
ইউরোপে আটকে থাকা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিপুল অঙ্কের সম্পদ স্থায়ীভাবে জব্দ করার পথে হাঁটতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে এ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের অনাগ্রহ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছে ইইউ। এই প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনকে আর্থিক সহায়তা জোরদার করতে ২০২২ সালে জব্দ করা রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে। এসব সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো।
ইইউ ২০২৬ ও ২০২৭ সালে ইউক্রেনের সামরিক ব্যয় এবং বেসামরিক বাজেটের চাহিদা পূরণে সর্বোচ্চ ১৬৫ বিলিয়ন ইউরো ঋণ দেওয়ার চাপে পড়েছে। এই অর্থের জোগান নিশ্চিত করতেই রাশিয়ান নগদ সম্পদ কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে তারা। তবে বেলজিয়ামের আপত্তির কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ইউরোপীয় পক্ষের ভাবনায় রয়েছে, যুদ্ধ শেষে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে দেওয়া ঋণের অর্থ ফেরত নেওয়া অথবা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনে সেই অর্থ ব্যবহারের পরিকল্পনাও আলোচনায় আছে।
এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে মঙ্গলবার বার্লিনে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে ইইউ'র কাছে একটি সিদ্ধান্ত আছে, যার আওতায় রাশিয়ার সম্পদ স্থায়ীভাবে জব্দ করার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে ইউক্রেনের পুনরুদ্ধারের জন্য এই (জব্দ করা) তহবিলের সম্ভাব্য ব্যবহার, ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার কথা তো বাদই... বিষয়টি এখনো অনেক আলোকবর্ষ দূরে।”
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরে টাস্ক আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই রাশিয়ান সম্পদগুলো যেভাবে আছে থাকতে দাও। কারণ পুতিনের সঙ্গে বসে বলা কঠিন যে, ‘আসুন একটা আপস করি, কিন্তু আমরা তোমার টাকা নিচ্ছি।’ আমেরিকার যুক্তি হলো, এখানে খুব সাবধান থাকা এবং জিনিসগুলোকে (মীমাংসা) ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে না দেওয়া।”
ডোনাল্ড টাস্কের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই অর্থ ভিন্নভাবে ব্যবহারের পক্ষে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, তারা নিজেরাই কিছু ব্যবহার করবে, তবে সম্ভবত রাশিয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে। কখনো কখনো দেখা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই বিষয়ে একটি ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে...”