
নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন ও দ্রুত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দলটি একদিকে মাঠে রাজনৈতিক কর্মসূচি জোরদার করছে, অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে সংলাপের পথ খুঁজছে।
দলটির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে গত বৃহস্পতিবার জামায়াত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এখনো প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সাক্ষাতের সময় জানানো হয়নি।
জামায়াতের মতে, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন নিশ্চিত করতে হলে অবিলম্বে সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারের ধীরগতি সেই উদ্যোগকে অনিশ্চিত করে তুলছে। এ কারণে দলটির নেতৃত্ব এখন সরকারের অবস্থান পর্যালোচনা করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণে মনোযোগ দিচ্ছে।
দলটির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি আমাদের এমন অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হয় যে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়, তবে প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।”
জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, লন্ডন বৈঠকের পর সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার প্রভাবে প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির প্রতি ঝুঁকেছেন। তাদের দাবি, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনসহ সাম্প্রতিক বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বিএনপির দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণভোট ইস্যুতেও সরকারের উপদেষ্টারা বিএনপির মতকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বলে তাদের ধারণা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক নেতা বলেন, “সরকার এখন একটি দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা হারাচ্ছে।”
গণভোটের সময়সূচি ও কাঠামো নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপির অবস্থান, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটাররা দুটি ব্যালটে ভোট দেবেন। অন্যদিকে জামায়াতের দাবি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পর আলাদা সময়ে গণভোট আয়োজন করতে হবে এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত।
গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, “একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে।”
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজন সংস্কার বাস্তবায়নকে গুরুত্বহীন করে দেবে, এতে কার্যত সংস্কার প্রক্রিয়া ভণ্ডুল হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি। সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছি। জামায়াত রাষ্ট্রসংস্কারে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। এ পথে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে আমরা মাঠে থাকব।”
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন[email protected]ঠিকানায়।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন[email protected]ঠিকানায়।