ইসরায়েলে আবারও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, হতাহত অন্তত ৭০

ইসরায়েলে আবারও নতুন করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মধ্য ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে চালানো সর্বশেষ এই হামলায় আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৬৭ জনেরও বেশি মানুষ। এদিকে ইরানের চালানো সর্বশেষ এই হামলায় ইসরায়েলের বহু এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (১৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সোমবার ভোরে ইরান ফের ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার ফলে দেশজুড়ে সাইরেন বাজতে শুরু করে। ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অংশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং বহু এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই হামলায় অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৬৭ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল সংস্থা ইউনাইটেড হাটজালাহ জানায়, তারা কেন্দ্রীয় ইসরায়েলের তিনটি এলাকায় আহতদের চিকিৎসা দিয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন ১০ বছর বয়সী শিশু রয়েছে, যার অবস্থা গুরুতর। ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শহরের একটি ভবনে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তেল আবিবেও দুটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার খবর দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর হোম ফ্রন্ট কমান্ড রোববার রাত থেকে সোমবার ভোরের মধ্যবর্তী সময়ে নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দেয়। অন্যদিকে ইসরায়েলি রেড ক্রস (এমডিএ) জানায়, তারা চারটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার রিপোর্ট পেয়েছে এবং সেখানে তাদের দল পাঠিয়েছে। তারা অন্তত ২৯ জনকে চিকিৎসা ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা মাঝারি, বাকি ২৬ জন হালকা আহত। এছাড়া অনেকে আতঙ্কজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন, তাদেরও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরও হতাহতের খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি রেড ক্রস। এদিকে ইসরায়ের উত্তরের হাইফা শহরেও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কান। একই সময় ইয়েমেন থেকে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। কান আরও জানায়, একই সময়ে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার কারণে সাইরেন বেজে ওঠে।

ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসির গোয়েন্দাপ্রধানসহ ৩ ইরানি জেনারেল নিহত

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে যে, রোববার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার উপপ্রধান হাসান মোহাক্কিক নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার এছাড়া হামলায় আরও একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসেন বাঘেরী নিহত হন বলে জানিয়েছে ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো। এই হামলা ইসরায়েলের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে চালানো বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অংশ, যা শুরু হয় ১৩ জুন ভোরে। ইসরায়েল জানায়, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের লক্ষ্য নিয়ে অভিযান শুরু করেছে। এর আগে হামলায় ইরানের একাধিক পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সামরিক নেতার বাড়িতে নির্ভুল আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি পক্ষ দাবি করেছে, এসব হামলা ‌'অস্তিত্বগত হুমকি নির্মুলের অংশ'। এদিকে আধা সরকারি সংবাদ মাধ্যম তাসনিমের খবরে বলা হয়, রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং জেনারেল হাসান মোহাক্বিক ও মোহসেন বাঘেরি তেহরানে এক বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় রাজি নয় ইরান

দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইরান। দেশটি বলেছে, ইসরায়েল তাদের ওপর প্রথম যে হামলা চালিয়েছে, আগে সেটির প্রতিশোধ নেবে তারা। এছাড়া ইসরায়েলের হামলা চালাতে থাকলে তারা কোনো আলোচনায় বসবে না।খবর রয়টার্সের। রোববার (১৫ জুন) এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ইরান মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান এবং কাতারকে জানিয়েছে ইসরায়েলি হামলা চলাকালীন তারা কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আগ্রহী নয়। রয়টার্সকে এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, ইরানিরা কাতার এবং ওমানকে জানিয়েছে, ইরান তখনই সত্যিকারের যুদ্ধবিরতির আলোচনা করবে যখন ইসরায়েলের প্রথম হামলার পূর্ণ প্রতিশোধ তারা নেবে। এর আগে ইসরায়েলি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, ইরান যুদ্ধবিরতির জন্য ওমান ও কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এবার ইসরায়েলিদের ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চল ছাড়তে বলল ইরান

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বেশির ভাগই ইসরায়েলি সেনাদের দখলে। স্থলসেনা দিয়ে, অথবা মানুষজনকে জায়গা খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে এবং বোমা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী এই ভূখণ্ড দখল করছে। এবার ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলিদের ফিলিস্তিনি অধিকৃত অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি ও মেহের নিউজ। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ‘ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের’ প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, ‌‌‘এটি অদূর ভবিষ্যতে অবশ্যই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।’ মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানি সেনাবাহিনী ইসরায়েলিদের অধিকৃত অঞ্চল ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এটিই তাদের জীবন বাঁচানোর একমাত্র উপায়। প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি সরকারের ভুল গণনার ফলে ইরানের বীর সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক সেই অপরাধমূলক শাসনের প্রতি এক চূর্ণবিচূর্ণ, শিক্ষণীয় এবং দুঃখজনক প্রতিক্রিয়া দেখানো ছাড়া আর কোনও উপায় বাকি নেই। সশস্ত্র বাহিনী বলছে, গত কয়েক দিন ধরে, ইরান সঠিকভাবে এবং সফলভাবে ইহুদি শত্রুর সামরিক, নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ইরানি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সায়াদ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের উদ্দেশে সতর্ক করে বলেছে, ‘অপরাধী শাসনব্যবস্থাকে তোমাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে দিও না। ইরানের ধ্বংসাত্মক প্রতিশোধের পরিধি দখলকৃত অঞ্চলের সমস্ত কোণকে অন্তর্ভুক্ত করবে।’ তিনি বলেন, সতর্কবার্তায় মনোযোগ না দেওয়া ইসরায়েলিদের জন্য আরও কঠিন পরিণতি ডেকে আনবে। এ ছাড়া ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইলিদের তাদের নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ এলাকা’ ত্যাগ করতে বলেছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একই দিন নতুন সামরিক কমান্ডার নিয়োগ করেন এবং বলেন, ‘ইসরায়েলের জীবন অন্ধকার হয়ে পড়বে।’ এর কিছুক্ষণ পরেই ইরান ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে, ধাপে ধাপে ছোড়া হয় ক্ষেপণাস্ত্র। ইরানি কর্মকর্তারাও বলেছেন, যতক্ষণ প্রয়োজন, ততক্ষণ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ইসরায়েলের হাইফায় আঘাত হানল ইরানের মিসাইল

ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফাতে আঘাত হেনেছে ইরানের ছোড়া মিসাইল। ইসরায়েলি উদ্ধারকারী সংস্থা জাকা জানিয়েছে, সেখানকার একটি ভবন মিসাইলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়ে ইরান। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের ক্যামেরায় হাইফা শহরে বিস্ফোরণ ধরা পড়ে। ওই সময় হাইফার আকাশ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। ইসরায়েলি ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসও জানিয়েছে, একটি ভবনে সরাসরি মিসাইল আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা। ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় মিসাইলের আঘাতে অন্তত চারজন আহত হয়েছে। এখন হতাহতের সংখ্যা নিরূপণ করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ইরাকের সশস্ত্র যোদ্ধারা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে ইরাকের সশস্ত্র যোদ্ধারা। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গত দুইদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে সংঘাতে যোগ দেয়ার অনুরোধ করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে ওয়াশিংটন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি না করাই গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে অনেকটাই স্পষ্ট যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে ইসরায়েলের প্রতি। ট্রাম্প বলেন, ইরানের উচিত ছিল তার কথা শোনা। তিনি তাদের ৬০ দিনের সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, কিন্তু শুক্রবার (১৩ জুন) ছিল ৬১তম দিন। এমন পরিস্থিতিতে ইরান-সমর্থিত ইরাকি যোদ্ধারা যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে না জড়াতে সতর্ক করেছে। রোববার (১৫ জুন) ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহেরের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইরাকে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহ বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, তারা এই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর সামরিক গতিবিধির উপর নিবিড় নজর রাখছে। গোষ্ঠীটি বলেছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তারা কোনও দ্বিধা ছাড়াই সমগ্র অঞ্চলে তার (যুক্তরাষ্ট্র) স্বার্থ এবং ঘাঁটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তারা আরও জানিয়েছে, ইরানের কারও সমর্থনের প্রয়োজন নেই এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য তাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতা রয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্রসহ আকাশপথে ইরানকে সহায়তা করছে চীন-রাশিয়া: রিপোর্ট

ইসরায়েলি গণমাধ্যম চ্যানেল ফোরটিন দাবি করেছে, তেহরান ও তেল আবিবের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে চীন ও রাশিয়া ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিমান চালান পরিবহনে সহায়তা করছে। বেইজিং এবং মস্কো উভয়ই ইরানের ওপর হামলার জন্য ইসরায়েলের নিন্দা করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শনিবার ইরানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তবে চীনের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, ইরানের পরমাণু ইস্যু সমাধানের কূটনৈতিক উপায় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ইসরায়েলি মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, গত জুন ৬ যুক্তরাষ্ট্র দশজন ব্যক্তি এবং সাতজন প্রতিষ্ঠানের ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওয়াশিংটন বলেছে, এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ইরানের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হংকং-ভিত্তিক হিরো কম্পেনিয়ন লিমিটেড, প্লজকম লিমিটেড এবং কিনলার ট্রেডিং লিমিটেড। ওয়াল স্ট্রীট জার্নালের খবর অনুযায়ী, ইরান চীন থেকে হাজার হাজার টন ব্যালিস্টিক মিসাইলের উপাদান অর্ডার করেছে। লেনদেনের সাথে পরিচিত সূত্রকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি দাবি করেছিল, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচির ভবিষ্যৎ আলোচনা করার সময় 'সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠন' করতে চাইছে।

ইসরাইলকে ‘আরও কঠোর জবাব’ দেওয়া হবে: ইরানের প্রেসিডেন্ট

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, হামলা না থামালে ইসরাইলকে ‘আরও কঠোর জবাব’ দেওয়া হবে। ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। খবর বিসিসির। ইসরাইল হামলা অব্যাহত রাখলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। এক্ষেত্রে ইসলামি দেশগুলোকে ‘দৃঢ় অবস্থান’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। টেলিফোনে আলাপকালে তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন, ইরান কোনো সংঘাত শুরু করেনি, বরং ‘দৃঢ়তার সঙ্গে’ ইসরাইলি হামলার জবাব দিয়েছে। এরআগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান ও ইসরাইল চলমান সংঘাত বন্ধে ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে’। সংঘাত বন্ধে করতে অনেক ফোনকল ও বৈঠক এখন চলছে। খবর সিএনএনের। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার সকালে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইরান ও ইসরাইলের একটি চুক্তিতে পৌঁছানো উচিত। দুই দেশে চুক্তিতে পৌঁছাবে—যেমনটা আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে করিয়েছিলাম।’ ট্রাম্প আরও লিখেছেন, আমি অনেক কিছু করি, কিন্তু কখনো কৃতিত্ব পাই না—তবে ঠিক আছে, জনগণ বোঝে। মেক দ্য মিডল ইস্ট গ্রেট অ্যাগেইন!

গাজায় গণহত্যা বন্ধে হেগের রাস্তায় হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় ‘গণহত্যা’ বন্ধে ডাচ সরকারকে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে রোববার হেগ শহরের রাস্তায় লাল পোশাক পরে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফামের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত অভিমুখে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা সারিবদ্ধ হয়ে প্রতীকী ‘লাল রেখা’ তৈরি করেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে এবং কেউ কেউ ‘স্টপ দ্য জেনোসাইড’ স্লোগান দিয়ে রোববার বিকেলে শহরের একটি কেন্দ্রীয় পার্ককে লাল সমুদ্রে পরিণত করেন। বিক্ষোভকারীরা ‘দৃষ্টি ফিরাবেন না, কিছু করুন’, ‘কুকর্মে ডাচ সহযোগিতা বন্ধ করুন’ এবং ‘শিশুরা ঘুমানোর সময় নীরব থাকুন, তাদের মৃত্যুর সময় নয়’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজকরা ডাচ সরকারকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, গাজার মানুষের অপেক্ষার সময় নেই। গণহত্যা বন্ধ করতে নেদারল্যান্ডসের যথাসাধ্য চেষ্টা করার কর্তব্য রয়েছে। ৬৭ বছর বয়সী ডোডো ভ্যান ডের স্লুইস এএফপিকে বলেন, গণহত্যা থামাতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে। আমি আর এটা নিতে পারছি না। এর আগে ১৮ মে হেগে এক বিক্ষোভে এক লাখেরও বেশি লোক অংশ নেন। আয়োজকরা এটাকে ২০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসাবে বর্ণনা করেন। ইসরাইলে হামাসের হামলার জের ধরে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ইসরেইলের এক হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ৫৪ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতে, জিম্মিদের মধ্যে ৩২ মারা গেছেন। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলের হামলায় অন্তত ৫৫ হাজার ২০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা একটি মামলার বিচার চলছে। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ইসরাইল গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। ইসরাইল এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

ইরানের হামলায় ধ্বংসস্তূপ ইসরায়েলের একটি এলাকা

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলি শহর বাত ইয়ামের একটি এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর দিচ্ছে। শনিবার রাতে চালানো ইরানের হামলায় সেখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়। দেশটির উদ্ধারকারী সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায় ইরানের ওই হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ভোরে ইরান একগুচ্ছ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাত ইয়াম শহর। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শহরের একটি আবাসিক এলাকা। গত দুদিনে ইরানের হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইরান সরকার।

ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে গিয়ে যে বার্তা দিলেন নেতানিয়াহু

ইরানে হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলজুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইরান। রাতভর চালানো এ হামলায় দখলদারদের হাইফা ও তেলআবিব শহরের বিভিন্ন অবকাঠামোয় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ইরানের এসব হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে। রোববার (১৫ জুন) ইরানের হামলায় ধ্বংস হওয়া বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করতে যান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনকালে তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট লেখেন। এ পোস্টে নেতানিয়াহু লেখেন, ‘ইসরায়েলি নারী, শিশু ও নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করার জন্য খুব বড় মূল্য দিতে হবে ইরানকে। আর তা খুব শিগগিরই ঘটবে। আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি উদ্ধারকারী দল ও ফ্রন্ট কমান্ডের সঙ্গে। ইসরায়েলের জনগণের পক্ষ থেকে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহানুভূতি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, আবার সবাইকে বলছি, আপনারা নির্দেশনা মেনে চলুন, এতে জীবন রক্ষা পায়। আমরা এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে আছি, এক নির্মম শত্রুর বিরুদ্ধে, যারা আমাদের ধ্বংসের পরিকল্পনা করছে। নেতানিয়াহু বলেন, আমাদের সেনারা ও পাইলটরা সাহসের সঙ্গে তাদের কাজ করে চলছেন ইরানে। এটি আমাদের বেঁচে থাকার যুদ্ধ। আমরা তাদের ওপর আরও কঠিন আঘাত হানব এবং আমরাই জয়ী হব।

ইসরায়েলে আবারও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে রবিবার মধ্য ও উত্তর ইসরায়েল এবং জেরুজালেম অঞ্চলে সতর্কতামূলক সাইরেন বাজতে শুরু করেছে। ইরানের সংবাদমাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) নিশ্চিত করেছে, তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হোম ফ্রন্ট কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যেসব এলাকায় সাইরেন বাজছে, সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। সতর্ক বার্তায় আরও বলা হয়েছে, সর্বসাধারণের চলাচল সীমিত করুন, যেকোনও ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। সতর্কবার্তা পেলে দ্রুত সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয় নিন এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করুন। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে একযোগে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এর ঠিক কয়েক মিনিট আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরান থেকে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা জারি করেছিল। ওই সময়ই নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষাপটে এই সর্বশেষ হামলা সংঘটিত হলো। পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র: আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল

ইরানের পাল্টা হামলায় আটকে গেলো নেতানিয়াহুর ছেলের বিয়ে

ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে আটকে গেলো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলের বিয়ে। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে নিজের ছেলের বিয়ে স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন এই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল সোমবার (১৬ জুন) বিয়ের পিড়িতে বসার কথা ছিল নেতানিয়াহুর ছেলে এভনের নেতানিয়াহুর। তবে, এর আগেই ইরানের সাথে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় তৈরি হয় যুদ্ধাবস্থা। এ অবস্থায় এক রকম বাধ্য হয়েই ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন নেতানিয়াহু। তেল আবিব থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে কিবুৎজ ইয়াকুম এভনের নেতানিয়াহুর বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বিয়ে উপলক্ষ্যে নেয়া হয়েছিল ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সোমবার কিবুৎজ ইয়াকুম এর ১.৫ কিলোমিটার রেডিয়াস পর্যন্ত আকাশসীমাও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

ইরানের হামলায় ২০০ ইসরায়েলি নিহতের দাবি

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত অথবা আহত হতে পারে বলে তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে শনিবার রাত এবং রোববার ভোরে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় এ ঘটনা ঘটতে পারে। তেল আবিবের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বাত ইয়াম এবং রেহবতকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইরান। এদিকে ইরানের হামলায় আহত ও নিহতের সংখ্যা নিয়ে ইসরায়েলি মিডিয়াতে পরস্পর বিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। কিছু সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় ৯ জন নিহত এবং ২০৭ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাত ইয়ামে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছে। ইসরায়েলের সংবাদ মাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইরানের হামলায় আহতের সংখ্যা ২৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। এছাড়া এ হামলায় তেল আবিবে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েল পরিচালিত রেডিওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাত ইয়াম শহের ইরানের হামলায় ডজন খানেক ঘরবাড়ি এবং ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নাগরিকদের ইসরায়েল ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিল যুক্তরাজ্য

ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে নাগরিকদের ইসরায়েলে 'সব ধরণের ভ্রমণ' এড়িয়ে যেতে বলেছে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর। নির্দেশিকা অনুসারে, একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি রয়েছে। কোনো সতর্কতা ছাড়াই পরিস্থিতি দ্রুত আরও খারাপ হতে পারে। লাইভ প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য 'প্রয়োজনীয়' কিছু ছাড়া অন্য সকল ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেওয়ার দুই দিন পর এই সতর্কতার মাত্রা বাড়ানো হলো। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হামলার পর দেশটির আকাশসীমা বন্ধ থাকায় গত তিন দিন ধরে ইসরায়েলে বিমান যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে, ইসরায়েলি আকাশসীমা বর্তমানে বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য বন্ধ রয়েছে। কোনো আগত বা বহির্গামী ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে না।

ইসরায়েলে হামলায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইয়েমেন

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে বড় ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেন। রবিবার ভোরে চালানো এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। তারা জানিয়েছে, এই অভিযান ইরানের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালিত হয়েছে। ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে তেল আবিবের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। রবিবার সকালে ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‌তেল আবিবের কেন্দ্রভাগে দখলদার ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে একটি নতুন সামরিক অভিযান চালিয়েছে আমাদের বাহিনী। তিনি জানান, এই হামলায় নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানা হয়েছে। এটি ছিল ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ও ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানের অংশ হিসেবে সমন্বিত প্রচেষ্টা। ইয়াহিয়া সারি আরও জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেনের বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট থেকে ইসরায়েলের দখলকৃত ইয়াফা অঞ্চলে ‘ফিলিস্তিন-২’ নামের একাধিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে। তিনি বলেন, ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নৃশংস আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যেভাবে ইরান তার নেতৃত্ব, সেনাবাহিনী ও জনগণের মাধ্যমে সাহসী ও অবিচল প্রতিরোধ দেখিয়েছে, ইয়েমেন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। সূত্র : রয়টার্স

তেহরানে দফায় দফায় বিস্ফোরণ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এক নজিরবিহীন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইরানের রাজধানী তেহরানে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেখানে সক্রিয় করা হয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র কয়েক মিনিট আগেও কমপক্ষে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যা ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দেয়। একই সঙ্গে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ইরান আগামী দিনে আরও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফ-এর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেন, চ্যালেঞ্জিং দিন সামনে আসছে। আগামী দিনগুলোতে আরও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এবং আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীও এক মুহূর্তের জন্য হামলা থামাচ্ছে না। ডেফরিন বলেন, এই মুহূর্তেও আমরা তেহরানে ডজনেরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছি। আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক সক্ষমতার ওপর আঘাত বাড়াচ্ছি, যাতে ঘরোয়া ফ্রন্টে (ইসরায়েলের অভ্যন্তরে) ঝুঁকি কমানো যায়। এই বিবৃতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এবং সামনের দিনগুলোতে সংঘাত আরও গভীর হতে পারে। সূত্র: আল-জাজিরা

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেব: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা ও অস্ত্রব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হবে।’ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ইঙ্গিত করে কাৎজ বলেন, ‘ইরানের স্বৈরশাসক নিজের শাসন টিকিয়ে রাখতে তেহরানকে বৈরুত বানিয়ে ফেলেছেন এবং তেহরানের জনগণকে জিম্মি করে রেখেছেন।’ এদিকে রোববার তৃতীয় দিনের মতো ইরানে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর জবাবে ইরানও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।

ইরানের হামলায় অন্তত ১৩ ইসরায়েলি নিহত: সিএনএন

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আজ রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তাসংস্থা সিএনএন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার রাতভর চলা হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। এর আগের দিন তিনজন নিহত হয়েছেন। সরকার বলছে, ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর। ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। এছাড়া আরও সাতজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি পরিষেবার সদস্যরা। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, রাতভর ২০০টিরও বেশি রকেট হামলার খবর পাওয়া গেছে। এসব রকেট ২২টি স্থানে আঘাত হানে। চিকিৎসক এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, হাইফা এবং তেল আবিবসহ ইসরায়েলজুড়ে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েল। এদিকে ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই দিনে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ৮০০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশুও রয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে, ‘ট্রু প্রমিজ ৩’ অভিযানের দ্বিতীয় ধাপে ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে ইসরায়েলে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হাইফা এবং কিরিয়াত এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র মাটিতে আঘাত করেছে নাকি বাধা দেওয়া হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ইরানে মোসাদের ২ সদস্য গ্রেফতার

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য বলে অভিযোগ তুলে দুজন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দাবি করেছে ইরান। তাসনিম নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলবোর্জ প্রদেশ থেকে এই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বিস্ফোরক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস প্রস্তুত করছিল। ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত ইরান আগেও বহু ব্যক্তিকে মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার ও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। বিশেষ করে, যারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ব্যাহত করতে নাশকতা বা হত্যাকাণ্ডের চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে তেহরানভিত্তিক থিঙ্ক-ট্যাংক ডিপ্লো হাউস-এর পরিচালক হামিদ গোলামজাদেহ বলেছেন, ইরানের জ্বালানি স্থাপনাসহ অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা দেশজুড়ে অস্থিরতা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে এক ধরনের ঐক্য তৈরি করেছে। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গোলামজাদেহ বলেন, নেতানিয়াহু ইরানিদের জন্য এক প্রকার উপকারই করেছেন। এই হামলাগুলোর পরিণতিতে ইরানিদের মধ্যে ব্যাপক ঐক্য দেখা গেছে। তিনি জানান, দেশের অভ্যন্তরে জনগণের মনোভাব এখনো অবিচল ও প্রতিরোধমুখী। তিনি আরও বলেন, সবাই বলছে—এটা ইসলামী প্রজাতন্ত্র নিয়ে নয়, সরকার নিয়ে নয়, এমনকি সংস্কারপন্থিদের নিয়েও নয়, এটা শুধুই ইরানকে ঘিরে। সূত্র: আল-জাজিরা

তেহরানে নতুন করে বিস্ফোরণ, বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার আহ্বান ইসরায়েলের

রাতভর হামলা-পাল্টা হামলার পর ইরানের রাজধানী তেহরানে নতুন করে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৫ জুন) স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা তৃতীয় দিনের মতো ইরানে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলে। রোববার ইরানের রাজধানীতে নতুন করে বিস্ফারণের শব্দ শোনা গেছে। তবে এই বিস্ফোরণে কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খবর অনলাইন ও হাম মিহানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির রাজধানী তেহরানের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আবারও সচল করা হয়েছে। নতুন হামলা মোকাবিলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম দৈনিক শারঘ তেহরানে বিস্ফোরণের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে তেহরানের পূর্বাঞ্চলে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়তে দেখা যায়। এদিকে ইরানের সামরিক স্থাপনার আশপাশের এলাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য সাধারণ ইরানিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে এ আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এক্সে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, ‌‌‘‘যে সকল ব্যক্তি... (ইরানের) সামরিক অস্ত্র উৎপাদন কারখানা অথবা এতে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান অথবা এসব প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছেন; তাদের অবিলম্বে এলাকা ছেড়ে যাওয়া উচিৎ।’’ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই সব এলাকায় ইরানিদের ফিরে না আসারও আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আইডিএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই সব স্থাপনার আশপাশে অবস্থান করা হলে, তা সাধারণ ইরানিদের জীবনকে ‘‘ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’’ সূত্র: এএফপি, বিবিসি।

ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে চীন

ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলের চলমান হামলাকে ‘নির্মম’ ও ‘বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে কড়া নিন্দা জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। একইসঙ্গে তিনি ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চীনের পূর্ণ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। শনিবার (১৪ জুন) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এজেন্সির বরাতে জানা গেছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে ফোনালাপে ওয়াং ই এ বার্তা দেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “চীন সবসময় ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ইসরায়েলের হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এই ধরনের সামরিক আগ্রাসন গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।” ওয়াং ই বলেন, হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানি কর্মকর্তারা, যা একধরনের নির্মম ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কূটনৈতিক সমাধানের পথ এখনো খোলা আছে এবং বলপ্রয়োগ কখনোই টেকসই শান্তি আনতে পারে না। অন্যদিকে, ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার-এর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন ওয়াং ই। সেখানে তিনি বলেন, “যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করছে, তখন এমন হামলা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলছে।”

পাল্টা হামলার মুখে যাত্রী ছাড়াই বিদেশে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল

ইরানের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলার পর ইসরায়েলে পাল্টা হামলার মুখে নিজেদের বিমানগুলো অন্য দেশে সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েলি বিমান সংস্থাগুলো। তেল আবিবের এল আল, ইসরাইর, এবং আরকিয়া বিমান সংস্থার উধ্বৃতি দিয়ে রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিমানগুলো যাত্রী ছাড়াই উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান বিমানবন্দরটিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিমান সংস্থা 'ইসরাইর' জানিয়েছে, তারা বিমানবন্দর থেকে তাদের বিমানগুলো সরিয়ে নিচ্ছে। এটি গত কয়েকদিন ধরে তৈরি হওয়া একটি 'আকস্মিক পরিকল্পনার' অংশ। বিমান সংস্থা 'এল আল' একই কথা জানিয়ে জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল থেকে বিমানগুলো কোথায় সরিয়ে নিচ্ছে, তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং তথ্য দেখায়, গত শুক্রবার থেকে বেশ কয়েকটি বিমান তেল আবিব ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট সাইপ্রাসে গেছে এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপের বিমানবন্দরে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে বিমানগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে ইসরায়েলের হামলা

ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসফাহানের নিরাপত্তা বিষয়ক ডেপুটি গভর্নর আকবর সালেহি হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে, ওই হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে বলেও জানিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর মি. সালেহি। এর আগে, শনিবার রাতে ইরানি গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছিল যে, তেহরানের নোবোনিয়াদ এলাকাতেও দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। একই দিন ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের কমপক্ষে ১০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এদিকে, ইরানের সামরিক স্থাপনার আশপাশের এলাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য সাধারণ ইরানিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। ‘যেসব ব্যক্তি... (ইরানের) সামরিক অস্ত্র উৎপাদন কারখানা বা এতে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান বা সেগুলোর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন, তাদের অবিলম্বে ওই এলাকাগুলো ছেড়ে যাওয়া উচিত,’ পোস্টে উল্লেখ করেছে আইডিএফ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওইসব এলাকায় তাদেরকে ফিরে না আসারও আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।