বিএনপিকে যমুনায় ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আলোচনার জন্য আগামী ২ জুন বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীতে কৃষকদলের আলোচনা সভায় এ তথ্য জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। যারা নির্বাচন চায় না, তারা বিএনপি নেতাদের দেশদ্রোহী ও অন্য দেশের এজেন্ট বলছে। ১৭ বছরের ত্যাগের প্রতিদান দিচ্ছে একটি মহল বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ফ্যাসিবাদের কুটচালে জাতির মধ্যে একটি গোষ্ঠী বিভেদ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র এই নেতার। আগামী ২ জুন প্রধান উপদেষ্টা আলোচনার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিকতার কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই নেই তাদের৷’ সংস্কারের নামে কলা ঝুলানো হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে, এটা জনগণের দাবি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন দেওয়ার কোনো কারণ নাই।’ ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের জন্য একটি যুক্তি থাকলেও তা যেন সরকার প্রকাশ করে, সেই দাবি জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।

‘প্রধান উপদেষ্টার কথায় মনে হচ্ছে মানুষ চিনতে ভুল করেছে বিএনপি’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জাপানে বসে প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাতে মনে হচ্ছে বিএনপি মানুষ চিনতে ভুল করেছে। শনিবার ( ৩১ মে) শিশু একাডেমিতে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত আলোকচিত্র ও হস্তলিপি প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার বিজয় হয়েছিল গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। এবার গণতন্ত্রের বিজয় আদায় করতে হবে।’ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে গণমানুষের পাশে ছিলেন উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘জিয়াউর রহমান প্রচারমুখী ছিলেন না, প্রচারই তার পিছু নিতো। জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘তিনি যা করতেন না, তা বলতেন না। অধিক সময় নিতেন না তার বক্তব্যে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য কী করতে হবে, কেন করতে হবে, তা নিয়েই তিনি কাজ করতেন।’ তিনি আরও বলেন, জাতির মধ্যে জিয়াউর রহমানের আগমনটাও অত্যন্ত আকস্মিক। তার সম্পর্কে অনেক স্মৃতি রয়েছে, সব বলা সম্ভব নয়। জিয়া মানেই জাতীয়তাবাদী, জিয়া মানেই দেশপ্রেমিক, জিয়া মানেই গণতন্ত্র। তার প্রত্যেকটা পদচারণার মধ্যে উদ্দেশ্য থাকতো জাতির জন্য। জাতি জিয়ার আদর্শকে বুঝতে পারলে আমাদের মধ্যে ভয় থাকবে না।

বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি ভিত্তিহীন: হাসনাত আবদুল্লাহ

বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে এক ফেসবুক স্টাটাসে তিনি এসব কথা বলেন। এনসিপির এই শীর্ষ নেতার ফেসবুক পোস্টটি ঢাকা মেইল পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, “এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপির সাথে সিট নেগোসিয়েশন করেছে। আমরা হাইপোথেটিকালি ধরে নিলাম, পর্দার অন্তরালে সিট নেগোসিয়েশন হয়ে গেল, একটা আন্ডারস্ট্যাডিং হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন, ডিসেম্বর না, সবাই সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি হয়ে যাবে।” আমরা উল্লেখিত রাজনীতিবিদের প্রতি আমাদের সম্মান ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বলতে চাই, বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তৃতিকে প্রধান লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আরও লক্ষ্য করেছি, উল্লেখিত আলোচনায় এবং অন্যত্র এনসিপি সম্পর্কে ভিত্তিহীন এক ইম্প্রেশন তৈরির চেষ্টা হয় যে, দল গোছানোর স্বার্থে এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এনসিপি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে। এনসিপি বলে এসেছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি; কাজেই আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে হবে। এনসিপি মনে করে, প্রশাসনিক সংস্কারসহ অন্যান্য মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে সংস্কার ব্যতীত আয়োজিত নির্বাচন একচেটিয়া ও একপেশে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। যেনতেন ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়; বরং মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক, এনসিপি সেই প্রত্যাশা করে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে এনসিপি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়।

অসুস্থতার জন্য বিশ্রামে রাকিব, রোববার থেকে থাকবেন কর্মসূচিতে: ছাত্রদল

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ বিশ্রামে আছেন। তাই তিনি গত দুদিন যাবত দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। রোববার থেকে তিনি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। শুক্রবার রাতে ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক (সহসভাপতি মর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে তিনি দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন, ইনশাআল্লাহ। ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক সকলের কাছে ছাত্রদল সভাপতি শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন।’ ছাত্রদল সভাপতির শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের গুজব হতে সতর্ক থাকার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।’ উল্লেখ্য, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ছাত্রদলের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গণমাধ্যমে এ বিজ্ঞপ্তি দিলো।

গণতন্ত্রের শহীদদের জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু ব্যক্তি নন, তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের প্রতীক। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ তার শাহাদাৎবার্ষিকীর এই মাহফিলে আমরা শুধু তার জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, সেই সব শহীদদের জন্যও দোয়া করছি।’ শুক্রবার (৩১ মে) পূর্ব লন্ডনের একটি হলে বাদ মাগরিব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত খতমে কোরআন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, ‘খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, মাত্র এক বছরেরও কম সময় আগে, গত জুলাই-আগস্টে পলাতক স্বৈরশাসক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যে দমন–পীড়ন চালিয়েছে, তা নজিরবিহীন। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, অসংখ্য মানুষ আহত ও পঙ্গু হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়ে ৬৩ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।’ বাংলাদেশে আজ যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছেন, তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘ইতিহাস একদিন এই দমন-পীড়নের বিচার করবে, আর সেদিন জনগণের রায়ই হবে চূড়ান্ত।’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। দোয়া মাহফিলে শহীদ জিয়াউর রহমান, ৫ আগস্টের শহীদ, এবং গণতন্ত্রের জন্য জীবনদানকারী সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

‘ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণ রাস্তায় নেমে আসবে’ : খায়রুল

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, জনগণ এই দেশের মালিক, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সসম্মানে বিদায় নেবেন। আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, ডিসেম্বরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট দিন, তারিখ ঘোষণা করলে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আর যতই প্রলম্বিত করবে, দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে, দেশ সংঘাতের দিকে চলে যেতে পারে। জনগণের ধৈর্য, সংযম, সহনশীলতার বাঁধ ভেঙে গেলে তারা রাস্তায় নেমে আসবে। শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নরসিংদীর শিশু একাডেমীর হল রুমে শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর ৪৪ তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদী জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খায়রুল কবির খোকন বলেন, জাপানে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন কেবল একটি দল নির্বাচন চায়। প্রকৃতপক্ষে দেশের আপামর জনতাসহ সকল দলই একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। ছাত্র-জনতার পাশাপাশি বিএনপির দীর্ঘ সময়ে আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমাদের পছন্দের নোবেলজয়ী ইউনূস দায়িত্বে আছেন। তাহলে নির্বাচন নিয়ে এত টালবাহানা কেন? কোনো কারণে যদি আবার স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত হয় তাহলে সেই দায় কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে দেশ ও জাতির সংকটে, ক্রান্তিকালে, বিপর্যয়ের সময় শহীদ জিয়াউর রহমান দুইবার নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। যা আমাদের গর্বের বিষয়। তার অল্প শাসনামলে তিনি বিশ্বের নেতা হয়েছিলেন। শহীদ জিয়াউর রহমান বিদেশে মানবসম্পদ রপ্তানির দিগন্ত উন্মোচিত করেছিলেন। জিয়াউর রহমান মুক্ত অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। তিনি শাসনামলে দেশকে স্বনির্ভর করেছিলেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগামী দিনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত, জনগণের ভোটের অধিকার, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এই আন্দোলনে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে যাব না। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবো। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনজুর এলাহীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বাছেদ ভূইয়া, ভিপি জলিল, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু সালেহ চৌধুরী, শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল, ফারুক উদ্দীন ভূঁইয়া, রবিউল ইসলাম রবি, ইকবাল হোসেন, বিজি রশিদ নওশের, আমিনুল হক বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ভিপি নাসির, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক স্বপ্না আহমেদ, হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদুল কবির ভূঁইয়াসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ।

দেশের সমস্যার কথা বারবার বাইরে গিয়ে বলে লাভ নেই : আমীর খসরু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের সমস্যার কথা বারবার বাইরে গিয়ে বলে লাভ নেই, এখানেই বলতে হবে, এখানেই সমাধান। শুক্রবার (৩০ মে) চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরস্থ এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর বিএনপির স্বরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, আমরা নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে একটা নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন। এটা কোন দল চাই না চাই, এটা বড় কথা না। গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বাংলাদেশের মানুষ আছে।প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আর কোনো কিছু কথা বললে দেশের মধ্যে বললে ভালো। দেশের বাইরে গিয়ে বেশি কথা না বলে দেশের ভেতরে বলেন, এটাতো বাংলাদেশের সমস্যা। এই সমস্যা বাইরে গিয়ে বলে তো কোনো লাভ নেই। আমরা যদি বারবার বাইরে গিয়ে এসব কথা বলতে থাকি, তাহলে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে না। এইখানে বলতে হবে, এইখানে সমাধান।বাংলাদেশের মানুষই সমাধান।সব সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের জনগণ উল্লেখ করে খসরু বলেন, দিন শেষে সংস্কার বলেন, বিচার বলেন,যত কিছু বলেন, সমাধান বাংলাদেশের মানুষ। সমাধান দেওয়ার দ্বিতীয় কোনো অস্ত্র নেই। একটাই মাত্র অস্ত্র বাংলাদেশের জনগণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সঠিকভাবে, সঠিক জায়গায়, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিন্তায়, জিয়াউর রহমানের চিন্তায় গড়তে হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পিড থাকতে হবে। স্পিড চলে গেলে হবে না। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে যেতে হবে। সামনের বড় চিত্র দেখতে হবে।চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আবদুল আউয়াল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

ড.ইউনূস কেন বিএনপিকে নির্বাচন নিয়ে দোষারোপ করলেন বোধগম্য নয়: সালাহউদ্দিন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন নিয়ে বিএনপিকে কেন দোষারোপ করলেন তা বোধগম্য নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার যখনই ডেকেছেন রাজনৈতিক দলগুলো তার সঙ্গে আলোচনা করেছে। সব দলই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা কেন বিএনপিকে নির্বাচন নিয়ে দোষারোপ করলেন তা বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, সমস্ত জাতি নির্বাচনের জন্য অপেক্ষমান। তাই শিগগিরই ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন এমন ঘোষণার আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিও জানান বিএনপির অন্যতম এই নীতি নির্ধারক। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য জন্ম হয়েছে জিয়াউর রহমানের। বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র, অগ্রগতি রুখে দেওয়ার জন্য জিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমরা এমন সমাজ বিনির্মাণ করব, যেনো দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করতে না হয়।

ছাত্রদল সভাপতির পদ হারানোর গুঞ্জন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব পদ হারিয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই গুঞ্জনের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এর আগে আজ সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদল সভাপতি পদ হারিয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই গুঞ্জনের সত্যতার ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। এই গুঞ্জনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, তিনি (রাকিব) অসুস্থ থাকায় আজকের প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে পারেননি। খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়া। এমন কিছুই ঘটেনি।

নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন চেয়েছে এই ডিসেম্বরের মধ্যে। এবং এই ডিসেম্বরে নির্বাচন করার কথা কিন্তু ইউনূস সাহেব নিজে বলেছেন। আমরা বলি নাই। পরবর্তীতে শিফট হয়ে জুন মাসে চলে গেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন যদি করতে হয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে। আর যদি নির্বাচন করতে না চান তাহলে দায় নেবেন ড. ইউনূস। শুক্রবার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিদেশে বসে ড. ইউনূস বলেছেন— একটি দল নির্বাচন চায়। আমরা বলতে চাই, একটা লোক নির্বাচন চান না; তিনি হচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উনি নির্বাচন চান না। মির্জা আব্বাস বলেন, সংস্কার সংস্কার করতে করতে বর্তমান সরকার আমদানি করেছেন বিদেশি লোকদের। জিয়া বহু সংস্কার করেছেন, কিন্তু কোনো বিদেশি পরামর্শক আনেননি, কাউকে আমদানি করেনি। কিন্তু বর্তমান সরকার কিছু বিদেশি পরামর্শক এনেছে। সংস্কার সংস্কার করতে করতে আজ এমন অবস্থায় চলে গেছে, তারা নির্বাচন দিতে চায় না। তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। না হয় বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচন আদায় করবে। নির্বাচন না হলে এ দেশের ভৌগলিক অবস্থান ঠিক থাকবে না। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।

জিএম কাদের এখনো বাইরে কিভাবে, প্রশ্ন সারজিসের

জাতীয় পার্টি (জাপা) আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দোসর বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। একই সঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের এখনও বাইরে কিভাবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এই প্রশ্ন তুলেছেন সারজিস আলম। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দোসর। বিরোধী দলের যাবতীয় সুবিধা ভোগ করে আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দিয়েছিল এই জাতীয় পার্টি। সারজিস আরও লিখেছেন, প্রত্যেক ইলেকশনের আগে অবৈধ সরকারি দলের বিরোধিতার নামে ভন্ডামি করতো। তারপর নির্বাচনের ঠিক কয়েকদিন আগে জিএম কাদের ভারতে গিয়ে নেগোসিয়েশন করে ডামি বিরোধী দল সেজে বসে থাকতো। তিনি লিখেছেন, সেই জিএম কাদের এখনো বাইরে কিভাবে? সরকারকে ধাক্কা না দিলে কি কাজ হয় না? নাকি প্রত্যেকটা কাজের জন্য ছাত্র-জনতাকে নতুন করে মাঠে নামতে হবে?

ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব : তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া বক্তৃতায় আজ তিনি এ কথা বলেন। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান তারেক রহমান। রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের ইনটেনশন সঠিক থাকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। তবে ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।’ এই সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ দেয়নি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের উপক্রম হয়েছে এমন আরও অনেক। তারা সরকারে কাছে তা তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন না। জনগণের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ নেই উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া প্রশাসন ও ফাইল দিয়ে সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেত, তবে রাজনীতির প্রয়োজন হতো না।’ তারেক রহমান বলেন, ‘প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) সঠিক থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে আমি এটাও মনে করি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে, সংস্কার প্রস্তাব শেষ করে...যেহেতু কমবেশি সকল বিষয়ে... অধিকাংশ দলগুলোর মধ্যে মত রয়েছে, একমত রয়েছে, ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব।’ অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণের আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছুই নেই। বরং স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করুন, করতে সাহায্য করুন।’ গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বৈধ হলেও এই সরকার কোনোভাবেই জবাবদিহিমূলক নয় বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের স্থিতিশীল সরকার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না। বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যা বা সম্ভাবনার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার বা বলার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য রাখেন।

কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন আল্লাহ মালুম, খলিলুর প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তার (খলিলুর রহমান) বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থাগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি আর কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, আল্লাহ মালুম। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা বলেছি, আগে আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) উপদেষ্টা পরিষদ সংস্কার করুন। আপনার উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ নয়। এখানে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন। তারা একটা দলের। আরেকজন উপদেষ্টা ২০ বছর বিদেশে ছিলেন। এখন বাংলাদেশ উদ্ধার করতে এসেছেন। তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তিনি (খলিলুর রহমান) আর কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, আল্লাহ মালুম। আরও কয়েকজন ফ্যাসিবাদের দোসর আপনার উপদেষ্টার মধ্যে আছে। আগে এই সংস্কার করুন। কারো নাম বলতে চাই না, বিব্রত হবেন। শর্ষের মধ্যে ভূত রেখে সংস্কার সংস্কার করেন। সেই সংস্কার হবে না। সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে সালাহউদ্দিন বলেন, কয়টার সংস্কার করেছেন। সমস্ত সংস্কার এক সপ্তাহ থেকে এক মাসের ভেতরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যদি আপনি না পারেন আমাদেরকে বলেন। শুধুমাত্র যে সমস্ত সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে ঐক্যমত সৃষ্টি হবে সেই সমস্ত সাংবিধানিক সংশোধনগুলো নির্বাচিত সংসদের মধ্যেই করতে হবে। এটাই হল আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য। সুতরাং সংস্কার সংস্কার বলে যে আপনারা মুখে ফেনা তুলছেন- কয়টা সংস্কার করেছেন? তিনি বলেন, যে সংস্কারগুলো নির্বাহী আদেশে সম্ভব ওইসব করে দেন। জুডিশিয়ারি সংস্কার তো প্রায় হয়ে গেছে ঐক্যমত্য। অপেক্ষা করার কোনো দরকার নেই। জুডিশিয়ারি ভার্ডিক্টের মধ্য দিয়ে অনেক সংস্কার ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন। যে সমস্ত জুডিশিয়ারি সংস্কারগুলো দরকার তার মধ্যে প্রধানত হচ্ছে, একটা জাস্টিস নিয়োগের আইন করা, প্রধানত হচ্ছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মধ্যে আরও বেশি সংস্কার করা। এটা আর্টিকেল ৯৬ অনুসারে... প্রধানত সংস্কার হচ্ছে আর্টিকেল ১৬ অনুসারে… অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নিয়ে আসা। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রশাসনিক কমিশনের যেসব সংস্কার বিষয়ে একমত হয়েছে তা উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন। নির্বাচনকে বিলম্বিত না করার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সুতরাং বাকি থাকলো সংবিধান সংস্কার। সংস্কারের এই সমস্ত বাহানা করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করবেন না। জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করবেন না। গণতান্ত্রিক শক্তি সময়ের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার মতো কোনো শক্তিকে সুযোগ দেবে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য রাখেন।

নির্বাচনের ডেট না দিলে বিএনপিই দিয়ে দেবে : দুদু

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি ডেট দিতে না পারেন, আরেকটু অপেক্ষা করেন, আমরাই ডেট দিয়ে দেব।’ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান শীর্ষক খুলনা মহানগর বিএনপির আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আপনাদের যারা কর্মচারী—এখানে পুলিশ, প্রশাসন যারা দেশের মানুষের অর্থে চলে, আর সেখানে আপনি যদি নববধূর মতো আচরণ করেন; তাহলে আমরা কী করব। আমাদের তো একটা ডেট দরকার, দরকার না। এখন পাত্রী আমরা দেখতে গেছি, পছন্দ হইছে। একটা দিন বলতে হবে না। দিন না বললে তো আমরা কাউকে দাওয়াত দিতে পারব না। দিন বলবেন না দাওয়াত দিয়ে কী হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ড. ইউনূসের বিরোধিতা করিনি। তিনি যদি সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হন, আমরা ব্যর্থ হবো না। তারেক রহমান চূড়ান্ত কথা বলেননি। যখন চূড়ান্ত কথা বলবেন তখন সারা দেশ স্থবির হয়ে যাবে, সেদিন বুঝবেন।’বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘যদি বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকত। একমাসের আন্দোলনে হাসিনার পতন হতো না। আমরা যে আন্দোলন নিয়ে গর্ব করি। সেই ২৪-এর আন্দোলনকে যারা ছোট করছে, শত শত না হাজার হাজার ছোট ভাই-বোনকে সহযোগিতার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান সেখানে পাঠিয়েছেন। বিএনপি বলেছে, আগামীতে যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যায়, আগামীতে আহত-নিহত পরিবারের দায়িত্ব নেবে বিএনপি। আপনারা ইতিহাস পড়েন। না হলে কিভাবে এক মাসের অর্জন ছোট করছেন।’শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নেতার নেতা উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে অপেক্ষমাণ জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছিলেন। তার রাষ্ট্রক্ষমতাকালীন সাড়ে ৩ বছরে তার বিরুদ্ধে একটি নয়া পয়সারও দুর্নীতি নেই। আগামী দেড় শ বছরেও তার কোনো দুর্নীতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি এমন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, যার মৃত্যুর পর একটি প্লট, ব্যাংক ব্যালান্স বা সম্পদ ছিল না। তিনি জাতিকে ‘বাংলাদেশি’ একতাবদ্ধ করেছিলেন। তার রাজনীতি ছিল মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। তাই রাষ্ট্রপতি হয়েও তিনি শ্রমিক পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করতেন। সরকারের সমালোচনা করে দুদু বলেন, ‘ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, আগে তো তার সংস্কার হওয়া উচিত। উচ্চ আদালতে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর নির্দেশ দিলেও তিনি ও তার উপদেষ্টা তা হতে দেননি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন। পদত্যাগ নাটক করেছেন। হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে ৫ কোটি বিনিয়োগ করেছেন।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ উচ্চারণ করেছেন। আর ড. ইউনূস সরাব আগে গ্রামীণ ব্যাংক, সবার আগে টাকা দেব না ছয় মাসের; সবার আগে বিদেশে লোক পাঠাব-লাইন্সেস নেব বলছেন। তিনি রাষ্ট্রের আমন্ত্রণে কোথাও যাননি, ব্যবসার কাজে গেছেন। সাম্য হত্যা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা গুপ্ত সংগঠন চালিয়েছে উল্লেখ করে শামসুজ্জামান দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেখানে তাদের স্ত্রীরা ভোট দিলে তা ধানের শীষে যাবে। তাই নারীসহ মানুষের অধিকার আদায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু প্রমুখ।

শহীদ জিয়ার আদর্শ, দেশপ্রেম, সততা জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রেরণার উৎস : বিএনপি মহাসচিব

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, নির্ভীক নির্মোহ রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়ার আদর্শ, দেশপ্রেম, সততা ও কর্মনিষ্ঠা আজ জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রেরণার উৎস। তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার মহান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহতকরণ, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির রক্ষাকবচ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তনকারী, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’-এই কালজয়ী দর্শনের প্রবক্তা, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, সফল রাষ্ট্রনায়ক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকীতে তাঁর অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। বিএনপি মহাসচিব ৩০ মে মহান নেতার শাহাদাত বার্ষিকী সর্বস্তরে ব্যাপকভাবে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহসহ সকল স্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ছাত্র-জনতাসহ সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গতবছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটায়। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে এখন পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন, জনগণের কাছে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, পরমতসহিষ্ণুতাসহ সকল নাগরিক অধিকার নির্ভয়ে প্রয়োগ করার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে-যাতে গণতন্ত্র স্থায়ী রূপ লাভ করে। জাতীয় জীবনের সকল সংকট, সংগ্রাম ও বিনির্মাণে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় ইস্পাত কঠিন গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, মানুষের মনে ভয় আর আতঙ্ক সৃষ্টি করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছিল। জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। নির্যাতন ও জুলুম ছিল পতিত ফ্যাসিবাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র হাতিয়ার। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে এক মাফিয়া অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিল পরাজিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠী। মির্জা ফখরুল বলেন, জীবদ্দশায় জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, ৭১’ এর মরণপণ লড়াই এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণে জিয়াউর রহমানের অনন্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭১’ সালের প্রারম্ভে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, অথচ রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বিধা ও সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬ মার্চ মেজর জিয়ার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে, ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, ছাত্র, শ্রমিক, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হানাদার বাহিনীর ধ্বংসের শক্তিকে প্রতিহত করে দেশবাসী বিজয়ের দিকে ধাবিত হয়। তিনি বলেন, বিজয় লাভের পর দেশীয় শাসকগোষ্ঠীর অগণতান্ত্রিক দমনমূলক শাসন শোষণের যাঁতাকলে মানুষের প্রাণ হয় ওষ্ঠাগত, দেশের মানুষের নাগরিক অধিকারগুলো হরণ করা হয়, গণতন্ত্রকে দেয়া হয় মাটিচাপা। চালু করা হয় নির্মম একদলীয় দু:শাসন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে উচ্ছেদ করা হয় স্বেচ্ছাতন্ত্রের আক্রমণে। একদলীয় প্রভুত্ববাদের অধীনতার নাগপাশে বন্দী করা হয় সারা জাতিকে। চলমান অরাজকতার সেই সময়ে সিপাহি-জনতার মিলিত শক্তির মিছিলে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন। মির্জা ফখরুল বাণীতে আরও বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেই ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্রসহ নাগরিক স্বাধীনতা। গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক সার্থকতা নিশ্চিত করেন। শুরু করেন উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করা। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করেন। ব্যক্তিজীবনেও দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও সুবিধাবাদের কাছে আত্মসমর্পণকে তিনি ঘৃণা করতেন। তাঁর অন্তর্গত স্বচ্ছতা তাঁকে দিয়েছে এক অনন্য ঈর্ষণীয় উচ্চতা। তাঁর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের কারণেই বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা শুরু হয় এবং অর্থনীতি মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মহান জাতীয়তাবাদী নেতার জনপ্রিয়তা দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারী শক্তি কখনোই মেনে নিতে পারেনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশ বিরোধী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে শুরু করে গভীর ষড়যন্ত্র। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশ প্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা যতই চেষ্টা করুক কোন ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলেই তিনি বিস্মৃত হন না, বরং নিজ দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে অবস্থান করেন। নিখাদ দেশপ্রেমিক এই মানুষটিকে কেউ কখনো তাঁর বিশ্বাস থেকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি। তিনি সারাজীবন আদর্শকে বুকে ধারণ করে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে গেছেন।

খুব শিগগিরই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাবো: খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘শহিদ জিয়া যে গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য শাহাদাত বরণ করেছেন, সেই গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন যাত্রা আজও পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাবো— এই হোক জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার।’ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-এর ৪৪-তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির উদ্যোগে রাজধানীর রমনাস্থ ইনস্টিটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে প্রধান অতিথির রেকর্ডকৃত বক্তব্যে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই লক্ষ্যে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলার জন্য আমি বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন, সবার জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মাধ্যমে সকল সমাধানের যে রাজনীতি শহিদ জিয়া রেখে গেছেন; তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।’ এসময় তিনি জিয়াউর রহমানের নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেন, আলোচনা করেন। দেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন খাতে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শপথ অনুষ্ঠান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইশরাকের

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকারকে শেষবারের মতো বলছি- শপথ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় শুক্রবার (৩০ মে) থেকেই নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে এ আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক। দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিতে আসলেও, তার আগমন ঘিরে নগর ভবন প্রাঙ্গণ মুহূর্তেই স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ইশরাকের সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে জমায়েত হন। একইসঙ্গে ডিএসসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মচারীরাও মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে নগর ভবনের সর্বস্তরের কর্মচারীরা গত ১৫ দিন ধরে কার্যত সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। ভবনের প্রতিটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ফল বাতিলের দাবিতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন ৩ মার্চ আদালতে মামলা করেন। সরকার পতনের পর ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ওই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন থেকে গেজেট প্রকাশিত হয়। তবে শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন না করতে ১৪ মে একটি রিট দায়ের করা হয়। এরপর থেকে ১৫ মে থেকে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামেন। হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার ও বুধবার রিটের শুনানি নিয়ে তা খারিজ করে দেয়। বৃহস্পতিবার আদালত ইশরাককে শপথ পড়াতে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা নির্ধারণ করে। এরপর আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দেন তিনি। আজ (২৯ মে) আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে জানিয়ে দিয়েছে, শপথ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এখন নির্বাচন কমিশনের। এ অবস্থায় ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা না করে, তবে আন্দোলন আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী হবে।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কোনো ছাড় নয়: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি, সিদ্ধান্ত ও শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে কেউ কিছু করলে সংগঠন তার দায় নেবে না, ছাড়ও দেবে না। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এ কঠোর বার্তা দেন জামায়াত আমির। ডা. শফিকুর রহমান লিখেন, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি, সিদ্ধান্ত ও শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে কেউ কিছু করলে সংগঠন তার কোনো দায় নেবে না এবং এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে কাউকে কোনো ছাড়ও দেওয়া হবে না— ব্যক্তি তিনি যেই হোন না কেন। ‘অতএব, সবাইকে দলীয় শৃঙ্খলা, সিদ্ধান্ত ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য বজায় রেখে কাজ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এর কোনো ভিন্নতা যেখানেই ঘটুক, সংগঠন অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবে,’ যোগ করেন তিনি।

‘আবরার ফাহাদকে হত্যা জায়েজ ছিল’- বক্তব্যের দায় যুবদলকে দিল ছাত্র ইউনিয়ন!

সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মুক্তিকে কেন্দ্র করে শাহবাগ নিয়ে মন্তব্য করেন বুয়েটে ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার আবরার ফাহাদের ছোটভাই আবরার ফাইয়াজ। সেখানে তিনি বলেন, ‘এ টি এম আজহারের মুক্তিতে শাহবাগের কণ্ঠে আজ পরাজয়ের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। একাত্তরের প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ চিরদিনের জন্য ধ্বংস করেছে এ শাহবাগই।’ এই স্ট্যাটাসের ওপর ভিত্তি করে বার্তা বাজার তাদের ফেসবুক পেজে একটি ফটোকার্ড শেয়ার করে। পরে আজ এই ফটোকার্ড নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি শাহরিয়ার ইব্রাহিম। সেখানে তিনি লেখেন, ‘জাশির কুত্তা আবরার ফাহাদকে হত্যা কেন জায়েজ ছিল দেখ তোরা।’ শাহরিয়ার ইব্রাহিমের এ মন্তব্যের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন নেটিজেনরা। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে শহীদ হওয়া একজন ভুক্তভোগীকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের আচরণের সঙ্গে মিল রয়েছে মনে করছেন তারা। পরে সমালোচনার মুখে বুধবার রাতে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র ইউনিয়ন জানায়, আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে মন্তব্য করা শাহরিয়ার ইব্রাহিম ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ নন। তার বক্তব্যের দায়ভার ছাত্র ইউনিয়নের নয়। ইব্রাহিমের বক্তব্য ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থন করে না। শাহরিয়ার ইব্রাহিম এক সময় ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর সংসদের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী যুবদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত জানা গিয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ যৌথ বিবৃতিতে শাহরিয়ার ইব্রাহিমের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আবরার ফাহাদকে হত্যার পর ছাত্র ইউনিয়ন সবার আগে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছে। বিচার নিশ্চিতে রাজপথে থেকেছে। তাই শাহরিয়ার ইব্রাহিমের বক্তব্যকে ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক বক্তব্য হিসেবে ধরে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শাহরিয়ার ইব্রাহিমের বক্তব্যের দায়ভার শুধুমাত্র তার। তিনি এক সময় ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী যুবদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গিয়েছে। ইব্রাহিমের বক্তব্যকে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলার সুযোগ নেই। আমরা ইব্রাহিমের বক্তব্যের নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়ন, এটিএম আজহারের মুক্তিকে কেন্দ্র করে আবরার ফাহাদের ছোটভাই আবরার ফাইয়াজের মন্তব্যকে নিন্দনীয় বলেও মন্তব্য করেন।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশের তরুণ সমাজ

সমাজের তরুণ জনগোষ্ঠী নিয়ে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজন করেছে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।’ আজ বুধবার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এ সমাবেশ রাজধানীর নয়া পল্টনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমানের ‘দিল্লি নয়, পিণ্ডি নয়, নয় অন্যকোনো দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে তারুণ্যের সমাবেশের সমাপ্তি হয়। আজকের সমাবেশে তরুণদের উপস্থিতির আধিক্য দেখা গেছে। সমাবেশ স্থলের অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল তরুণরা। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তরুণদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় তাদের সাথে কথা বলে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তরুণেরা আজকের এ সমাবেশ যুক্ত হয়েছেন। তাদের চোখে মুখে এক ধরনের উচ্ছ্বাস। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সমাবেশে এসেছেন অনেকই তবুও ক্লান্তির কোন চাপ নেই তাদের মধ্যে। চার পাঁচজন একসাথে হলেই হঠাৎ স্লোগান দিচ্ছেন, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশ; বাংলাদেশের প্রাণ, তারেক রহমান। তারেক রহমানকে ঘিরেই কেবল তাদের কথাবার্তা, আলোচনা। বিকেল সাড়ে তিনটায় সমাবেশ শুরু হলেও সকাল থেকেই নয়া পল্টনে এসে জড়ো হয় নেতাকর্মীরা। বিকেল পৌঁনে ছয়টা পর্যন্ত নয়াপল্টন এলাকায় ছিল নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি। তারেক রহমানের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শেষ হয়েছে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকা থেকে তারুণ্যের সমাবেশ এসেছেন শাকিবুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের শাসন দেখেছি। এ দেশর মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি বিগত বছরগুলোতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমাদের সংগ্রাম মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। তরুণদের নিয়ে তারেক রহমানের যে কর্মপরিকল্পনা তা আমাদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে। বাংলাদেশর তরুণ সমাজ আজ তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তারেক রহমান যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন মঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়ানো ছিল একদল তরুণ। সবার গায়ে ছিল হলুদ টি শার্ট। আর মাথায় ছিল একই রঙের ক্যাপ। সবাই মনোযোগী শ্রোতার মত দাঁড়িয়ে তারেক রহমানের ভাষণ শুনছিলেন। তারেক রহমান আজকের ভাষণে তরুণদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলা, তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানোর কথাসহ তরুণদের নিয়ে দেশ গড়ার নানান বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তারেক রহমানের ভাষণ শেষে তরুণদের ওই দলের এক তরুণ অন্যদের বলছিলেন, ‘বাংলাদেশর তরুণ সমাজ, বেকার সমাজ নিয়ে বিএনপির যে পরিকল্পনা তা অন্যকোনো দলের নেই। বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনায় তরুণ সমাজের কথা বার বার উঠে এসেছে।’ তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, তারা সবাই সিলেট থেকে আজকের সমাবেশে এসেছেন। সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক সাইফ উল্লাহ সাইফ বলেন, ৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে এ দেশে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি যে ত্যাগ শিকার করেছে তা অবর্ণনীয়। তারেক রহমান দলকে সঠিকভাবেই পরিচালিত করেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন। তার দেশে ফেরা নিয়ে তরুণরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তারেক রহমানের দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে আমাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম তা পূর্ণতা পাবে।

এক মাসের ব্যবধানে ফের ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক

এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। বুধবার (২৮ মে) এই সাক্ষাতের তথ্য জানায় ব্রিটিশ হাইকমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটি একাধিক আলোচনার অংশ বলে জানায় ব্রিটিশ হাইকমিশন। হাইকমিশন জানায়, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিক আলোচনার অংশ হিসেবে এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন এবং একটি গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথকে নির্দেশ করে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এই সরকারের কেউ যদি ক্ষমতায় থাকতে চায় বা রাজনীতি করতে চায় তাহলে আপনাদের বলব, ক্ষমতা ছেড়ে রাজনীতিতে আসেন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। আবারও বলছি, ডিসেম্বরে মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। আর সবাইকে বলছি, আপনারাও নির্বাচনের জন্য প্রস্ততি নিন। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে। অল্প সংস্কার না বেশি সংস্কার এ নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই, জনগণের কাছে যান, তারা কী বলতে চায় তা মন দিয়ে শুনুন। সে অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, জনগণই বিএনপির ক্ষমতার মূল উৎস। ক্ষমতায় না থাকলেও বিএনপি জনগণের উন্নয়নের কথা সবসময় চিন্তা করে। বিএনপি নির্বাচিত হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করবে। যেকোনো দলের কর্মসূচি পালনের জন্য দরকার একটি নির্বাচনী সরকার। আর বিএনপির শুরু থেকেই এই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আর কথা বলার রাজনীতি নয়, এখন বাস্তবায়ন ও দৃষ্টান্ত স্থাপনের সময়। দেশের বহুল জনসংখ্যাকে যদি জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারি, তাহলে আমরা আর পিছিয়ে থাকতে হবে না। আমরা দেখেছি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে আজ ইশরাকের শপথে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ইশরাকের শপথ গ্রহণে বাধা দিয়ে আজ স্বৈরাচারের ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ায় সরকার পরিচালনায় একটি কথা আছে- গণতন্ত্র সবার আগে। কিন্তু কথাটি শুধু লেখামাত্র। তাই বলতে চাই, এমন কিছু করা যাবে না, যাতে মানুষের বিশ্বাস বা আস্থার জায়গায় থাকা না যায়। বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা যেন থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় স্লোগান দিয়ে তিনি বলেন, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয় সবার আগে বাংলাদেশ।’ তারেক রহমান আরও বলেন, নারী-পুরুষ সবার জন্য মৌলিক কর্মমুখী শিক্ষা সর্বোচ্চ জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে বিএনপি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ৪ কোটি পরিবার রয়েছে। তাদের মধ্যে গ্রামীণ পর্যায়ে যারা অসচ্ছল রয়েছে তাদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড করার উদ্যোগ নিয়েছি। রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে তাদের আর্থিক সহায়তার আওতায় আনা হবে। এতে একদিকে তাদের আর্থিক সংকট কাটবে এবং স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ হবে। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের জন্য ফারমার্স কার্ড প্রণয়ন করা আমাদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এই ফারমার্স কার্ডে জমির পরিমাণসহ যাবতীয় তথ্য থাকবে। কাজের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বেকারত্ব দূরীকরণে বিভিন্ন সেক্টরকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তোলা হবে। বিএনপি ই-কমার্স ও আইটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন করতে চায়। দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চায়। এ জন্য এক থেকে তিন বছরের কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকারি ও প্রাইভেট সেক্টরকে সমন্বয়ে কাজ করছে বিএনপি। খাল খনন ও বৃক্ষ রোপণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছরে ২৫-৩০ কোটি বৃক্ষ রোপণ করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারে বেশিরভাগ বিদেশি নাগরিক : মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের জন মানুষের আকাঙ্ক্ষিত সরকার, ছিল আস্থার সরকার। এ সরকারের কাছ থেকে আমরা কিছু পাইনি। এ সরকারের মধ্যে বেশি ভাগ এ দেশের নাগরিক নয়। তারা বলেন, সংস্কার করে নির্বাচন দেবে, কিন্তু তারা ৯ মাসেও সংস্কার করতে পারেননি, ৯ বছরেও পারবে না। কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে, কী সিদ্ধান্ত নেবে তা তারা জানে। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মির্জা আব্বাস বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, করিডর, দ্বিতীয় ওয়ার্ল্ড, স্টার লিঙ্ক দিয়ে কী করছেন? আপনারা মনে করছেন বুঝি না? আমরা বুঝি। দেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। তিনি বলেন, দেশ প্রেমিক মানুষের ভেতরে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। আমরা কথা বললেই, কাজ শেষ করার কথা বলেন। আমরা জানি, কোন কাজ শেষ করতে পারবেন না। এ সরকারের মাথা থেকে আগা পর্যন্ত পচন ধরেছে। এসময় কিছু লোক ইচ্ছাকৃত ভাবে চাঁদাবাজি করছে, এদেরকে প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না: খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্রের পথ হলো নির্বাচন। এই নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না। নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে টালবাহানা চলবে না। ঐকমত্যের ভিত্তিতে যদি সংস্কার না হয় তাহলে সেই সংস্কার দেশের জনগণ মানবে না কান খুলে শুনে রাখুন। তিনি বলেন, আপনারা সংস্কার করার কে? সংস্কার করবে দেশের জনগণ। নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সংস্কার করবে। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আমীর খসরু বলেন, সংস্কারের প্রথম প্রস্তাব দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০। এরপর আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২৭ দফা দিয়েছেন। পরবর্তীতে যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ৩১ দফা দিয়েছেন। জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেন।