
তাইওয়ানের চারপাশে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে লাইভ-ফায়ার সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। ‘জাস্ট মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে বিমান, নৌ ও রকেট বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনা সামরিক কর্তৃপক্ষ।
চীনের সেনাবাহিনী জানায়, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া এই মহড়ার উদ্দেশ্য ‘যুদ্ধপ্রস্তুতির সক্ষমতা যাচাই’ করা এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি’ ও ‘বহিরাগত হস্তক্ষেপকারীদের’ বিরুদ্ধে ‘কঠোর সতর্কবার্তা’ দেওয়া।
এই মহড়া শুরু হলো এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে ১১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচি সম্প্রতি এক বক্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, চীন যদি স্বশাসিত তাইওয়ানে হামলা চালায়, তবে তাতে জাপানের সেনাবাহিনী জড়িয়ে পড়তে পারে।
বেইজিং দীর্ঘদিন ধরেই তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে এবং প্রয়োজনে ‘বলপ্রয়োগের’ মাধ্যমে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
এদিকে, নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “চীনের পুনর্মিলনকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “চীনকে দমন করতে এবং অস্ত্র দেওয়ার জন্য তাইওয়ানকে ব্যবহার করার চেষ্টা করা বহিরাগত শক্তিগুলো কেবল তাইওয়ানকে আসন্ন যুদ্ধের একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ঠেলে দেবে।”
চীনা সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড আগেই জানিয়েছিল, তাইওয়ান প্রণালীর উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তাদের বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে স্থল ও সমুদ্রভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি গুলিবর্ষণ এবং সিমুলেটেড হামলার অনুশীলন চলছে।
ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র শি ইয়ি চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে লিখেছেন, এই মহড়া তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপকারীদের জন্য একটি ‘গুরুতর সতর্ক সংকেত’।
আল জাজিরার বেইজিং প্রতিনিধি ক্যাটরিনা ইউ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোকে চীন ‘উস্কানিমূলক’ হিসেবে দেখছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, চীনা কর্মকর্তারা বারবার স্পষ্ট করে বলেছেন—তাইওয়ান পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপ চীনের ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করার শামিল হবে।