
জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন, তবে সেখানে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা তিনি নাকচ করেছেন। তিনি জানান, তিনি মাত্র এক দিনের জন্য লন্ডনে এসেছেন এবং তাই এই সময়ে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কোনো সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) লন্ডনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "যেহেতু সুযোগ নেই (দেখা করার), তাই আমি এ প্রশ্নের উত্তর দেব না।" তিনি আরও জানান, "আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে, পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। আমাদের চিন্তা হচ্ছে অন্ততপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার গঠন করা উচিত।"
ডা. শফিকুর রহমান ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক সংসদীয় আন্ডার-সেক্রেটারি সীমা মালহোত্রার আমন্ত্রণে এক দিনের সফরে লন্ডনে গেছেন। লন্ডনে তার নির্ধারিত কার্যক্রম শেষ হলে তিনি সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে যাবেন। ২১ ডিসেম্বর তার দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।
লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "নির্বাচন হবে, এবং যদি আমরা বিরোধী দলে বসি, তবে যারা সরকারি দলে থাকবে, তাদের প্রতি আমরা সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করব। আমাদের যদি জনগণ ভালোবাসা দিয়ে নির্বাচিত করেন, আমরা বলেছি, আমরা ভিন্ন চিন্তা করছি। পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমাদের চিন্তা হচ্ছে অন্ততপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার গঠন করা উচিত।'"
তিনি আরও বলেন, "নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব স্টেকহোল্ডারদের দুটি শর্ত মানতে হবে। প্রথমত, তারা নিজে দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। দ্বিতীয়ত, বিচার হবে সবার জন্য এবং এতে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে না। যারা এই শর্ত মেনে চলবে, তাদের আমরা সাদরে আমন্ত্রণ জানাব।"
বৃহস্পতিবার সীমা মালহোত্রার সঙ্গে বৈঠক শেষে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "আমরা আলোচনা করেছি দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়ে। তিনি খুবই আন্তরিক ছিলেন এবং তাদের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করেছেন।"
তিনি বলেন, "তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য ছিল, 'তোমাদের জাতি এখন পরিবর্তন চায়।' এর মানে হচ্ছে, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মতো আমাদের উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোও বাংলাদেশে একটি বড় পরিবর্তন আশা করছে।"
আন্ডার-সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠকের পর, ডা. শফিকুর রহমান পূর্ব লন্ডনের একটি হলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক 'মিট দ্যা প্রেস' অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখানে তিনি শরিফ ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। এছাড়া, জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
হাদির হত্যাকারীর পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "সবাই বলে ভারত আমাদের বন্ধু দেশ, আমরাও চাই ভারত তাদের দায়িত্ব পালন করুক। ভারতকে উচিত হবে বাংলাদেশের চিহ্নিত, পলাতক, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের সসম্মানে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া। এইটাই হবে প্রকৃত বন্ধুত্ব।"