
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত। বাসায় অবস্থানকালে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও জ্বরের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গত ২৩ নভেম্বর তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন পরীক্ষায় তার ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও কিডনির অবস্থায় গুরুতর অবনতি ধরা পড়লে দ্রুত তাকে কেবিন থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর ২৭ নভেম্বর তার শরীরে একিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস শনাক্ত হয় এবং এই রোগের চিকিৎসা এখনো চলমান রয়েছে। পাশাপাশি তার দেহে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ ধরা পড়ায় চিকিৎসকরা শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ প্রয়োগ করছেন।
চিকিৎসকরা আরও জানান, কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাকে ডায়ালাইসিসে নিতে হয়েছে এবং নিয়মিতভাবে সেই চিকিৎসা এখনো চালু আছে। পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং ডিআইসি জটিলতার কারণে তাকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান ট্রান্সফিউশন দিতে হচ্ছে।
নিয়মিত ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষায় অ্যাওর্টিক ভাল্ভে সমস্যার লক্ষণ দেখা দিলে ‘টিইই’ পরীক্ষার মাধ্যমে ইনফেকটিভ অ্যানডোকার্ডাইটিস শনাক্ত করা হয়। এর পর আন্তর্জাতিক চিকিৎসা নির্দেশনা অনুযায়ী বোর্ডের চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা শুরু করেন।
দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল টিম প্রতিদিন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিচ্ছে।