
মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য ওয়াক্সাকায় যাত্রীবাহী একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে। এতে অন্তত ১৩ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাজ্যের নিজান্দা শহরের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও কমপক্ষে ৯৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। মেক্সিকোর নৌবাহিনী এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানায়, দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটিতে ৯ জন ক্রু সদস্যসহ মোট ২৫০ জন যাত্রী ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে কাছাকাছি বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহত ৯৮ জনের মধ্যে বর্তমানে ৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, আর অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় মেক্সিকোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৬ জনের মধ্যে অন্তত ৫ জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, ফলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রেলওয়ে বিভাগ ও রেলওয়ে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
দুর্ঘটনায় পতিত ট্রেনটি মেক্সিকোর গুরুত্বপূর্ণ ‘আন্তঃমহাসাগরীয় রেল’ প্রকল্পের অংশ ছিল। প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরসংলগ্ন মেক্সিকোর দুই উপকূলীয় শহর ও বন্দরগুলোর মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ১৯৯৯ সালে এ বিশেষ রেলসেবা চালু করে দেশটির সরকার।

এই রেলসেবার রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব মেক্সিকোর নৌবাহিনীর ওপর ন্যস্ত। প্রায় ২৫ বছর ধরে পরিচালিত এই পরিষেবায় এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। প্রাথমিক তদন্তে রেললাইনের যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি চালকের কোনো গাফিলতি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।