন কৃষক-শ্রমিকও হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের যে আদর্শ সেটা বিশ্বাস করেন কি না সেটা হলো প্রশ্ন।

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে ২৩টি মিটিং করেছে: হাসনাত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত তেইশটা মিটিং করেছে। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত তেইশটা মিটিং করেছে।’ এনসিপির এই নেতা লিখেছেন, ‘লিখে রাখেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। একটা পর্যায় গিয়ে বলা হবে, এক সময়ের জনসমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়।’ হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নাই, তার সঙ্গে আমরা নাই।’ এর আগে সকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আরেকটি পোস্ট করেছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, পুলিশ আসামি ধরলেও আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়। শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। সেই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি। আর আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগের বিচার করবেন? সবশেষ অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন- তা ইন্টেরিম, এখন পর্যন্ত কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন? উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয় নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির। এতে অন্যতম শীর্ষ পদে আসেন তিনি।

মাহফুজ-আসিফকে সরকার থেকে সরে যেতে বললেন এনসিপি নেত্রী
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সরে আসা উচিত বলে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।ফেসবুক পোস্টে এই এনসিপি নেত্রী লেখেন, এনসিপির কেউ না, জুলাইয়ের আগের সাধারণ জনগণের কাতারের তাজনূভা হয়ে বলছি, মাহফুজ আর আসিফের সরকার থেকে সরে আসা উচিত। সরে এসে আবার রাজপথে জনগণের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তারা যে সরকারের অংশ, সে সরকার আর অভ্যুত্থানপন্থি নাই। আপনাদের আর মানাচ্ছে না ওখানে। সরে এসে জনগণকে আশ্বস্ত করেন। জুলাইয়ের শহীদদের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন। তিনি লেখেন, আমিই এত মর্মাহত, শহীদ, আহতদের কেমন লাগছে তাদের চোখের সামনে আসামিরা দাপটের সঙ্গে মাথা উঁচু করে পালাচ্ছে। আমার মনে হয় আমাদের আবার রাজপথে এক হতে হবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে। কারণ জুলাই শেষ হয় নাই আদৌতে জুলাই এখনও চলছে।

আসামি ছিনিয়ে নিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের অভিযানের সময় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৭ মে) রাত ১০টার দিকে মাদারগঞ্জ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর থানার এএসআই মোতালেব হোসেন ও এএসআই মাইদুল ইসলাম একটি অভিযান চালিয়ে ওই এলাকার আরাজী পাইকপাড়া গ্রামের শাহজাহান নামের এক আসামিকে আটক করেন। ঠিক সেই মুহূর্তে স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. তরিকুল ইসলাম, মো. সজলসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি পুলিশের ওপর চড়াও হন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে টানাহেঁচড়া ও মারধর করে আটককৃত আসামি শাহজাহানকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ বিষয়ে রহিমানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হাসান মো. আব্দুল হান্নান (হান্নূ) বলেন, ‘তিনি আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি শুনেছেন এবং জানতে পেরেছেন যে হামলাকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে।’ অন্যদিকে, রহমানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আখতার ইসলাম জানান, ‘যারা এই ঘটনায় জড়িত তারা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।’ তিনি বলেন, ‘খুব শিগগির তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।' এছাড়া ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি। পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, চেক জালিয়াতিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি শাহজাহানের বিরুদ্ধে। সেই মামলাগুলোর ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবেই গতকাল রাতে পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়েছিল। আটকের পরই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অভিযানে পুলিশের সদস্যসংখ্যা কম থাকার কারণে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য থাকলে আসামি পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেত না। আমরা সেই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং আশা করি, খুব শিগগিরই তাকে আবার গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’ পুলিশ আরো জানায়, ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে পুনরায় গ্রেপ্তারের জন্য জোরদার অভিযান চলছে।
৫ আগস্টের আগে আ.লীগ নিষিদ্ধ চায় জুলাই ঐক্য
৫ আগস্টের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্য। না হয় ওইদিন সচিবালয় ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। বুধবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জুলাই ঐক্যের ব্যানারে 'আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ ও বিচারের দাবিতে' আয়োজিত মানববন্ধনে এই দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী বলেন, আগামী '৩৬ জুলাই’র মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার করতে হবে। জুলাই ঐক্য কোনও রাজনৈতিক দল নয়। তিনি বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি না হয়, তাহলে ‘৩৬ জুলাই’ সচিবালয় ঘেরাও দেওয়া হবে। যে সচিবালয়ে বসে এখনও ষড়যন্ত্র করা হয়, সেখান থেকে কাউকে বের করা সম্ভব হবে না। জুলাই শহীদদের রক্ত নিয়ে কাউকে টেন্ডারবাজি করতে দেওয়া হবে না। এসময় জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বাবু এমদাদ বলেন, ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালে শাপলা হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালে মোদীবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। আমরা এ জঙ্গি সংগঠনের বিচার চাই। আমরা বাংলাদেশপন্থিরা যতদিন বেঁচে আছি, জঙ্গিদের কোনও সংগঠন বাংলাদেশে হতে দেবো না। জাগ্রত জুলাইয়ের শামিম মাহদি বলেন, হাজারো শিক্ষার্থীর রক্তের সঙ্গে বেইমানি জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। আগামী জুলাইয়ের আগে যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, তাহলে আমরা পুনরায় জুলাই জাগ্রত করে তুলবো। আমরা আশ্চর্য হই, জুলাইয়ে শহীদ ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। আমাদের ক্যাপ্টেন হাসনাতের ওপর হামলা হয়। ফলে এ ফ্যাসিস্টদের বিচার করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে খুনের রক্ত লেগে আছে। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করেই নির্বাচনে যেতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করেই নির্বাচনে যেতে হবে। কারণ, অতীতে কিছু ভালো নির্বাচন হলেও ক্ষমতায় আসা সরকার জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করেনি। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গাজী আতাউর রহমান এ কথা বলেন। ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, অতীতে রাজনৈতিক সরকারগুলো হতাশ করেছে। অনেকবার অনেক সরকার পরিবর্তন হয়েছে; কিন্তু কেউই জনগণের কল্যাণে সেভাবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করেনি। এ জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার অবশ্যই শেষ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, সেই প্রশ্ন রেখেছেন গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘তারা কিসের আলোকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত? যেহেতু একটা সংস্কারের কার্যক্রম চলছেই, তাহলে কোন বিধানের আলোকে, কোন পদ্ধতির আলোকে তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে?’ অতীতে ভালো নির্বাচন হলেও ভালো একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘অতীতে খারাপ নির্বাচন যেমন হয়েছে, কিছু কিছু ভালো নির্বাচনও হয়েছে। কিন্তু ভালো নির্বাচনের পরেও আমরা ভালো দেশ পাইনি। সুশাসন পাইনি, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন পাইনি। আমরা দেখেছি, নির্বাচিত সরকারও স্বৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’ বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, মাহবুবুর রহমান, আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ প্রমুখ।

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান তারেক রহমানের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সংযম ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ সময় বুধবার (৭ মে) সন্ধ্যায় এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি। ওই পোস্টে সামরিক হামলার নিন্দা জানিয়ে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। তারেক রহমান বলেছেন, প্রতিবেশী অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ায় আমরা সামরিক হামলার নিন্দা জানাই এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, অভিন্ন স্বার্থ এবং আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্মিত একটি স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ অঞ্চল সবার সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করে। এদিকে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উভয় দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। এ নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারতের এ হামলাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। বিপরীতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল জানিয়েছেন, ভারতের নিজস্ব কোনো উত্তেজনা বাড়ানোর অভিপ্রায় নেই। তবে পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়ালে ভারত ‘দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া’ জানাতে প্রস্তুত।

ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতিতে আ. লীগ দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চক্রান্ত করছে: এনসিপি
দিল্লি-ইসলামাবাদ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্ত করছে ভারতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (৭ মে) দুপুরে পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ভারতের আকস্মিক হামলা দুই দেশের চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে এবং যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সরাসরি আঘাত করেছে, যা খুবই উদ্বেগজনক। উভয় পক্ষকে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতির স্বার্থে যথাযথ ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানায় এনসিপি। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ অবস্থায় ভারতে অবস্থানরত পলাতক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাজারও নেতাকর্মী বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জান-মালের ক্ষতি করতে সক্রিয় রয়েছে। অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্ত করছে। এসব বিষয় বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এনসিপি মনে করে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এ জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে এনসিপি সক্রিয় ভূমিকা পালনের দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। জনগণের সংগঠিত শক্তি এবং সর্বাত্মক সতর্কতাই বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র ও বৈদেশিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে।

হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার দেখানোয় ‘ধন্যবাদ’ তাপসের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক ভ্যানচালককে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে গান বাংলার কর্ণধর কৌশিক হোসেন তাপস। আজ বুধবার (৭ মে) সকালে চীফ মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদলত আসামিকে রাজধানী ঢাকার গুলশান থানার মামলায় গ্রফতারের আদেশ দেন। মামলার অভিযোগের নথি পর্যলোচনা করে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চলাকালীন সময় গুলশানের শাহজাদপুরে কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলন করছিল বৈষম্যবিরোধীরা। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন। এই হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলায় কয়েকজনকে গ্রফতার করা হয়েছে। তদন্তে কৌশিক হোসেন তাপসের নাম এসেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গ্রেফতার দেখানোর প্রার্থনা করছি। গ্রেফতার দেখানো হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।’ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘জুলাই আগস্টের সময় গুলশানের এক ভ্যানচালককে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে না দেওয়া ও পরে পায়ে গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তাপসের বিরুদ্ধে।’ শুনানি শেষে বিচারক তাপসকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা তাপস ‘বিরক্তির সুরে তিনবার বলেন, ধন্যবাদ’। এ মামলায় তাপস সহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদার।

দিন শেষে যুদ্ধ কারো জন্যই কল্যাণকর নয়: জামায়াত আমির
সম্প্রতি কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত-পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি হামলার খবরও এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, হামলা-পাল্টা হামলার মতো ঘটনা কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। দিন শেষে যুদ্ধ কারো জন্যেই কল্যাণকর নয়। বুধবার (৭ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের ঘটনার গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত বলেও মনে করেন জামায়াত আমির। ফেসবুক পোস্টে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, ইতোমধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে। তা কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। তিনি বলেন, এ ঘটনার গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত এবং উভয় পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। দিন শেষে যুদ্ধ কারো জন্যেই কল্যাণকর নয়। কাশ্মিরবাসীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান আন্তরিকভাবে কামনা করি। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। রাতের আঁধারে চালানো এ হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এমনই দাবি করেছে ভারত। পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে লজ্জাজনক বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের মধ্যে চলমান সংকট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। অন্যদিকে এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একইসঙ্গে উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স, এএফপি ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরসহ পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় গভীর হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশ চীন। এ দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। চীন দুই দেশেরই প্রতিবেশী এবং পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। পাকিস্তানে ভারতের সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় হতাশা প্রকাশ করে চীন জানিয়েছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

জামায়াতের নায়েবে আমিরের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের মতবিনিময়
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ চায়না দূতাবাসে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এ মতবিনিময় সভা অত্যন্ত আন্তরিকতা ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ দেশের সার্বিক বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন। মতবিনিময়কালে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের জনগণ ও সরকারের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে এবং এ ধরনের পারস্পরিক সংলাপ দুই দেশের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা আরও জোরদার হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৮ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এলজিআরডি মন্ত্রীর শ্যালক ও লাকসাম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, বিপুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, গোবিন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম, কান্দিরপাড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, তাজুলের উন্নয়ন সমন্বয়কারী কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আজকরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের শাহীন ও কাওছার আহমেদ। আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রাতে লাকসাম পৌরসভার নশরতপুর এলাকার বাইপাস মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর ও ১৮ আগস্ট রবিবার রাতে বসত-বাড়িতে চাঁদা দাবি, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও পরিবারসহ হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৯০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। লাকসাম থানা পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

খালেদা জিয়া ভালো আছেন, জাতির প্রয়োজনে নেতৃত্বও দেবেন: ডা. জাহিদ
দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে চিকিৎসায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে শারীরিকভাবে অনেকটা ভালো আছেন। একইসঙ্গে পারিবারিক আবহে থাকায় মানসিকভাবেও তিনি আগের চেয়ে ভালো। এমন তথ্য জানিয়ে তার পূর্ণ সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জাতির প্রয়োজনে নেতৃত্বও দেবেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয়তার বিষয়ে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ এই নেতা বলেছেন, ‘একজন নেত্রী বলতেন উনি (খালেদা জিয়া) যায় না কেন, যায় না কেন? এখন উনিই চলে গেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়া আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। দেশনেত্রী জাতির যখনই প্রয়োজন হবে তখনই নেতৃত্ব দেবেন।’ মঙ্গলবার (০৬ মে) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজার সামনে লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে ফেরার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ। এসময় খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ। ওনার জন্য সবাই দোয়া করবেন। এই চিকিৎসক বলেন, লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তারেক রহমান তার মায়ের চিকিৎসার জন্য যা করেছেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি চেয়ারপারসনের মানসিকভাবে প্রশান্তি আনতে কাজ করেছেন তার তিন নাতনি। আমরা তাদের কাছেও কৃতজ্ঞ। লন্ডনের বিএনপির নেতাকর্মী, অন্যান্য দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে অনেকেই দোয়া করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। চেয়ারপারসনও সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতের কারণে তিনি অনেকটা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক ভালো আছেন। লম্বা জার্নি করেছেন, আবার বাসা পর্যন্ত আসতে একটা সময় লেগেছে। তারপরও মানসিকভাবে ভালো আছেন। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জাহিদ হোসেন বলেন, সবাই চেয়ারপারসনকে সুস্থ করার জন্য দোয়া করেছেন, তার প্রতি যে আনুগত্য দেখিয়েছেন, মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।। বিশেষ করে কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়েছেন এজন্য দেশটির আমির ও সরকারের প্রতি খালেদা জিয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান ডা. জাহিদ।বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফেরার পথে সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দেয়ার কথা তুলে ধরে ডা. জাহিদ বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সব আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই গণমাধ্যমের প্রতি। চেয়ারপারসনকে হাসপাতাল থেকে বাসায় গৃহবন্দী করে রাখার দিন থেকে এখন পর্যন্ত সবসময় আপনারা পাশে ছিলেন।