
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্তে আটক হওয়া অনুপ্রবেশকারীদের বড় অংশই বাংলাদেশ সীমান্তকেন্দ্রিক বলে উঠে এসেছে সরকারি পরিসংখ্যানে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্তে প্রায় ২৪ হাজার অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী, যার মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তেই ধরা পড়েছে ২১ হাজারের বেশি মানুষ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার পার্লামেন্টকে জানিয়েছে যে ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারত-চীন সীমান্তে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা নথিভুক্ত হয়নি। তবে একই সময়ে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান সীমান্তে মোট ২৩ হাজার ৯২৬ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে।
লোকসভায় উপস্থাপিত সরকারি তথ্যে দেখা যায়, এই অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যা ধরা পড়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। এর পর পর্যায়ক্রমে রয়েছে মিয়ানমার, পাকিস্তান এবং নেপাল-ভুটান সীমান্ত। ২০১৪ সাল থেকে বছরভিত্তিক সংগৃহীত এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে নিয়মিত অনুপ্রবেশের চেষ্টা হলেও উত্তর সীমান্তে অর্থাৎ চীনের সঙ্গে সীমান্তে এ ধরনের কোনো ঘটনার তথ্য নেই।
তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য জগদীশ চন্দ্র বার্মা বাসুনিয়া ও শর্মিলা সরকারের করা প্রশ্নের লিখিত উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, মিয়ানমার, পাকিস্তান এবং নেপাল-ভুটান সীমান্তে মোট ২০ হাজার ৮০৬ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই সীমান্তগুলোতে আরও ৩ হাজার ১২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৮৫১ জন অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়েছে। একই সময়ে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে আটক হয়েছে ১ হাজার ১৬৫ জন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ৫৫৬ জন এবং ভারত-নেপাল-ভুটান সীমান্তে ২৩৪ জন।
২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মাসভিত্তিক তথ্যেও অনুপ্রবেশকারীদের আটক অব্যাহত থাকার চিত্র স্পষ্ট। এ সময়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২ হাজার ৫৫৬ জন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ৪৩৭ জন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ৪৯ জন এবং ভারত-নেপাল-ভুটান সীমান্তে ৭৮ জন অনুপ্রবেশকারী আটক হয়েছে।
একই সঙ্গে সরকারি তথ্য নিশ্চিত করেছে যে ২০২৫ সালেও ভারত-চীন সীমান্তে কোনো অনুপ্রবেশকারী আটক হয়নি, যা অন্যান্য সীমান্তের তুলনায় উত্তর সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আলাদাভাবে তুলে ধরে।