
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও চিকিৎসকদের নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসার আওতায় রাখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বোর্ডের এক চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে দেশে রেখেই নিরাপদ চিকিৎসা দিতে চায় মেডিকেল বোর্ড। তিনি আইসিইউতে আছেন কি না জানতে চাইলে চিকিৎসক বলেন, তিনি সিসিইউতে রয়েছেন এবং সেখানে আইসিইউ সমমানের বেশ কিছু লজিস্টিক সুবিধা রয়েছে। এমনকি তাঁর কেবিনও সিসিইউ ধাঁচে প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি কথা বলতে পারছেন কি না এমন প্রশ্নে চিকিৎসক বলেন, সিসিইউ রোগীরা সাধারণত কম কথা বলেন, কারণ তাঁদের নিয়মিত ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়। তবে ডাকলে তিনি কিছুটা কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “আশা করা যায়, সবার দোয়ায় তিনি সেরে উঠবেন।”
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ৮০ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখসহ নানা জটিল রোগে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানিয়ে একটি বিবৃতি পাঠায়। হাসপাতালের প্যাডে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বোর্ডের প্রধান ডা. শাহাবউদ্দিন তালুকদার জানান, সাম্প্রতিক পরীক্ষায় তাঁর শরীরে বেশ কিছু জটিলতা ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট বাড়া, রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়া ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা ও বাইপাপ সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরে অবস্থার উন্নতি না হলে ফুসফুসসহ অন্যান্য অঙ্গকে বিশ্রাম দিতে তাঁকে ভেন্টিলেটরে নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ২৭ নভেম্বর তাঁর একিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস শনাক্ত হয়, যার জন্য নিবিড় চিকিৎসা চলছে। গুরুতর সংক্রমণের কারণে খালেদা জিয়াকে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। কিডনি কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডায়ালাইসিস শুরু করা হয় এবং এখনো নিয়মিত ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও ‘ডিআইসি’র কারণে তাঁকে রক্ত ও রক্তের উপাদান ট্রান্সফিউশন দেওয়া হচ্ছে।