
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই তার ছোট বোন মাসুমা সুলতানা এবং তার স্বামী মাওলানা আমির হোসেন দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মাসুমা সুলতানা বলেন, "আমার ভাইকে আওয়ামী লীগের লোকজন হত্যা করেছে। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।"
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর ) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভগ্নীপতি মো. আমির হোসেন বলেন, "হাদি এখন আর আমাদের পরিবারের একক সম্পদ নয়, তিনি পুরো বাংলাদেশের। সরকার ও পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যেখানে সিদ্ধান্ত হবে, সেখানেই তাকে সমাহিত করা হবে।" তিনি আরও বলেন, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শরিফ ওসমান হাদির যে আত্মত্যাগ, তা যেন পাঠ্যপুস্তকে লিপিবদ্ধ করা হয়। শাহবাগ চত্বরকে হাদির নামে নামকরণের দাবিও জানান তিনি।
তবে, শরিফ ওসমান হাদির ওসিয়ত ছিল—তার মৃত্যুর পর যেন তাকে পিতার কবরের পাশে শায়িত করা হয়। সে অনুযায়ী, নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের হাড়িখালি মুন্সিবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
শরিফ ওসমান হাদির হত্যার প্রতিবাদে ঝালকাঠির নলছিটিতে জুমার নামাজ শেষে ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পৌর শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাইস্কুল সড়কে এসে জড়ো হন। এরপর মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে নলছিটি পৌর বাসস্ট্যান্ডের কাছে শহিদ সেলিম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিকাল ৩টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন মনোনীত ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান হেলাল, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান মনিরসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও মসজিদের ইমামগণ।
বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, ভারতের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা আরও বলেন, হাদি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও খুনিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে তাদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। সমাবেশ শেষে হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।