শিশু গ্রেপ্তারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৩০ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে আইন অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে এই কমিটি গঠনের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
রোববার বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়। আদালত একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিশু আইনের প্রয়োগে অবহেলা কেন বেআইনি গণ্য হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।
এই রিটটি দাখিল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস ও আবিদা গুলরুখ। তারা গত ২১ জুলাই জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন। শুনানি শেষে উৎপল বিশ্বাস বলেন, “গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় শিশুদের গ্রেপ্তারে ‘শিশু আইন ২০১৩’ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি এবং তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ইতিমধ্যে ১১ শিশুকে গ্রেপ্তার করে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে সাধারণ আসামিদের মতো জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যা অমানবিক ও শিশু আইন লঙ্ঘন। হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সুনির্দিষ্টভাবে তদন্তের পর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।”
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, গঠিত কমিটিকে খতিয়ে দেখতে হবে—শিশুদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় শিশু আইন ২০১৩ অনুসরণ করা হয়েছিল কি না, এবং বর্তমানে তারা কোথায় এবং কী অবস্থায় রয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।
উৎপল বিশ্বাস জানান, গত ২০ জুলাই দৈনিক সমকালে প্রকাশিত ‘গোপালগঞ্জে গ্রেপ্তার ২৭৭ জন কারাগারে, রয়েছে ৯ শিশুও’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন রিট আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, আদালত শুধুমাত্র তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশই দেননি, বরং শিশু গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কেন শিশু আইন অনুসরণ করা হবে না, সেই ব্যাখ্যা চেয়ে রুলও জারি করেছেন। রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেল সুপারসহ সরকারের আটটি সংস্থাকে।
প্রসঙ্গত, ১৬ জুলাই এনসিপির আয়োজিত এক সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ শহরে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচটি হত্যাকাণ্ডসহ মোট ১২টি মামলা দায়ের হয়, যেখানে আসামি করা হয় ১০ হাজার ১৩৭ জনকে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৩১৪ জন, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু রয়েছে।